যখনই দুর্গাপুরের নাম কোন ক্ষেত্রে উঠে আসে, তখনই তার সমার্থক শব্দ হিসেবে উঠে আসে ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ের নাম। একদা জঙ্গলে ঘেরা দুর্গাপুর, শিল্পাঞ্চলে রূপান্তরিত হয়েছে ডক্টর রায়ের পরিকল্পনার ওপর ভর করে। তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার বিধান চন্দ্র রায় দুর্গাপুরে পা রেখে পরিকল্পনা করেন দূর্গাপুর প্রজেক্ট লিমিটেডের। জঙ্গলে ঘেরা একটি জায়গাকে তিনি দূর্গাপুর প্রজেক্ট লিমিটেড গড়ে তোলার জন্য বেছে নেন। ডিপিএল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে দুর্গাপুর রূপ বদল হতে শুরু করে। কাজের সন্ধানে আসা মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে দুর্গাপুরে। তৈরি হতে থাকে বাজারঘাট, রাস্তা। আরও অন্যান্য কারখানা তৈরি হতে শুরু করে দুর্গাপুর। আস্তে আস্তে শিল্পাঞ্চলে পরিণত হয় ইস্পাত নগরী দুর্গাপুর।
advertisement
দুর্গাপুর ব্যারেজ, দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা তৈরির ক্ষেত্রেও ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ের অবদান অনস্বীকার্য। পন্ডিত জহরলাল নেহেরুর প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই দামোদর নদের ওপর গড়ে ওঠে দুর্গাপুর ব্যারেজ। দামোদর নদীর জল, দূর্গাপুর প্রজেক্ট লিমিটেড থেকে বিদ্যুৎ এর সুযোগ থাকার ফলে, কেন্দ্রীয় সরকার তৈরি করে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা। কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে তখন হাতে হাত মিলিয়ে সাহায্য করেছিলেন বাংলার তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী ডঃ বিধান চন্দ্র রায়।
দুর্গাপুরে একটি মেডিকেল কলেজও তৈরি করতে চেয়ে ছিলেন ডঃ বিধান চন্দ্র রায়। তবে সেই পরিকল্পনা এখনও সফল হয়নি। যদিও বাম জমানায়, মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু, ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ের পরিকল্পনামাফিক একটি মিনি মেডিকেল কলেজ তৈরি করার পক্ষে উদ্যোগী হয়েছিলেন। তবে সেটাও থেকে গিয়েছে শিলান্যাস পর্যন্ত।
দুর্গাপুর তৈরি করার ক্ষেত্রে ডঃ বিধান চন্দ্র রায় যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তার অনেকটাই পূরণ হয়েছে। আবার কিছু কিছু স্বপ্নের ফসল, নষ্ট হতে বসেছে। তবে এখনও ডক্টর রায়ের স্বপ্নের শহর চলছে তার নিজের গতিতে।