বিষ্ণুপুর থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে এক ঘন্টার রাস্তা, বাঁকুড়ার এই জনপদ বেলিয়াতোড়। এখানেই রয়েছে পালদের বিষ্ণু মন্দির, যে মন্দির একেবারে বিষ্ণুপুরের পাঁচ চুড়া টেরাকোটার মন্দিরের মতই অবিকল দেখতে। এই মন্দিরটি রয়েছে বেলিয়াতোড় এর শ্রী শ্রী বাবা ধর্মরাজের মন্দিরের নিকটে। যদি বিষ্ণুপুর বা সোনামুখী দিক থেকে বেলিয়াতোড় আসেন তাহলে ধর্মতলা, রথ তলা হয়ে আসতে হবে অথবা শ্যামবাজারের ব্রাহ্মণ পাড়া হয়ে আসতে হবে। যদি দুর্গাপুর দিক থেকে আসেন তাহলে আসতে হবে কৈলাস তোলা, পুরাতন হাটতলার রাস্তা ধরে।
advertisement
তিলক কুমার দত্ত নামের এক স্থানীয় ইতিহাস নিয়ে চর্চায় রয়েছেন এবং তিনি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক। তার দাবি, মল্ল রাজার আমলে হয়ত কোনও দিক থেকে মল্ল রাজাদের সঙ্গে বেলিয়াতোড়ের পালদের যোগাযোগ ছিল এবং সেই থেকেই হয়ত মল্ল রাজারাই এখানে এই মন্দিরটি নির্মাণ বা স্থাপন করেছিলেন। তবে এই মন্দির বহু পুরানো। এটি টেরাকোটার মন্দির, এখনও মন্দিরের গায়ে বিভিন্ন রকমের টেরাকোটার কারুকার্য রয়েছে! বেলিয়াতোড়ে টেরাকোটার এই মন্দির থাকলেও মন্দিরের চারটি চূড়ো ভেঙে পড়ে গেছে। মন্দির সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও মন্দিরের গা থেকে প্লাস্টারের চাং ছেড়ে ছেড়ে পড়ছে।
আরও পড়ুন: অষ্টমী হোক বা নবমী, পুজোর ‘মধ্যমণি’ হবেন আপনিই, কালেকশনে রাখুন বিষ্ণুপুরের বিখ্যাত ‘এই’ শাড়ি
মন্দিরের গায়ে ইট বেরিয়ে এসেছে। আগাছায় পরিপূর্ণ হয়েছে মন্দিরের শরীর। সব থেকে বড় কথা, মন্দির ভেদ করেই বেরিয়েছে গাছ। পুরো মন্দির জুড়ে ধরেছে ফাটল। এখন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে এই মন্দিরটি। যদি এই মন্দিরটি রক্ষণাবেক্ষণ করে রাখা হয় তাহলে আগামী প্রজন্ম বিষ্ণুপুরের টেরাকোটা মন্দিরের সাধ নিতে পারবে এখানে, এমনটাই জানাচ্ছে শিক্ষক ও স্থানীয়রা।