জানা যায়, শ্রীপাটের কেন্দ্রে রয়েছেন শ্রীগদাধর পণ্ডিত গোস্বামী। তিনি ছিলেন চৈতন্যদেবের অন্যতম প্রিয় সুহৃদ ও আধ্যাত্মিক সহচর। ভরতপুর শ্রীপাটে রয়েছে শ্রীগদাধর পণ্ডিতের ভ্রাতুষ্পুত্র নয়নানন্দ গোস্বামীর সেবিত একটি কষ্টিপাথরের শ্রীরাধাগোপীনাথ মূর্তি এখানে রয়েছে। শ্রীগদাধর পণ্ডিত লিখিত শ্রীমদ্ভগবতগীতার পু্ঁথি। প্রচলিত বিশ্বাস, যেখানে আছে শ্রী চৈতন্যদেবের হস্তাক্ষরে গীতার শ্লোক। এটি তালপাতার উপরে লেখা আছে বলে কথিত।
advertisement
এখানে সংরক্ষিত গীতায় ৭৪৫ টি শ্লোক রয়েছে, যার মধ্যে একটি পাতায় স্বয়ং চৈতন্যদেবের হস্তাক্ষর রয়েছে। এই গীতার আরও একটি বৈশিষ্ট্য আছে। বর্তমানে সমগ্র ভারতবর্ষে গীতার ৭০০টি শ্লোক পাওয়া যায়। কিন্তু ভরতপুরে তালপত্রে লিখিত গীতায় শ্লোকের সংখ্যা ৭৪৫টি। এ ছাড়া অষ্টধাতুর একটি বেণুগোপাল মূর্তি রয়েছে এই মন্দিরে। চলে নিত্যসেবা ও পুজোপাঠ।
মন্দিরের সেবায়েতরা জানান, ‘‘গীতায় যে শ্লোক আছে সেই শ্লোক চৈতন্যদেবের হাতে লিখিত রূপে আছে আজও তাম্রপত্রে। গদাধর পণ্ডিত রাধা গোপীনাথ ও বেণুধারী গৌরাঙ্গ এই রূপের বিগ্রহ আছে মন্দিরে। এছাড়াও সাতটি শালগ্রাম শিলার নারায়ণ সেবা চলে। এছাড়াও গোপালের মুর্তি রয়েছে।
ইতিহাস বিশেষজ্ঞ সুমন মিত্র জানান, ‘‘ গদাধর পণ্ডিত ছিলেন, চৈতন্য মহাপ্রভুর একজন ঘনিষ্ঠ সঙ্গী। তাঁরা শৈশবকাল তথা সন্ন্যাসী জীবনের এক দীর্ঘ সময় একসঙ্গে কাটিয়েছেন। পরবর্তীকালে চৈতন্যদেবের অনুরোধে তিনি পুন্ডরীক বিদ্যানিধির কাছে দীক্ষা গ্রহণ করেন। গৌড়ীয় ধর্মমতে তিনি পঞ্চতত্ত্বের একজন অন্যতম সদস্য। তাকে রাধারানি, ললিতা বা এঁদের মিলিত অবতার হিসাবে মনে করা হয়। মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুরে শ্রীপাটের কেন্দ্রে রয়েছেন শ্রীগদাধর পণ্ডিত গোস্বামী।’’
মুর্শিদাবাদ জেলার প্রাচীন মন্দিরের অন্যতম এই মন্দিরে আসতে পারেন অনায়াসে। ঘুরে যেতে পারেন একদিন মন্দির। দুপুরে অন্নভোগ খাওয়া যাবে এই মন্দিরে।