চায়ের কাপের ভেতরে গলিত মোম, তার ওপরে ভাসছে ক্ষুদ্র এক সলতে। পাশে সাজানো বিস্কুটের টুকরো। দেখতে এমন বাস্তব যে প্রথম দেখায় চা আর মোমবাতির ফারাক বুঝে ওঠা মুশকিল। শুধু চায়ের কাপ নয়, কাচের গ্লাসে, ফুলের পাপড়ির ডিজাইনে, কিংবা নানান রঙের জেল ক্যান্ডেলের আকারেও মোমবাতি বানাচ্ছেন অভিষেক। প্রতিটি মোমবাতিতেই রয়েছে এক অন্যরকম গল্প। কোনওটা যেন বাগানে ফুটে থাকা ফুলের মতো, কোনওটা আবার ঠিক গরম চায়ের সুবাসে ভরা বিকেলের মতো। ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছে এলাচ, লবঙ্গ বা গোলাপের ঘ্রাণ। ঘর শুধু আলোয় নয়, সুগন্ধি গন্ধেও ভরে ওঠবে।
advertisement
“আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন”
দীপাবলিকে সামনে রেখে অভিষেকের কর্মশালায় এখন ব্যস্ততা তুঙ্গে। টেবিলে সারি সারি তৈরি হচ্ছে রঙিন ক্যান্ডেল, কোথাও গোলাপি জেল, কোথাও লেবু রঙের গ্লাসে ভাসছে ছোট্ট ফুলের পাপড়ি। কাঁথির হাটে এইসব মোমবাতি এখন দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
অভিষেক জানান, “আমি ছোটবেলা থেকেই চিত্রকলার ছাত্র। প্রথমে ক্যানভাসে রঙ নিয়ে কাজ করতাম। কিন্তু এখন চিত্রকলার পাশাপাশি মোম দিয়ে নানা ধরনের কারুকাজ করি। এবার দীপাবলিতে কিছু নতুন কিছু করার ইচ্ছে থেকেই এই চায়ের কাপ আকৃতির মোমবাতির ভাবনা।”
দামও সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে। মাত্র পাঁচ টাকা থেকে শুরু করে বড় সাইজের মোমবাতির দাম ২০০ পর্যন্ত। দীপাবলি ছাড়াও এই মোমবাতিগুলো জন্মদিন, বিয়ে বা গৃহসজ্জার উপহার হিসেবেও জনপ্রিয় হচ্ছে। স্থানীয় ক্রেতারাও বেশ উৎসাহী। দীপাবলিকে সামনে রেখে দোকানগুলিতে এই অভিনব মোমবাতির চাহিদাও তুঙ্গে। কাঁথির বিভিন্ন বাজারে প্রতিদিনই নতুন নতুন ডিজাইনের মোমবাতি দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। অনেকেই বলছেন, ‘‘এত সুন্দর মোমবাতি আগে কখনও দেখিনি। ঘর সাজাতে এর জুড়ি নেই।’’ স্থানীয় ক্রেতাদের পাশাপাশি ভিন রাজ্যের বাসিন্দারও লুফে অভিষেকের হাতের তৈরি নানা আকৃতির মোমবাতি। বিভিন্ন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম থেকে আসছে অনবরত অর্ডার।
আরও পড়ুনKali Puja 2025: বামাক্ষ্যাপা পুজো করেছিলেন এই মন্দিরে, এড়োয়ালী মটকালী আজও প্রাচীন!
তার এই ভাবনা আজ অনেক তরুণকে অনুপ্রেরণা দিচ্ছে। অভিষেক প্রমাণ করেছেন, শিল্প মানেই ক্যানভাস নয়, জীবনের প্রতিটি উপকরণেই লুকিয়ে আছে সৃজনশীলতার সম্ভাবনা।
মদন মাইতি