বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের কাছে গেলেই আপনি দেখতে পাবেন, ভ্যান নিয়ে এক ব্যক্তি লাল গুলঞ্চ বিক্রির প্রচার সাউন্ড রেকর্ড করে এই পাহাড়ি লাল গুলঞ্চ লতা বিক্রি করছেন। তবে হয়তো এ বার আপনাদের মনে একটা প্রশ্ন আসছে, কী এই লাল গুলঞ্চ? কেনই বা অনেকে এত ভিড় করছেন লাল গুলঞ্চ কিনতে ? কী রয়েছে তার মধ্যে? চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
advertisement
আরও পড়ুনঃ শুক্রবার কেমন থাকবে আবহাওয়া? কবে কমবে বৃষ্টি? রইল সর্বশেষ পূর্বাভাস
শেখ সালঙ্গির নামে এক ব্যক্তি এই লাল গুলঞ্চ লতা বিক্রি করছেন। তার কথায়, এই লাল গুলঞ্চ লতা এক টুকরো কেটে, কার দিয়ে কোমরে অথবা হাতে বাঁধলে শরীরের বিভিন্ন রোগ নিরাময় হয়। যাদের অ্যালার্জি, চুলকানি রয়েছে, তারা এই লতা ব্যবহারে মাত্র ২১ মিনিটের মধ্যে উপকার পাবেন। গ্যাস, অম্বল হলে গলা-বুক জ্বালা করলে এই লতা ব্যবহারে ৩০ মিনিটে উপকার পাওয়া যায়। আবার যে কোনও ব্যাথা, শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি থেকেও বাঁচা যাবে এই লতা ব্যবহার করলে।
গুলঞ্চ লতা বিক্রেতা শেখ সালঙ্গির জানিয়েছে, বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে এই ভেষজের। তবে আমরা অত জানি না। তবে যারা বাঁধছে, তারা বলছেন উপকার হচ্ছে। আমি এখানে ৫-৭ বছর ব্যবসা করছি। যে কোনও দোকানদারের কাছে আপনি যাচাই করতে পারেন । দীর্ঘদিন আমি এই এক জায়গায় বিক্রি করছি। যারা বাঁধছেন তারাই বলছেন যে উপকার হচ্ছে। উপকার হচ্ছে এবং অনেক মানুষ উপকার পেয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ঘণ্টাখানেকের দূরত্বে নৈসর্গিক সৌন্দর্য, দুর্গাপুজোর ছুটিতে ঘুরে আসুন হাওড়ার এই জায়গায়
লাল গুলঞ্চ লতার ব্যবহার প্রসঙ্গে চিকিৎসক গৌতম ভট্টাচার্যের জানান, লাল গুলঞ্চ একটি হার্বস। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে তার একটা নাম রয়েছে। লাল গুলঞ্চর মধ্যে বিপুল পরিমাণে মাইক্রো নিউট্রিয়েন্স আছে এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। আমাদের শরীরের মধ্যে ফ্রি রেডিকেল অনেক অংশে কমিয়ে দেয়। ফলে আমাদের শরীরের অনেক রোগ উপসম হওয়ার সম্ভাবনা। লাল গুলঞ্চ এমনই একটা হার্বস, যার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন আছে, তাতে হিমোগ্লোবিন বাড়ে। এতে প্রচুর পরিমাণে ক্রোমিয়াম আছে, ফলে যারা ডায়াবেটিস পেশেন্ট তাদের ডায়াবেটিস কমতে পারে। হাই কোলেস্টরল রোগীদের কোলেস্টেরল কমায়।
লাল গুলঞ্চ লতা হাতে এবং কোমরে বাঁধা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হাতে বাঁধার সঙ্গে তার উপকারের কোনও সম্পর্ক নেই। শরীর সঙ্গে টাচে থাকলে খুব হেরফের হবে না, খেলে কিছুটা কাজে দেবে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, রিসেন্ট রিসার্চে দেখা গিয়েছে, করোনার সময় অনেকে ইমিউনিটি বাড়ানোর জন্য দিনে দু’বার করেও লাল গুলঞ্চের রস করে খেয়েছেন। দেখা গিয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকেরই জন্ডিস হয়েছে, ফ্যাটি লিভারও ধরা পড়েছে। তাই লাল গুলঞ্চ যদি আমরা না জেনে খাই তার অনেক সাইড এফেক্ট রয়েছে। চিকিৎসকের কথায়, লাল গুলঞ্চ ব্যবহারের আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া অবশ্য প্রয়োজন।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী