স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বছরভর এই মন্দিরে পুণ্যার্থীদের যাতায়াত লেগেই থাকে। কারণ এখানে মহাদেব অত্যন্ত জাগ্রত, পাশাপাশি মন্দিরে সুন্দর পরিবেশ মুগ্ধ করে সকলকেই। মন্দিরের এক সেবায়েতের কাছে জানা যায়, বহুকাল আগে বহু মুনি-ঋষির সাধনক্ষেত্র ছিল এই কলেশ্বর ধাম। এমনকী আরও জানা যায়, পর্বত নামে এক ঋষি এখানে দেবী পার্বতীর তপস্যা করেছিলেন। আর সেই সিদ্ধপুরুষের নাম অনুযায়ী এই জায়গার নাম ছিল একসময় পার্বতীপুর। অন্যদিকে, চন্দ্রচূড় নামে এক গ্রন্থ থেকে জানা যায় কলেশ্বরকে মৎস্য দেশের মায়াতীর্থ বলা হয়েছে। পরবর্তীতে এই মন্দিরেই দেবীর সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেন ধানঘড়া গ্রামের কলেশ ঘোষ।
advertisement
আরও পড়ুনঃ আঙুল-নখে ফুটে ওঠে মারণ ফুসফুস ক্যানসারের লক্ষণ! সাধারণ হলেও কোন পরিবর্তন বিপদের ইঙ্গিত? জানুন
তারপর থেকে পার্বতীপুর এর নাম পরিবর্তন করে হয় কলেশ্বর। বর্তমানে এই মন্দিরে নিত্যপুজো তো হয়ই। পাশাপাশি, বিভিন্ন তিথিতে বিশেষরিতিতে পুর্জার্চনা হোমযজ্ঞ সহ নানাবিধ অনুষ্ঠানের বন্দোবস্ত করা হয়। মন্দিরের সেবায়েত জানান যে এই এলাকা ছিল একসময় বেল বনে ঘেরা। তবে সপ্তদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে স্থানীয় নরপতি রামজীবন রায় মন্দিরটি সংস্কার করেন। তারপর মন্দির নির্মাণে এগিয়ে আসেন মুর্শিদাবাদ জেলার রাজা ধীরেন্দ্রনারায়ণ রায়। মন্দির নির্মাণে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হয়। অবশেষে ১৩৪৭ বঙ্গাব্দের ২৮ মাঘ এই মন্দির পুণরায় নির্মিত হয়। যে মন্দিরের উচ্চতা প্রায় ১১০ ফুট।
আরও পড়ুনঃ বাড়ির পুজোয় ব্রাত্য পুরুষরা, ৩০০ বছরের ঘোষ বাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজোর ইতিহাস আপনাকে শিহরিত করবে
মন্দিরটি জেলার সবচেয়ে বড় শিব মন্দির বলে দাবি করেন স্থানীয়রা। এই মন্দিরের মূল গর্ভগৃহে রয়েছে শিবলিঙ্গ ও কংক্রিটের তৈরি বজরংবলীর মূর্তি। তবে এই শিব মন্দির চত্বরেই রয়েছে বিভিন্ন দেব-দেবীর মন্দির। যার মধ্যে রয়েছে কোষ্ঠী পাথরের ষষ্ঠী মূর্তি, রয়েছে শ্যামা মায়ের মন্দির। মন্দির লাগোয়া রয়েছে দেবকুন্ডু, যেখানে শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে ও শিবরাত্রির দিন ভক্তরা সেই কুণ্ডের জলে স্নান করে মহাদেবকে জল ঢেলে মনষ্কামনা পূরণ করেন। এছাড়াও এই মন্দিরে রয়েছে বৈষ্ণবভৈরব ও রুরুভৈরব বা মহাকাল ভৈরব নামেও পরিচিত যা স্বয়ং বিশ্বকর্মা দ্বারা নির্মিত মন্দিরে বিরাজমান বলেও দাবি করেন ওই মন্দিরের পুরোহিতরা। তাই এবার যদি আপনি বীরভূম ভ্রমণের জন্য আসেন তাহলে অবশ্যই ঘুরে আসুন এই মন্দির থেকে।





