ইতিহাস ঐতিহ্য এবং বিপ্লবের জেলা মেদিনীপুর। ইতিহাস থেকে ভূগোল, এই জেলা যেন সবার আগে। কলকাতা থেকে জেলার দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার এরও কম। সবুজে ঘেরা জঙ্গলমহলের এই জায়গার ঘুরে দেখার জন্য পারফেক্ট। একদিনের ছুটি নিয়ে পরিবার কিংবা প্রিয়জনকে নিয়ে ঘুরে দেখতে পারেন জেলার বেশ কয়েকটি জায়গা। বাংলার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন হিসেবে বিখ্যাত গড়বেতার গনগনি। প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট এই ভূমিরূপ যেন এক সভ্যতার অনুরূপ প্রতিচ্ছবি। কোথাও দালানের মতো দাঁড়িয়ে রয়েছে, আবার কোথাও জলপ্রবাহের কারণে বিভিন্নভাবে তৈরি হয়েছে একাধিক ভূমিরূপ, যা শুধু এই জেলার মান বাঁচিয়েছে তা নয়, একদিকে ভূগোলবিদদের কাছে গবেষণার বিষয়বস্তু অন্যদিকে ভ্রমণ প্রিয় বাঙালিদের কাছে প্রিয় ডেস্টিনেশন।
advertisement
আরও পড়ুনঃ তীর্থে গিয়েছিল পরিবারের সকলে, বাড়ি ফিরতেই চক্ষু চড়কগাছ! আতঙ্কে কাঁপছে গোটা হিঙ্গলগঞ্জ
স্বাভাবিকভাবে ছোট থেকে বড় সকলেরই ঘুরে দেখার জন্য এই জায়গায় অত্যন্ত সুমধুর। মেদিনীপুর শহর থেকে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে এই জায়গা। প্রাইভেট গাড়ি, বাস বাস কিংবা ট্রেন যোগাযোগে পৌঁছনো যাবে এই জায়গায়। রাত্রিবাস করতে চাইলে সরকারিভাবে তৈরি করা কটেজে থাকতে পারবেন। বুকিং করতে হবে আগে থেকে। গুগল লোকেশন: https://maps.app.goo.gl/UUb79GGSBRCnnAtS8
একইভাবে মেদিনীপুর শহরের উপকণ্ঠে রয়েছে মন্দিরময় এক গ্রাম। শহর থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে, একাধিক মন্দির সম্বলিত এই গ্রাম পাথরা। যেখানে বেশ কয়েক দশক পুরানো একাধিক দেবদেবীর মন্দির রয়েছে। বর্তমানে বেশ কিছু মন্দির ব্যবহার্য না হলেও মন্দিরের গঠন প্রণালী এবং একসঙ্গে এত সংখ্যক মন্দির যা নজর কেড়েছে সকলের। শুধু তাই নয় মন্দিরের টেরাকোটা ডিজাইন এবং মন্দিরের গঠনশৈলী আকর্ষণ করে পর্যটকদের। মেদিনীপুর শহর থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে এই জায়গা। রাত্রিবাস করতে চাইলে মেদিনীপুর শহরের যে কোনও বেসরকারি হোটেল বা লজে রাত্রি যাপন করতে পারবেন। গুগল লোকেশন: https://maps.app.goo.gl/dLtHLF3AK1zCqUx8A
আরও পড়ুনঃ সাবধান…! দিঘা, তাজপুর, মান্দারমণি থেকে উদ্ধার হচ্ছে একের পর এক বিষধর সাপ, আতঙ্কে কাঁটা পর্যটকরা
একইভাবে এই পাথরার কাছেই রয়েছে অপূর্ব এক স্থাপত্য। একটানা মন্দির, প্রাচীন জমিদারবাড়ির ধ্বংসাবশেষ। কালের নিয়মে এই বাড়িতে থাকে না জমিদার পরিবারের কোনও সদস্য। সরকারিভাবে অধিকৃত এই মন্দিরগুলোর টেরাকোটা ডিজাইন, তার গঠনশৈলী অবাক করবে সকলকে। মন্দিরের সামনে দ্বারপাল, সহ সবুজে ঘেরা এই চত্বর আপনার মন ভাল করে দেবে।
খড়গপুর শহর থেকে সামান্য কয়েক কিলোমিটার দূরেই বর্ষার জলে পরিপুষ্ট এক ঝর্না যেন এই সময়ে মোহনীয় রূপ ধারণ করে। একদিকে বেশ কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হয়েছে, স্বাভাবিকভাবে এখনও পরিপুষ্ট এই ঝরনা। বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা জল পাথরের গা বেয়ে ঝরে পড়ছে। আর এই দৃশ্য উপভোগ করতে দূর-দূরান্ত থেকে আসেন অনেকে। খড়গপুর গ্রামীণের ভেটিয়া ওয়াটার ফলস। খড়গপুর শহর থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে এই জায়গা। এখানে আসতে গেলে আপনি প্রাইভেট গাড়ি কিংবা ট্রেন থেকে নেমে অটো বা বাসে করে আসতে পারবেন। থাকতে হলে আপনাকে খড়্গপুরের বেসরকারি লজে থাকতে হবে। গুগল লোকেশন: https://maps.app.goo.gl/8Pk1gnTrqafT1mJUA
একইভাবে খড়গপুর শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে আদিবাসী অধ্যুষিত ব্লক কেশিয়াড়ি। এই ব্লকের গগনেশ্বর গামে রয়েছে প্রাচীন স্থাপত্য, যা বয়ে চলেছে সুদীর্ঘ বেশ কয়েকশ বছরের ইতিহাস। গগনেশ্বর গ্রামে রয়েছে ঐতিহাসিক কুরুমবেড়া দুর্গ। কেউ কেউ মনে করেন এটি সেনা ছাউনি, আবার কারও মতে, এটি আসলে পান্থশালা। যেখানে দূর দূরান্তে যাওয়া বহু মানুষ বিশ্রাম নিতেন। আবার অনেকে মনে করেন এই জায়গা আসলে দেবত্ব স্থান। তবে বর্তমানে ঘুরে দেখার জন্য এই জায়গায় অত্যন্ত দারুণ। ছবি তোলার দারুন জায়গা এবং ইতিহাস ঘেঁটে দেখার জন্য এই জায়গা আপনার কাছে একদম পারফেক্ট। কেশিয়াড়ি এলাকায় বেসরকারি লজ কিংবা খড়্গপুরে থাকতে পাবেন। যাতায়াত মাধ্যম সুলভ। কেশিয়াড়ি পর্যন্ত বাসে এসে সেখান থেকে অটো বা ছোট কোনও গাড়িতে পৌঁছাতে পারবেন। গুগল লোকেশন: https://maps.app.goo.gl/sKwK58TLbdXpPckC7
স্বাভাবিকভাবে এই শীতে যারা কোথাও থেকে ঘুরে আসার পরিকল্পনা করছেন তারা অবশ্যই ঘুরে দেখতে পারেন জেলার এই কয়েকটি জায়গা। এছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি জায়গা রয়েছে যা, একদিনের ছুটিতে ঘুরে দেখতে পারবেন।





