গোটা ঘটনায় অন্যতম সূত্র, মোবাইল ফোনের কল লিস্ট। এই চক্রের সদস্যদের মধ্যে বিগত দিনে কী ধরনের কথাবার্তা হয়েছে, কাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে, তা জানার চেষ্টা করছে তদন্তকারী দল। তার জন্য ধৃতদের সকলের মোবাইলের কললিস্ট উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। গত এক-দু’বছরের গতিবিধিও প্রয়োজনে বের করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। বন দফতরের অনুমান, এই ঘটনায় চোরা শিকারের বড়সড় রহস্য সামনে আসবে।
advertisement
আলোচনার পর তাঁরা স্বরাষ্ট্র দফতরে রিপোর্ট পাঠিয়েছে। বন দফতরের তরফেও একটি তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে। যেখানে উত্তরবঙ্গের ৩ জন ও দক্ষিণবঙ্গের ২ জন আধিকারিক রয়েছে। তারাও নিজেদের মতো তদন্ত করবে। তবে বিষয়টির সঙ্গে আন্তর্জাতিক পাচার চক্রের যোগ থাকায় সিআইডি বা কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা দফতরের তদন্তে ভরসা রাখছে বন দফতর। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় বনগাঁর এক ব্যবসায়ীর নাম উঠে এসেছে। সূত্রের খবর, তিনিই পশু-পাখির হাড়-চামড়া জোগাড় করে আনতেন।উত্তরবঙ্গের অ্যাডিশনাল পিসিসিএফের দায়িত্বে এই দল।
উদ্ধার হওয়া বন্যপ্রাণীদের দেহাংশ কোথা থেকে এল তা জানতে এই দল তদন্ত করছে। বাগুইআটি ও নাগেরবাজারের মাঝামাঝি একটি ফ্ল্যাটে হানা দিতেই চক্ষু চড়কগাছ হয় বন দফতরের। মানুষের মাথার খুলি শহরে মেলায় জোর চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গত রাতে। এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে বন দফতর। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে মানুষের মাথার ৫টি খুলি, হরিণের শিং, চামড়া, বাঘের দাঁত। তন্ত্র সাধানার আড়ালে ওইসব সামগ্রী পাচারের ছক কষা হয়েছিল বলে মনে করছে বন দফতর ও পুলিশ। এই ফ্ল্যাটটি একজন তান্ত্রিকের।
আরও পড়ুন: সিকিমে ভারী তুষারপাত, নাথুলা-ছাঙ্গুতে বেড়াতে গিয়ে বিপাকে বহু! ময়দানে সেনা
দমদম প্রাইভেট রোডের আমবাগান এলাকায় ওই তান্ত্রিকের ফ্ল্যাটে হানা দেয় পুলিশ। ওই তান্ত্রিকের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বন্য জীবজন্তুর ছাল, অস্থি। বেআইনিভাবে সেগুলি রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ। নাগেরবাজার থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়েই বুধবার রাতে তল্লাশি শুরু করে বন দফতর। তখনই উদ্ধার হয় সাদা ও কালো হরিণের ছাল, বাঘের নখ ও দাঁত, মানুষের মাথার খুলি এবং একাধিক পাখির দেহাংশ। যে ঘরটি থেকে ওইসব সামগ্রী মিলেছে সেটিকে দেখে পুলিশের অনুমান, সেখানে তন্ত্রসাধনা হতো। আর তার আড়ালে পাচার করার পরিকল্পনা ছিল। যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মধ্যে একজন জ্যোতিষী।
বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, "আমাকে একজন ফোন করে বলেন, বন্যপ্রাণী সম্পর্কে কিছু জিনিস একটি ফ্ল্যাটে রয়েছে। যা রাখা নিষিদ্ধ। ওই খবরের ভিত্তিতে বন দফতর হানা দেয়।" কোন বাঘ মারা যাওয়ার খবর নেই। তাহলে বাঘের দাঁত এল কোথা থেকে? এছাড়া যে হরিণের চামড়া পাওয়া গেছে তা এখানের নয়৷ তাই এই বিশেষ দল গঠন করল রাজ্য বন দফতর।