এরপর স্কুল শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে রাজস্থানের যোধপুর ইউনিভার্সিটি থেকে ২০১৪ সালে বিএড ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি । ২০১৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় বসেন । এই একবারই তিনি এসএসসি পরীক্ষায় বসার সুযোগ পান । কিন্তু সেইবার ভাগ্য তার সাথ দেয়নি । আশা ছিল পরবর্তীতে ভাগ্য সাথ দেবে । কিন্তু তার অভিযোগ সরকারি নিয়োগ বন্ধ থাকায় সেই সুযোগ আর হয়নি তপনবাবুর । স্কুল শিক্ষকতা ছাড়াও অন্যান্য চাকরির পরীক্ষায় প্রচেষ্টা চালিয়েছেন তিনি । কিন্তু তাতেও সফলতা আসেনি । তপনবাবুর অভিযোগ , একে সরকারী নিয়োগ কম ছিল , অপরদিকে সরকারি নিয়োগে দুর্নীতি তার চাকরী প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল । তাই যে শাকপাতার ব্যবসার উপর ভর করে তিনি শিক্ষা লাভ করেছিলেন শেষমেশ সেই শাকপাতার ব্যবসাকেই তার জীবন জীবিকার প্রধান মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি ।
advertisement
আরও পড়ুনঃ এবার মেয়েরাও হবে ফুটবল রেফারি, আগামীতে ফিফায় খেলার স্বপ্ন
পারিবারিক প্রয়োজনে কয়েক বছর আগে বিয়েও করেছেন তপনবাবু । এখন তার স্ত্রী ছাড়াও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে । তপনবাবুর কথায় , গ্রামের বেশিরভাগ যুবক-যুবতি সরকারি চাকরির আশায় শিক্ষা অর্জন করেন । শিক্ষার ডিগ্রি অর্জন করতে গ্রামের অনেকেই পরিবারের দু'বেলার দু'মুঠো অন্নের যোগানদাতা ফসলি জমি পর্যন্ত বিক্রি করে দেন অথবা বন্ধক রাখেন । ছেলে বা মেয়ে চাকরি পেয়ে সেই সম্পদ আবার ফিরিয়ে আনবে এই আশায় বুক বাঁধেন অনেক বাবা-মা । কিন্তু খুব কমসংখ্যক ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের সেই স্বপ্ন পূরণ হয় ।
আরও পড়ুনঃ মাদক ও প্রতারণার বিরুদ্ধে রেল পুলিশের অভিযান, সচেতন করা হল যাত্রীদের
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিক্ষিত যুবক যুবতিদের সেই সরকারি চাকরির স্বপ্ন অধরাই থেকে যায় । বর্তমান সময়ে এর জন্য সরকারি নিয়োগে সরকারের ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছেন তপনবাবু । তপনবাবু বলেন , ' উচ্চ শিক্ষা লাভ করে একটা সরকারি চাকরি করার অবশ্যই স্বপ্ন ছিল । কিন্তু তা হয়নি । তাই শাকপাতার ব্যবসাই করছি । আর এই ব্যবসা আমার নতুন নয় । স্কুল জীবনে মূলত শিক্ষার খরচ জোগানোর জন্য শাকপাতা বিক্রি করতাম । কিন্তু শিক্ষা লাভ করে ভালো চাকরি না পাওয়ায় এখন এই ব্যবসাটাই আমার জীবন জীবিকার একমাত্র অবলম্বন । আমি সরকারী চাকরি পাইনি জন্য আমার শিক্ষালাভ ব্যর্থ হয়েছে এটা আমি ভাবি না ।'
Geetashree Mukherjee