টিপস-এর এই প্রথা কবে থেকে? জানা গিয়েছে, ফিউডাল ইউরোপে এই প্রথা প্রথম শুরু হয়েছে। এই প্রথা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে বৃহত্তর আমেরিকায়। এরপর দিনের পর দিন প্রথা বিদেশ থেকে বয়ে আসে ভারতে। তবে থেকেই টিপস দেওয়া হয় ওয়েটারদের পরিষেবার বিনামূল্যে। টিপস-এর এই অভ্যাস মূলত ওয়েটারদের আয়ে একটু সাহায্য করবার জন্য।
advertisement
বর্তমান সমাজে এই আয় বা এই টিপসের অভ্যাস ক্রমেই কমছে। কারণ হিসেবে জ্বলজ্বল করছে 'অনলাইন পেমেন্ট' (online payment)। এবার কেউ রেস্তরাঁয় খাওয়া হয়ে গেলে বিল মেটাতে ব্যবহার করে অনলাইন পেমেন্ট প্ল্যাটফর্মগুলি (online payment platform)। সেক্ষেত্রে বিলের (bill) সম্পূর্ণ টাকা ঢোকে হোটেল কর্তৃপক্ষের ব্যাংকে। এদিকে অতিরিক্ত যা একটা আয় হচ্ছিল, সেটাও এখন বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
শিলিগুড়ির এক ক্যাফেতে কাজ করে মনোজ (নাম পরিবর্তিত)। তিনি বলেন, 'এমন না যে টিপস পাই না। কম পাই। তবে আগের মতো নয়। এখন সবাই পকেট থেকে মোবাইল ফোন (Mobile phone) বের করে কিউআর কোড স্ক্যান (QR Code Scan) করেই পেমেন্ট (Payment) করে দেন। তাই আর ওই বইয়ের ভেতরে টাকা গুঁজে রাখার অভ্যাসটা নেই বললেই চলে।'
এই অনলাইন পেমেন্ট (Online payment) এর আবার সুবিধা অনেক। যেমন বর্তমান পরিস্থিতিতে শারীরিক দূরত্ব মেনে বিল মেটানো যায়। কাগজ আদান প্রদানের ক্ষেত্রেও ভাইরাস (virus) ছড়াতে পারে। তাই এখন অনেকেই এই পথ বেছে নিচ্ছেন। মূলত, ঝটপট, ঝামেলা ছাড়া বিল মেটানোর সুযোগ আর কেউ হাতছাড়া করতে চায় না। এর উপরে আবার অনলাইন পেমেন্টের (Online Payment) উপর থাকে বিভিন্ন ছাড়। যেমন ক্যাশব্যাক (Cashback), অফার (Offer), শপিং ডিসকাউন্ট (Shopping Discount) ইত্যাদি।
জলপাইগুড়ির এক নামকরা হোটেলমালিক বলেন, 'টিপস জিনিসটার কোনও আইনি বৈধতা বা ব্যাখা নেই। তবে ওয়েটারদের অতিরিক্ত আয় এবং তাঁদের মুখের হাসির খাতিরে অনেকেই মানবিকতার দায়রায় এসে টিপস দেন। আমরা বা হোটেল কর্তৃপক্ষ এতে নাক গলাই না। তবে, এখন হয় কার্ড সোয়াইপ (Card Swipe), না হয় অনলাইন পেমেন্ট (online payment)। কেউ আর আলাদা করে এই টিপস দেন না। দিলেও তা হাতে গোনা কিছু মানুষ।'
এই টিপস-এর বিষয়ে খাদ্যপ্রেমী জ্যোতি দত্ত বলেন, 'আগে যখন বন্ধু বান্ধব বা পরিবারের সঙ্গে বাইরে খেতে আসতাম, তখন এই টিপস না দিয়ে বের হতাম না। কিন্তু এখন আর পকেটে ক্যাশ (Cash) রাখি না। থাকলেও তা খুবই কম। ওই গাড়ি ভাড়ার জন্য। তা দিয়ে কি আর টিপস দেওয়া যায়?'
জ্যোতির কথায় আবার নারাজ তাঁর বন্ধু সৌম্যদীপ বাগচী। বলেন, 'অনলাইন পেমেন্ট (Online Payment) হোক, বা অফলাইন (offline)। ওয়েটারদাদাদের অতিরিক্ত কিছু টাকা তো দেওয়াই যায়। তাঁরা বারবার আমারের এসে জিজ্ঞেস করে যাঁন, কিছু দরকার কি না। জল লাগবে কি না। সার্ভ (serve) করে দেওয়া হবে কি না। ওঁদের পরিশ্রমের দাম হিসেবে অল্প টিপস দেওয়াই যায়।'
Vaskar Chakraborty