একসময় বিভিন্ন মেলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে চল ছিল মাটির তৈরি প্রদীপ, খেলনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের মাটির জিনিসের। কিন্তু বর্তমানে প্লাস্টিকের উপকরণ তৈরি হওয়ার দরুন চল হারিয়েছে মাটির তৈরি জিনিসের। এই হস্তশিল্প আজ বিলুপ্তির পথে। বাজারে যে সমস্ত মাটির তৈরি জিনিস পাওয়া যায়, তার তুলনায় বেশ রকমারি এবং রঙবেরঙের প্লাস্টিকের জিনিসের দাম অনেক কম। অন্যদিকে, হাতে তৈরি করা মাটির জিনিস বাজারে অনেক দামে বিক্রি হওয়ার দরুন সাধারণ মানুষ ঝোঁক দিয়েছেন প্লাস্টিকের তৈরি জিনিস কেনার দিকে। আর এতেই সমস্যায় পড়েছেন মাটির জিনিস তৈরি করা হস্তশিল্পীরা।
advertisement
আরও পড়ুন- ভরদুপুরে দরজা ভেঙে বাড়ি সাফ! শহরের বুকে কী ভয়ঙ্কর কাণ্ড!
জলপাইগুড়ির বিভিন্ন ব্লক ছাড়াও ময়নাগুড়ি রোড এলাকার পালপাড়াগুলিতে প্রচুর পরিবারের পেশা মাটির জিনিস তৈরি করা। বর্তমানে তাঁরাও কার্যত এই পেশাকে টিকিয়ে রাখতে সমস্যায় পড়ছেন। মাটির জিনিসের আগের মত চাহিদা নেই বাজারে। ফলে এই পেশাকে ধরে রাখতে তাঁরা এবার সরকারি সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন- সন্তান স্নেহে মৃত শাবককে ঘিরে মা সহ হাতির পাল! রেডব্যাংক চা বাগানে বিরল দৃশ্য!
আধুনিকতার যুগে বিভিন্ন মেশিন পত্র বাজারে আসায় খুব সহজে প্লাস্টিকের তৈরি জিনিস কম খরচে তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু মাটি কিনে তা দিয়ে জিনিস তৈরি করা অনেক ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। সেই কারণে প্লাস্টিকের সঙ্গে মাটির জিনিসের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পিছিয়ে পড়েছেন মাটির জিনিস তৈরি করা হস্তশিল্পীরা।
এই বিষয়ে পাল পাড়ার বাসিন্দা সন্ধ্যা রানী পাল বলেন, "আমি প্রায় ৫০ বছর ধরেই এই কাজ করে আসছি। বর্তমান বাজারে আগের তুলনায় অনেকটাই মাটির জিনিসের চাহিদা কমেছে। আবার আমাদের মাটি কিনে সে জিনিস তৈরি করতে অনেক খরচ হয়ে যায়। সেই তুলনায় প্লাস্টিকের জিনিস অনেক কম দামে পাওয়া যায় বলে মানুষ প্লাস্টিকের জিনিসকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।"
এলাকার আর এক বাসিন্দা নয়নমণি পাল বলেন, "আমাদের মূল পেশা মাটির জিনিস তৈরি করা। কিন্তু বর্তমানে এই জিনিসের চাহিদা না থাকায় আমাদের এই শিল্প ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে আমাদের রুজি রোজগার প্রায় বন্ধের পথে। তাই সরকারি সাহায্য বা কোন অনুদান পাওয়া গেলে আমরা এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে পারি।"
Geetasree Mukherjee