২০২৫ সালের মধ্যে যক্ষ্মা মুক্ত ভারত গড়ার লক্ষ্য নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এই লক্ষ্যপূরণের জন্য তারা 'নিক্ষয় মিত্র' নামে একটি প্রকল্প নিয়ে এসেছে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ ন্যাশনাল টিউবারকিউলোসিস এলিমিনেশন প্রোগ্রাম (NTEP)-এর পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, এনজিও, কর্পোরেট সংস্থা, রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি বিশেষকে যক্ষা দূরীকরণের অংশ করে তোলা। যারা 'নিক্ষয় মিত্র' হবেন তাঁরা যক্ষ্মা আক্রান্ত এক বা একাধিক দুঃস্থ রোগীর চিকিৎসা চলাকালীন ৮ থেকে ১২ মাস পুষ্টিকর খাবার যোগানের দায়িত্ব স্বেচ্ছায় নেবেন। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্যই হল, ওষুধের পাশাপাশি যক্ষা রোগের মোকাবিলায় অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবারের জোগান নিশ্চিত করে রোগীদের সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলা।
advertisement
আরও পড়ুন: পুরুলিয়া ডিজে-তে কাঁপছে বাংলা, সেখানকার ব্যবসায়ীরাই বললেন 'আর না'!
বৃহস্পতিবার নিক্ষয় মিত্রর হিসেবে ওদলাবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসক দীপক রঞ্জন দাস ও তাঁর স্ত্রী কুহেলি দাস ওদলাবাড়ি চা-বাগানের যক্ষ্মা আক্রান্ত দুঃস্থ শ্রমিক পঙ্কজ মুন্ডা ও অন্য আরও একজন রোগীর দায়িত্ব নেন। তাঁরা জানিয়েছেন, চিকিৎসা চলাকালীন ওই দুই রোগীর ৮ মাসের পুষ্টিকর খাবার জোগানের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করবেন। এদিকে জানা গিয়েছে, ওদলাবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের অধীনে নিয়মিত যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসা চলছে এমন রোগীর সংখ্যা বছরে প্রায় ৩০০ জন। আক্রান্তদের বেশিরভাগই আবার চা বাগানের গরিব শ্রমিক।
চিকিৎসক দীপক রঞ্জন দাস বলেন, "নিয়মিত চিকিৎসার পাশাপাশি যক্ষ্মা রোগীদের পুষ্টিকর খাবার অত্যন্ত জরুরি। আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণির মানুষের পক্ষে পুষ্টিকর খাবার জোগানের দায়িত্ব নেওয়া অনেকক্ষেত্রেই অসম্ভব। তাই আমি এগিয়ে এলাম।" সমীক্ষার মাধ্যমে সেই সব মানুষদের তালিকা তৈরি করে নিক্ষয় মিত্র কর্মসূচিতে যোগদান করার আবেদন জানানো হয়েছে ওদলাবাড়ির বিশিষ্টদের। ইতিমধ্যেই দীপকবাবুর পরিবার ছাড়াও ওদলাবাড়ি মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক তপন ঘোষ, ব্যবসায়ী শুভাশিস দত্ত সহ অনেকেই এক বা দু'জন করে যক্ষা আক্রান্ত রোগীর পুষ্টিকর খাবার জোগানোর দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিতে শুরু করেছেন।
এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ভারতবর্ষে বছরে প্রায় ২৬ লক্ষ মানুষ নতুন করে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হচ্ছেন। যার মধ্যে আবার ৪ লক্ষ যক্ষ্মা রোগী প্রতি বছর মারা যান। এখন দেখার নিক্ষয় মিত্র প্রকল্প ২০২৫ সালের মধ্যে দেশ থেকে যক্ষা দূরীকরণ করতে সফল হয় কিনা।
সুরজিৎ দে