জলপাইগুড়ি শহরের বুক চিরে প্রবাহিত হওয়া করলা নদী। একসময় সেখানেই পাওয়া যেত সুস্বাদু মাছ, তার পাশে দাঁড়ালে মিলত শুদ্ধ বাতাস। আজ সে তার লালিমা খুইয়ে পরিণত হয়েছে এক আস্ত ডোবায়। বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে বর্ষাকালে। পাশে দাঁড়ালে আজ চোখে পড়ে আবর্জনার স্তূপ। সরকারি উদাসীনতায়, মানুষের অসচেতনায় জলপাইগুড়িতে জলদূষণের সবচেয়ে উজ্জ্বল উদাহরণ শহরের 'টেমস' করলা।
advertisement
আরও পড়ুন- টানা প্রায় ৬ দিনের বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন
এই করলা নদীতেই আজ গিয়ে পড়েছে দিনবাজারের পরিত্যক্ত আবর্জনা-মাছবাজারের জঞ্জাল, গৃহপালিত পশুর মলমূত্র এমনকী ধোপাবাড়ির জামাকাপড়ের জল। এতে ধীরে ধীরে নদীর ইকোসিস্টেম যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি বিঘ্নিত হচ্ছে জলজ প্রাণীদের জীবন। তবে কেবল দূষণই নয়- নানা অবহেলায় নাব্যতাও কমেছে তার।সংস্কারের অভাবে, উদাসীনতা অবহেলায় যে আজ করলা নদীর এ অবস্থা, তা মেনে নিয়েছেন শহরের বুদ্ধিজীবিরা।
আরও পড়ুন- ডুয়ার্সে ডেঙ্গুর থাবা, আক্রান্ত ৭০ জন
এই প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ির বিশিষ্ট সমাজসেবী তথা পরিবেশপ্রেমী সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, "জলপাইগুড়ির এই নদীকে সঠিকভাবে ব্যবহার করলে নানা কাজেই ব্যবহার করা যেত। কিন্তু প্রশাসনিক উদাসীনতায় ও অসেচতনায় আজ তার এই অবস্থা। নদীটির সংস্কারে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।"
অন্যদিকে, স্থানীয় এক বাসিন্দা তুলসী ধর নদী প্রসঙ্গে বলেন, "আজ এই নদী একটি ডোবা হয়ে গিয়েছে। নানা নোংরা ময়লা গিয়ে পড়ায় জলজ প্রাণীদের জীবন বিপন্ন হচ্ছে। বিষয়টি সকলের দেখা উচিত।"
নদীর নাব্যতা হারাচ্ছে, এ কথা মেনে নিয়েছে পুরসভাও। কিন্তু একা পুরসভার পক্ষে নদীকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চ্যাটার্জি। তিনি বলেন, সেচ দফতরের সহযোগিতা ছাড়া পুরসভার একার পক্ষে এই নদীকে আগের জায়গায় ফেরানো সম্ভব নয়। পুরসভা নদীর পাশের আবর্জনা সাফাই করে দিতে পারে।"
জলপাইগুড়ির অন্যতম জলজ সম্পদ করলা নদীকে তার আগের অবস্থায় কবে ফিরে পাওয়া যাবে, তাই এখন দেখার।
Geetasree Mukherjee