আরও পড়ুন: আর্সেনিক প্রবণ এলাকায় কাটা পড়ল পানীয় জলের পাইপ, জলহীন বারুইপুরের ধপধপি
জলপাইগুড়ির ঢাকিপাড়ায় বেশ কিছু পরিবারের বাস। সারাবছর বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডাক পড়ে তাঁদের। তবে মূল উপার্জনটা হয় এই দুর্গাপুজোর সময়ই। কিন্তু করোনার পর থেকে পরিস্থিতি মোটেও ভাল নয়। অনেকে কাজ হারিয়েছেন। দুর্গাপুজো সহ উৎসবের মরশুমে বিভিন্ন পুজোয় ডাক পাওয়ার সংখ্যাও কমে গিয়েছে। অনেকে আগে ভিনরাজ্যের পুজোয় ঢাক বাজাতে যেতেন। কিন্তু করোনার পর পুরোপুরি বাইরে যাওয়া বন্ধ। ফলে নতুন প্রজন্মের অনেকেই ঘরছাড়া। তাঁরা ঢাক, বাঁশি, সানাই, হারমোনিয়ামের বদলে কেউ কড়াই, কর্নি হাতে তুলে নিয়ে ভিন রাজ্যে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দিয়েছেন।
advertisement
এই পরিস্থিতিতে ঢাকিপাড়ার পরবর্তী প্রজন্মের অনেকে টোটো চালিয়ে পেটের ভাতের জোগাড় করছেন। এই পাড়ার শুভঙ্কর হাজরার মত যুবকদের দাবি, আগের মত কদর নেই ঢাকিদের। ঘাম ঝড়ানো খাটুনির তুলনায় পারিশ্রমিক পাওয়া যায় সামান্য। তাই নতুন প্রজন্ম ভিন্ন পেশার দিকে ঝুঁকছে। করোনার প্রভাব চলে গেলেও রেশ চলে যায়নি এখনও। পুজো কমিটিগুলো আগের মত আর চাঁদা তুলতে পারে না। ফলে তাঁদের পারিশ্রমিকের উপর কোপ পড়ে। তবে সুদিন আসবে সেই আশায় আছেন নিতাই হাজরার মতো অনেক ঢাকি। নিতাইয়ের বলেন, করোনার পর ধীরে ধীরে বাড়ছে পারিশ্রমিক। আশায় আছি সুদিন ফিরে আসবে। বংশপরম্পরায় বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত আছি। বয়স্করা কেউ কেউ ৪০ থেকে ৫০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তাঁদের চোখেমুখে আক্ষেপের চিহ্ন স্পষ্ট। বিভিন্ন মানুষ বাদ্য-বাজনার সঙ্গে যুক্ত হয়ে সরকারি শিল্পী ভাতা পেলেও তাঁরা বঞ্চিত৷ রবি গুহের মত বর্ষিয়ান শিল্পীদের দাবি, প্রশাসনের কাছে যেতে যেতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে পুজোয় ঢাকের তালে অন্যদের নাচানোর প্রস্তুতি নিলেও ঢাকিপাড়ার নিজের মনে কোনও আনন্দ নেই।
সুরজিৎ দে