ব্যাংক পরিষেবা, ফর্ম ফিলাপ বা নানা পরিষেবার ক্ষেত্রে ঘরে বসেই সুবিধা মিলছে ডিজিটাল মাধ্যমের সুবাদে। বিশেষ করে লকডাউন সময় থেকে ডিজিটাল ব্যবস্থা আরও জোরদার হয়েছে দেশ জুড়ে। মানুষ ঘরে বসেই ডিজিটাল মাধ্যমে প্রায় সমস্ত রকম কাজই মিটিয়ে নিচ্ছে। এই ডিজিটাল সময় যখন ঘরে বসে সবকিছু হাতের মুঠোয়। তখনই উল্টো পুরাণ হাওড়ার সাঁকরাইলে।
advertisement
এই একুশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও লম্ফর বা বাতির আলোতেই রাত কাটছে মানুষে। এ ঘটনা নবান্ন থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্ব বলা চলে। মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূর। সাঁকরাইল সারেঙ্গা শিবতলায় বক্সির মাঠ সংলগ্ন এলাকা। কয়েকটি পরিবার এখনও বিদ্যুৎ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। দিনের আলো ফুরালেই মানুষগুলো মন মরা হয়ে পড়ে। ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া থেকে কাজকর্ম। আবার রান্না থেকে খাওয়া দাওয়া। অন্ধকার দূর করতে একমাত্র ভরসা হলো লম্ফর বা বাতির আলো। এ সময় রাজ্যজুড়ে যেখানে আলোয় ঝিকঝিক করছে রাস্তাঘাট খেলার মাঠ বা পার্ক। সেই রাজ্যেই এমন ঘটনা রীতিমতো চমকে যাওয়ার মত। এলাকাবাসীর গলায় বিষাদের সুর। তারা জানাচ্ছেন, তারা বোধহয় মানুষ নয়। তাই হয়তো এত বঞ্চনা।
আরও পড়ুন : হিমেল হাওয়ায় জমিয়ে মুড়ি-আলুরদম খাওয়াই রীতি, শতাব্দী প্রাচীন সংক্রান্তি মেলা ঘিরে প্রস্তুতি তুঙ্গে
ইদানীং লম্ফর বা হারিকেনও জ্বলছে না। বেড়েছে কেরোসিনের দাম, দিন এনে দিন খাওয়া মানুষের পক্ষে কেরোসিন কেনা অসম্ভব প্রায়। একমাত্র বাতির আলো ভরসা। তাও মাত্র কয়েকখানি ছোট বাতি প্রতিদিনের জন্য। আসলে বাতির দামও যে কোন নয়। এলাকায় বেশ কতকগুলি বাড়ি রয়েছে তার মধ্যে কেউ কেউ পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে ইলেকট্রিক নিয়ে এসেছে। একটা দুটো আলো জ্বলছে কারো বাড়িতে। তবে বেশিরভাগ মানুষের বাড়ি অন্ধকারাচ্ছন্ন সন্ধার পর। ওই এলাকার অভিভাবকরা চিন্তিত ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যত নিয়ে। যেখানে ডিজিটাল মাধ্যমে লেখাপড়া রাজ্য জুড়ে। সেখানে তাদের ছেলেমেয়েরা ইলেকট্রিক আলোতে পড়ার সুযোগই পাচ্ছেনা।
আরও পড়ুন : এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি করে দেওয়ার নামে প্রতারণা! বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে সক্রিয় চক্র
এলাকাবাসীর অভিযোগ এ বিষয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রশাসনকে জানিয়েও মেলেনি সুরাহা। ভোট আসে ভোট যায় মেলে প্রতিশ্রুতি। তবে সেই প্রতিশ্রুতি কার্যকর হয়নি কখনও বলছেন স্থানীয়রা। গত ৩০ থেকে ৩৫ বছর ধরে বসবাস তাঁদের। তাঁদের এই সমস্যার দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না কেউ। এবার ওই এলাকার মানুষ পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বেসুরে।যদিও এ প্রসঙ্গে, সারেঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মৃদুলা বাছার জানিয়েছেন, ওই এলাকার সমস্যা নিয়ে তাঁর কাছে কেউ আসেনি পঞ্চায়েতে। এ বিষয়ে তিনি জানিয়েছেন, এলাকার মানুষ তার নিকট এলে অবশ্যই সহযোগিতা করবেন। কেন মানুষ ইলেকট্রিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। সে বিষয়ে খতিয়ে দেখবেন পঞ্চায়েত প্রধান তিনি এমনটাই আশ্বাস দিয়েছেন।