TRENDING:

Independence Day: বাংলার প্রথম রাজবন্দী, ননীবালা দেবীর মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীকে পিটিয়ে মারতে চেয়েছিল ইংরেজ!

Last Updated:

স্বাধীনতা সংগ্রামী বিপ্লবী ও প্রথম মহিলা রাজবন্দী হাওড়া বালির ননীবালা দেবী। (Independence Day)

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#হাওড়া: স্বাধীনতা সংগ্রামী বিপ্লবী ও প্রথম মহিলা রাজবন্দী হাওড়া বালির ননীবালা দেবী। ননীবালা দেবী একজন সাহসী বুদ্ধিমতি মহিলা, দেশের পরাধীনতার শৃংখল মুক্ত করাই ছিল তাঁর একমাত্র লক্ষ্য। জন্মগ্রহণ হাওড়া জেলার বালিতে। পিতার নাম সূর্যকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, মাতা গিরিবালা দেবী। ননীবালা দেবীর মাত্র ১১ বছর বয়সেই বিবাহ সম্পন্ন হয়। তবে তাঁর সাংসারিক জীবন ছিল অতি সংক্ষিপ্ত। ১৬ বছর বয়সে বিধবা হন, চলে আসেন বাপের বাড়ি। তারপর থেকেই তিনি ধীরে ধীরে স্বাধীনতা সংগ্রামে নিজেকে যুক্ত করেন। বিপ্লবী অমরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে তাঁর ভাইপো হন, তাঁর কাছেই বিপ্লবের দীক্ষা পেলেন ননীবালা দেবী।
ননীবালা দেবী
ননীবালা দেবী
advertisement

স্বাধীনতা সংগ্রামে যুক্ত হন, পুলিশের নজরে এড়িয়ে বিপ্লবীদের সঙ্গে ওঠাবসা শুরু হয়। একের পর এক দায়িত্ব আসে তাঁর উপর, সে দায়িত্ব অতি দক্ষতার সঙ্গে পালন করতেন। কোনও কিছুতেই পিছপা হতেন না। ১৯১৫ সাল ' শ্রমজীবী সমবায় ' নামক প্রতিষ্ঠানের তল্লাশি করে পুলিশ। বিপ্লবী অমর চ্যাটার্জী পলাতক হলেও পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় রামচন্দ্র মজুমদার। গ্রেফতারের সময় রামচন্দ্র মজুমদার পিস্তল কোথায় রেখে গিয়েছেন সে কথা কাউকে জানিয়ে যেতে পারেনি। সেই পিস্তল কোথায় রেখে গেছেন, তা জানার দায়িত্ব এসে পড়ে ননীবালা দেবীর উপর, তিনি একজন বিধবা নারী, বর্তমান সমাজ ও তখনকার সমাজ, বর্তমান মেয়েরা বা তখনকার মেয়েদের মধ্যে অগাধ ব্যবধান, সে সময় তাঁদের জন্য সমাজের তৈরি অদৃশ্য কঠোর বিধি-নিষেধের বেড়াজাল ছিল। তাদের উপর ছিল সমাজের চোখ রাঙানি! তিনি তা উপেক্ষা করেই একজন গৃহবধূ সেজে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে রামচন্দ্র বাবুর সঙ্গে দেখা করেন এবং তিনি পিস্তলের গুপ্ত খবর জেনে আসেন। সেই কাজ করে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি আর পাঁচটা মেয়ের মত সাধারন নন।

advertisement

আরও পড়ুন: জাতীয় স্তরে বড় ধাক্কা, '২৪-এর পর দিল্লিতে মমতা' বলা সেই পবন কুমার বর্মা তৃণমূল ছাড়লেন!

যদিও ননীবালা দেবী ছদ্মবেশে পুলিশের নজরে এড়িয়ে রাম বাবুর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তিনি যে তার স্ত্রী নন পরবর্তী সময়ে পুলিশ জানতে পারে। তিনি বিভিন্ন সময়ে রিসরা চন্দনগরে বাড়ি ভাড়া নিয়েপলাতক বিপ্লবীদের নিজের আশ্রয় রেখেছিলেন। তখন অধিকাংশ জায়গায় মেয়েরা না থাকলে বাড়ি ভাড়া মিলত না। গৃহকর্তির বেশে সেই ভাড়া বাড়িতে থাকতেন ননীবালা দেবী, সে সময় বিন্দু মাত্র টের পাইনি পুলিশ। দিনের আলোতে বিপ্লবীদের লুকিয়ে রাখতেন ঘরে, রাতের অন্ধকারে সুবিধা মত বেরিয়ে পড়তেন বিপ্লবীরা। হঠাৎই মাঝেমধ্যেই পুলিশ হানা দিত। তবে নিমিষেই অদৃশ্য হয়ে যেত পলাতক বিপ্লবীরা। পুলিশ নিরাশ হয়ে ফিরত। চন্দননগরের কয়েকটা বাড়িতেই এভাবে ননীবালা দেবী পলাতক বিপ্লবীদের আশ্রয় দিতেন।

advertisement

View More

আরও পড়ুন: তড়িঘড়ি এল খাট, মধ্যরাতে নিজামে ঢুকতেই অনুব্রতকে ঘিরে একের পর এক চমক! 'যত্ন' করছে সিবিআই

পরবর্তী সময়ে চন্দননগরে তার পক্ষে নিরাপদ ছিল না। তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে। তার বাবা সূর্যকান্ত ব্যানার্জিকে পুলিশ ইলিসিয়াম রো-তে নিয়ে গিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে জেরা করে। সে সময় ননীবালা দেবী চন্দনগর ছেড়ে চলে গেলেন পেশোয়ায়। একজন মহিলা বাড়ি ছেড়ে পুরুষদের সঙ্গে মেলামেশা বা একাকী এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়া এটা সমাজ মেনে নিত না। তবে ননীবালা দেবী তা কোন ভাবে পাত্তা না দিয়েই, তার বাল্যবন্ধুর দাদা, তার কাছে পেশোয়ায় চলে যান।

advertisement

কিছুদিন পর সূত্র মারফত পুলিশ জানতে পারেন ননীবালা দেবী পেশোয়ায় রয়েছে। প্রায় দিন ১৫ পর পুলিশ সন্ধান পেয়ে তাঁকে গ্রেফতার করতে পেশোয়ায় যায়। তখন ননীবলা দেবী অসুস্থ, কলেরা রোগে আক্রান্ত কয়েক দিন যাবত। তাঁকে গ্রেফতার করে স্ট্রেচারে করে হাজতে নিয়ে যায়। কয়েকদিন সেখানে রাখার পর তাঁকে কাশির জেলে পাঠানো হয়।

advertisement

বিপ্লবীদের কলাকৌশল, সন্ধান জানতে, কাশির জেলে নিয়মিত তাঁকে জেরা করত, ডেপুটি পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট জিতেন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর উপর চলত পুলিশি কঠোর অত্যাচার, বিভিন্ন ভাবে জেরা তাঁর কাছ থেকে কিছু না মেলায় লঙ্কা বেটে উলঙ্গ করে গোপনাঙ্গে ঢেলে দেবার মতো অত্যাচার পুলিশের। যন্ত্রণায় ছটপট করেছেন, চিৎকার করেছেন তবুও কারো সন্ধান তিনি দেননি। আলো-বাতাস হীন অন্ধকার শেল শুধুমাত্র একটা ছোট দরজা কোন ছিদ্র পর্যন্ত ছিলনা। তবুও তাঁর থেকে পুলিশ বিন্দু মাত্র সন্ধান বের করতে পারেনি।

কয়েকদিন পর দেখা গেল মাটিতে পড়ে রয়েছে ননীবালা দেবী, জ্ঞানশূন্য। তারপর তাকে কাশী থেকে কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে আসা হয়, কলকাতা এসে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে তিনি অনশনে করেন। জেল কর্তৃপক্ষ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তাকে অনুরোধ করেও অনশন ভাঙ্গাতে পারেনি। তাকে খাওয়ানোর জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকম চেষ্টা করা হয়েছিল, তবে সব চেষ্টাই ব্যর্থ।তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, আপনি কি চান! কি করলে আপনি খাবেন?ননীবালা বালা দেবী জিনিয়ে ছিলেন, ' আমাকে বাগবাজারের রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের স্ত্রীর কাছে রেখে দিন ' তাহলে খাব। এর জন্য, তাকে লিখিত দরখাস্ত লেখা দিতে বলা হয়েছিল। ননীবালা দেবী সেই দরখাস্ত লিখে দিলেন। তাঁর দেওয়া দরখাস্ত এক পুলিশ অফিসার ছিড়ে ফেলেন তার সামনে। তা দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে, অসুস্থ শরীর ঝেড়ে রুদ্রমূর্তি ধারণ করে সপাটে চড় বসিয়ে দিলেন ওই পুলিশ কর্মীকে। সে সময় ননীবালা দেবীকে যেন ধরে রাখাই দায় হয়ে পড়েছিল পুলিশ কর্মচারীদের। পরবর্তী সময়ে ননীবালা দেবীকে তিন নম্বর রেগুলেশনে স্টেটপ্রিজনার করে প্রেসিডেন্সি জেলে রাখা হয়। বাংলার একমাত্র মহিলা স্টেটপ্রিজনার, ননীবালা দেবী প্রথম মহিলা রাজবন্দী।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
ফাঁকা জায়গার লাগবে না, আমবাগানেই হচ্ছে কুইন্টাল কুইন্টাল ফলন! বিনা ব্যয়ে লাভ পাচ্ছেন চাষি
আরও দেখুন

রাকেশ মাইতি

বাংলা খবর/ খবর/হাওড়া/
Independence Day: বাংলার প্রথম রাজবন্দী, ননীবালা দেবীর মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীকে পিটিয়ে মারতে চেয়েছিল ইংরেজ!
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল