সেই আশাতেই বিনিন্দ্র রাত কাটিয়েছেন তিনি। কিন্তু কোথাও যেন প্রদীপের নীচে অন্ধকার! এতো ফ্ল্যাশলাইটের মাঝেও কোথাও যেন বিষাদের করুণ সুর। ক্রীড়া সংস্কৃতিতে বরাবরই ভীষণ সুনাম রয়েছে পাঁচলার দেউলপুর এলাকার। এক সময় এলাকার মানুষ মেতে থাকতেন ফুটবলে। একসময় দেউলপুরের বাগ পরিবারের তৈরি বিখ্যাত বাঁশের পোলো বল বিশ্বের দরবারে পৌঁছেছিল। সময়ের স্রোতে সব-ই যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। সবুজ ফুটবল আজ একবুক ঘাসের আস্তানা। পোলোবলও আজ কার্যত ইতিহাস। ফুটবল চর্চাও সেভাবে আর হয় না। এতো 'না' এর মাঝেও প্রচারের লাইমলাইটের বাইরে থেকে ইতিবাচক লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন গ্রামের 'দ্রোণাচার্য' প্রশিক্ষক অষ্টম দাস। অষ্টম বাবুর হাত ধরেই এলাকায় ক্রীড়া সংস্কৃতি ফের যেন আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছে। স্থানীয় এলাকায় ক্রীড়া চর্চার প্রসারে তিনি যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেন, তেমনই তাঁর হাত ধরেই উঠে আসছেন অচিন্ত্য শিউলির মতো 'সোনার ছেলে'।
advertisement
তবে অষ্টম বাবুর গলায় আক্ষেপের সুর। নেই যথাযথ পরিকাঠামো, নেই প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক জোগান। অষ্টম বাবুর কথায়, যখনই সাফল্য আসে তখনই ভুরি ভুরি প্রতিশ্রুতি মেলে। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সেই প্রতিশ্রুতি আর কার্যকর হয়নি। এই কথা শুধু অষ্টম দাসের নয়, গ্রামের মানুষের একই আক্ষপ। আসলে বছরের পর বছর যে জায়গায় কঠোর অনুশীলন করে জাতীয় স্তরে বা আন্তর্জাতিক স্তরে অচিন্ত্যরা পৌঁছয় সেই অনুশীলন স্থল একেবারেই উপযুক্ত নয় বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: রানাঘাট নয়, নদিয়াতেই থাকতে চান! নাম বদলে উত্তেজনা শান্তিপুরে!
দীর্ঘদিন ধরেই চলছে খোলা আকাশের নীচে প্রশিক্ষণ। বহু কষ্টে অষ্টমবাবু তাঁর বাড়ির একতলা ছাদের অংশ বাড়িয়ে খেলার সরঞ্জাম রাখার ব্যবস্থাটুকু করেছেন। যে স্থানে জনা পঞ্চাশেক ছেলের বৃষ্টি এলে মাথা গোজার ঠাঁই হয় না, বর্ষাভোর সেখানেই চলে অনুশীলন। তাঁদের আশা, অচিন্ত্যর সাফল্যের সৌজন্যে বাস্তবে রূপায়িত হতে পারে প্রতিশ্রুতি। আপাতত সেই আশাতেই বুক বেধেছেন দেউলপুরের ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ।
রাকেশ মাইতি