হুগলির শ্রীরামপুরের সোমনাথের সঙ্গীতে হাতেখড়ি বাবার নীরদবরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তিনি ছিলেন পঞ্চাশের দশকের একজন খ্যাতনামা ডান্স ড্রামার সঙ্গীত পরিচালক। তবে বাবা মারা যাওয়ার পর আর সেভাবে গান-বাজনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না সোমনাথ। তিনি একটি গার্মেন্টস সংস্থায় চাকরি করেন। পরবর্তীতে স্ত্রীর কাছ থেকেই এইসব ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে বাদ্যযন্ত্র তৈরি করার উৎসাহ পান।
advertisement
বাতিল জিনিস দিয়ে তৈরি বাদ্যযন্ত্রগুলোর অভিনব নাম দিয়েছেন সোমনাথবাবু। কোনটার বোতল তরঙ্গ, আবার কারওর নাম কাজ তরঙ্গ। এইভাবে বাদ্যযন্ত্র তৈরির কারণে ইতিমধ্যে বেশ কিছু পুরস্কার পেয়েছেন সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি নিজের হাতের তৈরি যন্ত্র নিয়ে বিভিন্ন রিয়ালিটি শো-তে বাজানোর ডাকও পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: জমে উঠেছে বহরমপুর মেলা, উপচে পড়ছে মানুষের ভিড়
কীভাবে ফেলে দেওয়ার জিনিস থেকে বাদ্যযন্ত্র তৈরি শুরু করলেন সেই অভিজ্ঞতা আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন সোমনাথবাবু। তিনি জানান, বাড়ি সংস্কারের কাজ উপলক্ষে মার্বেলের টাইলস পাতার কাজ চলছিল। সেই সময় সেই টাইলসের শব্দ শুনে তার মনে হয়, ওখান থেকে যে শব্দ তরঙ্গ বেরোচ্ছে তা দিয়ে জাইলোফোন জাতীয় বাদ্যযন্ত্র তৈরি করা যায়! সেখান থেকেই শব্দ তরঙ্গের প্রকৃতি অনুধাবন করে বাতিল জিনিসপত্র দিয়ে বাদ্যযন্ত্র তৈরির কাজ শুরু হয়। কখনও কাচের টুকরো দিয়ে বানিয়েছেন 'কাচ তরঙ্গ', আবার কখনও বাঁশ কেটে বানিয়েছেন 'বাঁশ তরঙ্গ'!
এই বিষয়ে সোমনাথবাবুর স্ত্রী জানান, বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে এসে তিনি জানতে পারেন তাঁর শ্বশুরমশাই খুব খ্যাতনামা সঙ্গীত শিল্পী ছিলেন। তখন থেকেই তিনি তাঁর স্বামীকে উৎসাহিত করতে থাকেন আবারও সঙ্গীত জগতে ফিরে আসার জন্য। গান-বাজনা তাঁরও ছোটবেলা থেকে ভাল লাগত। তবে বিশেষ কারণে তা হয়ে ওঠেনি। নিজের না হলেও স্বামীকে উৎসাহিত করতে থাকেন। আর তাতেই একের পর এক চমকে দেওয়া বাদ্যযন্ত্র বা তরঙ্গ যন্ত্র উদ্ভাবন করে বসেন সোমনাথবাবু। স্বামীর এই সাফল্যে খুশি স্ত্রী।
রাহী হালদার





