আরও পড়ুনঃ বাড়ির দরজা খুলতেই আঁতকে উঠলেন তৃণমূল কর্মী! সাংঘাতিক কাণ্ড ঘটল নামখানায়
তবে, অসম্ভব অমানবিকতার পাশাপাশি মানবিক মুখও আছে বলেই হয়তো এখনও এই পৃথিবী টা সঠিক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তড়িঘড়ি গোঘাট থানার ওসি শৈলেন্দ্র নাথ উপাধ্যায় নিজেই উদ্যোগ নিয়ে এই নাবালিকাকে উদ্ধার করে আনে ও তাঁর যাবতীয় থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা করে শেষমেশ তাঁর মামার বাড়িতেই পৌঁছে দেন। তাঁকে যাতে কোন কষ্ট পেতে না হয় সেই ব্যবস্থা করে দেন তিনি। পাশাপাশি নাবালিকার পড়াশোনা করার যে অদম্য ইচ্ছা তাও যাতে বন্ধ না হয় সেই ব্যবস্থাও করে দেন গোঘাট থানার ওসি। আর তার পাশাপাশি অত্যাচারী, অমানবিক কাকিমাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
advertisement
উল্লেখ্য, এই নাবালিকার নাম সৃজনী চট্টোপাধ্যায়। বাবা তন্ময় চট্টোপাধ্যায় বেশ কয়েক বছর আগেই দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। আর মাও ১০ বছর আগেই বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন। তাঁর খোঁজ নেই। নাবালিকা সৃজনীর দাদু ও ঠাকুমার কাছেই থাকত। কিন্তু দাদুও বেশ কয়েক বছর আগেই মারা যায়। বাড়িতে কাকু-কাকিমার ফাইফর্মাস খেটে গোঘাটের ভগবতী বালিকা বিদ্যালয় সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে সৃজনী।
প্রচন্ড কষ্ট স্বীকার করেই তাঁর পড়াশোনা করা। কিন্তু কাকু কাকিমা কোনদিনই সৃজনীকে ভালোবাসা দেয়নি। উল্টে বাড়ির কাজ থেকে দোকান বাজার সবই এই নাবালিকা মেয়েটিকে দিয়ে করায়। কাজের খামতি হলেই খেতে দিত না সৃজনীকে। সৃজনীকে উপোস থাকতে হত। আবার পান থেকে একটু চুন খসলেই এরকমই অত্যাচারের শিকার হত সৃজনী। কিন্তু সেই ভয়ংকর অত্যাচারের ভয়ে কোন প্রতিবাদ করতে পারত না সৃজনী।বাইরের কাউকেই বলতে পারত না সে।তাই কষ্ট সহ্য করেই সে থাকত বাড়িতে।
জানা যায়, এদিন খিদে সহ্য করতে না পেরে ফ্রিজ খুলে দুটি মিষ্টি খেয়ে নেয় সৃজনী। আর এতেই কাকিমা সারদামনি চট্টোপাধ্যায় ছোট্ট সৃজনীর উপর পাশবিক অত্যাচার চালায়। মারধরের পাশাপাশি খুন্তি গরম করে সৃজনের পিঠে ছ্যাঁকা দিয়ে দেয়। ছ্যাঁকার পর ছ্যাঁকাতে। ছটফট করতে থাকে সৃজনী কিন্তু বলার উপায় নেই তাহলে আবারও মারধর হবে। ঐ অবস্থাতেই বুধবার সৃজনী বিদ্যালয়ে যায়। কিন্তু বিদ্যালয়ে ঠিকঠাক ভাবে সে থাকতে পারছিল না। কারণ পিঠের সেই বড় বড় ফোসকা গুলি গলে গিয়ে যন্ত্রনা হচ্ছিল তার।তাই অস্থির হয়ে ওঠে সে।
সৃজিনীর এই ছটফট ও অস্থিরতা চোখে পড়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার।তখনই জানতে পারেন সব ঘটনা। এই দৃশ্য দেখে ও ঘটনার কথা জেনেই প্রধান শিক্ষিকা তখনই বিদ্যালয় থেকেই গোঘাট থানায় খবর দেন। আর কথাতেই আছে যার কেউ নেই তাঁর ঈশ্বর আছে।মআর সেই ত্রাতার ভূমিকা নিয়েই সৃজিনীর পাশে দাঁড়িয়েছেন গোঘাট থানার ওসি নিজেই। তবে এই ঘটনায় তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে এলাকা জুড়ে।
Suvojit Ghosh