শুক্রবার রাতের করমণ্ডল এক্সপ্রেসে বহু যাত্রীদের মধেই ছিলেন হুগলির উত্তরপাড়ার মাখলার বাসিন্দা শানু দাস। বছর ৩০-এর শানু সংসারের হাল ধরতে ট্যুর ম্যানেজারের কাজ করতেন। শুক্রবার বিকেলে শালিমার থেকে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ধরেন কোয়েম্বাটুর যাওয়ার জন্য। সন্ধের আগে স্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কল-এ কথা হয়েছিল। হঠাৎ-ই টিভি স্ক্রিনে ভেসে ওঠে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে এই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার খবর। শানু-র ফোন তখন সুইচড অফ। কান্না, হাহাকারে কেটেছে কোটা রাত। ছেলেটা কী বেঁচে আছে? এই চিন্তাই তাড়িয়ে বেরিয়েছে মা-কে। স্বামী বাযি ফিরবে তো? দুশ্চিন্তা কুড়ে কুড়ে খেয়েছে স্ত্রীকে। অবশেষে সকালে অন্য এক ব্যক্তির ফোন থেকে শানু ফোন করে জানান, সে জীবীত। খড়্গপুর পর্যন্ত পৌঁছেছে। বিকেলের মধ্যে নিজের বাড়িতে পৌঁছে যাবে।
advertisement
শানু দাসের স্ত্রী শ্রাবণী দাস বলেন, পাশের বাড়ির টিভিতে প্রথম ট্রেন দুর্ঘটনার খবর শুনতে পান। বাযি এসে টিভি চালাতেই পায়ের তরলার মাটি সরে যায়। যে ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে, তাতেই সওয়ারি তাঁর স্বামী। বারংবার স্বামীকে যোগাযোগ করতে চাইলেও পারেন না। ফোন সুইচড অফ। সারারাত দুঃস্বপ্নের মতো কাটে। অবশেষে সকালে স্বামী ফোন করতে স্বস্তি ফিরে পান শানুর স্ত্রী ও মা।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধ্যায় বালেশ্বর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরের বাহানগা বাজার স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, একটি মালগাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে ট্রেনটির। দুর্ঘটনার অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন মালগাড়ির উপরে উঠে যায়। ঠিক সেই মুহূর্তে পাশের লাইন দিয়ে আসছিল ডাউন বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। ডাউন লাইনে পড়ে থাকা করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত কামরাগুলির উপর এসে পড়ে বেঙ্গালুরু-হাওড়া ডাউন ট্রেনটি। সঙ্গে সঙ্গে হাওড়াগামী সেই ট্রেনটির দু’টি কামরাও লাইনচ্যুত হয়। ভয়ঙ্কর এই দুর্ঘটনায় ক্রমেই বেড়ে চলেছে মৃত ও আহতের সংখ্যা।
রাহী হালদার