স্থানীয় সূত্রে খবর, চুঁচুড়া বড় বাজার বিবির বাগান এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে জন্মদিনের নিমন্ত্রণ ছিল মামুন ওরাও ও তার স্বামীর। সেই জন্মদিনের পার্টিতেই তারা তাদের ছ মাসের শিশুকে নিয়ে এসেছিলেন। সেখানে মদ ও মাদকের পার্টি হয়।খাওয়া দাওয়ার পর শিশুর বাবা চলে যায়। বিকালে ঘুম ভাঙতে দেখে তার পুত্র সন্তান পাশে নেই।তার ছেলে কোথায় সেই বিষয়ে তার আত্মীয় পিঙ্কিকে জিজ্ঞাসা করলে জানায় ওর বাবা নিয়ে গেছে। শিশুর মা চুঁচুড়া থানায় গিয়ে জানায় তার সন্তান চুরি হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করে।
advertisement
চুঁচুড়া কপিডাঙায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকে শিশুর মা বাবা। সেখান থেকে শিশুর বাবা ভীম ওরাওকে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ভীম জানায় সে তার ছেলেকে নিয়ে যায়নি। এরপর পিঙ্কি ও তার বাড়িতে যারা সেসময় উপস্থিত ছিল তাদের জেরা শুরু করে পুলিশ। শিশু কোথায় কাকে বিক্রি করা হয়েছে কিছুই জানাতে চায়নি তারা। পুলিশ চুঁচুড়া বড় বাজার ও জোরাঘাট এলাকার সিসি টিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু করে।একটি স্কুটারে শিশুকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেখা যায়। এরপরই পিঙ্কি ভেঙে পরে। সব স্বীকার করে।
আরও পড়ুন: বসিরহাটে উড়ছে লাল পতাকা ! বাম হাওয়ায় মাথা ব্যথা কাদের? কোথায় গেরুয়া? জানুন
পুলিশকে জানায়,দেড় লাখা টাকায় শিশুটিকে বিক্রি করা হয় চন্দননগরে রমেন দেবনাথের কাছে। টাকার ভাগ পায় পিঙ্কি ও তার সঙ্গীরা। শিশুটিকে প্রথমে স্কুটারে চাপিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে পিঙ্কির নাবালক ছেলে।পরে অটো করে চন্দননগর বিবিটহাটে রমেনের বাড়ি পৌঁছ দেওয়া হয়।
চুঁচুড়া থানার আই সি অনুপম চক্রবর্তীর নেতৃত্ব একটি টিম চন্দননগরে অভিযান চালায়। অভিযুক্তের বাড়ি থেকে শিশু উদ্ধার করে,গ্রেফতার হয় মোট পাঁচ জন। ধৃত রমেন দেবনাথ, পিঙ্কি গুপ্তা,সঙ্গীতা বিশ্বাস,বেবি অধিকারী ও কাকলি চক্রবর্তীকে এদিন চুঁচুড়া আদালতে পেশ করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে শিশু পাচারে একটি চক্র এই কাজে যুক্ত। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
আরও পড়ুন: অবলা বন্ধুত্ব! আহত গরুকে ছেড়ে গেল না অন্য গরু! চোখে জল আনবে ভিডিও
চন্দননগর পুলিশের ডিসিপি বিদিত রাজ বুন্দেশ বলেন,শিশু অপহরণ হয়েছে অভিযোগ পাওয়ার পর চুঁচুড়া থানার পুলিশের একটি দল গঠন করা হয়। চন্দননগর পুলিশের ডিডি সেই টিমকে সাহায্য করে।কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়,অপহৃত শিশুটিকেও উদ্ধার করা হয়।পরিকল্পনা করে এই অপরাধ সংগঠিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে প্রাথমিক তদন্তে।দেড় লাখ টাকায় শিশু বিক্রি হয়েছে বলে অভিযুক্তরা স্বীকার করেছে। এর চক্রে আর কারা যুক্ত, যে শিশুটিকে কিনেছিল তার এক সন্তান আছে। শিশু অপহরণ হয়েছিল টাকার জন্য, কি উদ্দেশ্যে শিশু কেনা হয়েছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রাহী হালদার






