বড় মেয়ে রুমা মল্লিক তার প্রাপ্ত নম্বর ৩২৪, ছোট মেয়ে ঝুমা মল্লিক তার প্রাপ্ত নম্বর ৩২১, দুজনেই জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। একজন কোনও রকম চলাফেরা করতে পারলেও, আরেক জনের ভরসা হুইলচেয়ার। কানে যেমন শুনতে পারে না, বলতে পারে না কথাও। মা রেখা মল্লিক সংসার সামলানোর পাশাপাশি দুই প্রতিবন্ধী মেয়েকে কী ভাবে পড়াশোনা করাবেন এই নিয়ে সব সময় থাকতেন দুশ্চিন্তায়। পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি করানোর সময় অনেকটাই ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের, কারণ দুজনেই তো বিশেষ ভাবে সক্ষমন। কীভাবে বিদ্যালয়ে যাবে এই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শিক্ষক এবং শিক্ষিকারা।
advertisement
আরও পড়ুন: এক সময় বি-টাউনে ছিল তাঁদের রাজত্ব! সাফল্যের শিখরে থাকাকালীনই বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন এই অভিনেত্রীরা!
যদিও অনেক টানাপোড়েনের পর মেয়েদের ভর্তি করান বাগআঁচড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। তারপর থেকেই নিয়মিত বিদ্যালয়ে পঠন পাঠনের জন্য যেত দুই মেয়েই। পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ দেখে শিক্ষকরাও তাদের ধীরে ধীরে ভালবাসতে শুরু করেন। অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে বেশি নজর দিতেন শিক্ষকরা, যদিও দুজনেরই স্মৃতিশক্তি অনেকটাই কম তাই বাড়তি পরিশ্রম করতে হত শিক্ষক এবং শিক্ষিকাদের।
আরও পড়ুন: বুধবার উচ্চ মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ, রেজাল্ট দেখুন News18 Bangla-র ওয়েবসাইটে
মা রেখা মল্লিক জানিয়েছেন, মেয়েদের ভর্তি করানোর সময় একটু সমস্যায় পড়তে হলেও পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা পাশে না থাকত, হয়তো মাধ্যমিক পরীক্ষায় মেয়েরা সাফল্য পেত না। বাবা শ্যামল মল্লিক টোটো গাড়ি চালিয়ে কোনরকম সংসার চালান। মেয়েদের পড়াশোনার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন তা জোগাড় করতেই হিমশিম খেয়ে যেতে হয়, তবুও হাল ছাড়েননি তাঁরা। শ্যামল মল্লিক আক্ষেপের সুরে বলেন, তাদের দুরবস্থার কথা কে না জানে। মেয়েরা মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করলেও কেউই পাশে দাড়ায়নি, না বাড়িতে এসেছে কোন জনপ্রতিনিধি না খোঁজ নিয়েছে প্রশাসন। সরকার যদি একটু আর্থিক সহায়তা করত তাহলে আগামী দিনে মেয়েদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হত। তবে হাজার কষ্ট করে হলেও মেয়েদের পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন মা-বাবা দুজনেই।
মৈনাক দেবনাথ