দক্ষিণ বরাবাজার ব্লক সংলগ্ন ঝাড়খণ্ড সীমান্তবর্তী জঙ্গলে ঘেরা রাখডি গ্রাম। শাল, মহুল, পলাশ, আম, জাম, আকাশমনির জঙ্গলের ভিতর টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি একটি ছোট্ট ঘর। সেই টিনের ছাউনির ঘরে বেড়ে ওঠা কৃষক পরিবারের মেয়ে ভূমিকার। বাবা পেশায় একজন চাষি। বাড়ি থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে “প্লাস টু আদিবাসী হাই স্কুল বাঙুরদা”র ছাত্রী ভূমিকা।
advertisement
প্রতিদিন সাইকেল চালিয়ে এই পথ পেরিয়ে স্কুল যায় ভূমিকা। স্কুলের ক্লাসেও তার সর্বাধিক উপস্থিতি হার বলে জানা গিয়েছে। নুন আনতে পান্তা ফুরায় তাদের সংসারে। কিন্তু তাতে কী? নিজের লক্ষ্যে অবিচল ভূমিকা। রাখডি গ্রামের আশেপাশে নেই কোনও বড় কোচিং সেন্টার। কেবলমাত্র অঙ্কের টিউশন মাস্টার ছিল তার ভরসা। আর ছিল আত্মীয়-স্বজনের সহযোগিতায় ও নিজের প্রচেষ্টা। আর তাতেই নিজ যোগ্যতায় রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের স্কলারশিপ পায় জেনারেল ক্যাটাগরির ছাত্রী ভূমিকা মিশ্র। শুধু পড়াশোনা নয় পাশাপাশি দাবা খেলাতেও সে খুব পটু। ছোট থেকে দাবাতে মন টানে তার।
আরও পড়ুন: জগদীশ চন্দ্র বসু স্কলারশিপ ২০২৫-এর দিনক্ষণ ঘোষণা, কারা পাবেন এই বৃত্তি? যোগ্যতা-ফি বিশদে জানুন
এ বিষয়ে ভূমিকা মিশ্র জানান, এই রেজাল্টে খুবই আনন্দিত সে। আগামী দিনে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করতে চায়। এ বিষয়ে ভূমিকা মিশ্রর বাবা জানান, চাষবাস করে কোনওরকমে সংসার চালান তিনি। এর মধ্যেও তার মেয়ের এই দুর্দান্ত রেজাল্টের তিনি খুবই খুশি। একেবারে নিজের চেষ্টাতেই ভূমিকা এই রেজাল্ট করেছে। তিনি চান তার মেয়ে আরও অনেক বড় হোক। ডুংরি জঙ্গলে ঘেরা পরিবেশে বেড়ে ওঠা, শত বাধা প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে লক্ষ্যে স্থির থাকা এতটাও সহজ ছিল না। কিন্তু কোনও কিছুই দমাতে পারেনি ভূমিকাকে। আগামীদিনে আরও বড় লড়াইয়ের পথে এগিয়ে চলেছে সে।
শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জি