সূত্রের খবর, আবদুলের বাড়ি কুমারগঞ্জ ব্লকের সমজিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষ্ণপুর গ্রামে। বাবা তোফাজ্জল হোসেন সরকার পেশায় প্রাক্তন প্রাইমারি শিক্ষক। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার প্রত্যন্ত একটি গ্রামে তারা বাস করলেও আবদুল উচ্চমাধ্যমিক পড়াশোনার জন্য বালুরঘাটে আসেন।
আরও পড়ুন ঃ নতুন প্রজন্মের গলায় দেশাত্মবোধক গান! শুনে মুগ্ধ জেলার মানুষ
advertisement
আবদুল ছোট থেকেই বরাবরই পড়াশুনায় মগ্ন। প্রত্যেক পরীক্ষায় সে অসম্ভব ভালো ফল পেয়ে উত্তীর্ণহয়েছে। এবিষয়ে আবদুল মোতাকাব্বের জানায়, “ছোটবেলা থেকেই আমার জীবনের একটাই লক্ষ্য ছিল যে আমি বিজ্ঞানী হব। দেশের হয়ে সেবা করবো। আমার দীর্ঘ পরিশ্রমের পরে আমার কাছে এত বড় সুযোগ এসেছে। আজ আমার বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারলাম। ভবিষ্যতে আমি বিজ্ঞানী হয়ে দেশের জন্য কিছু করতে চাই।”
পাশাপাশি,আবদুল জানায়, তার মত অন্যান্য ছাত্র ছাত্রীরাও চেষ্টা করে যেন তাদের লক্ষ্যে সফল হতে পারে। প্রত্যন্ত এলাকা বা পরিবার কোনো কিছুই যেন তাদের লক্ষ্যে বাঁধা নয়। স্কুল শিক্ষক থেকে কলেজ প্রফেসর প্রত্যেকেই সমান তালে তার এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে বিশেষভাবে সাহায্য করেছেন। পাশাপাশি, ভারতীয় রাজনীতিতে দেশের হয়ে কাজ করতে চায় সে।
আরও পড়ুন ঃ তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের অভিনয়ে ছাপ রাখতে বিশেষ নাট্য কর্মশালা
রাজনৈতিক দিক থেকে একটা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে জনসেবায় নিজেকে নিযুক্ত করতে চায়। এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামের ভবিষ্যত প্রজন্ম যেন সব রকম ভাবে সুযোগ সুবিধা পেতে পারে এটাই তার জীবনের শ্রেষ্ঠ চাওয়া।
তাঁর মা মাহাবুবা বিবি বলেন, “ছোটবেলা থেকেই ওর একটাই ইচ্ছে ছিল। বিজ্ঞানী হওয়ার পাশাপাশি, একটা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে জনসেবায় নিজেকে নিযুক্ত করতে চায়। অনেক পরিশ্রমের ফল পেয়েছে। যতটা পেরেছি ওর পাশে থাকার চেষ্টা করেছি আমরা পুরো পরিবার। ছেলের সাফল্যে আজ আমরা খুবই গর্বিত। আমরা সকলেই খুব খুশি।”
আরও পড়ুন ঃ বাবা পেশায় দিনমজুর! ছেলের বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন সফল! ভাবা অ্যাটোমিকে গবেষণা করবে কৌস্তভ
প্রসঙ্গত, আবদুলের স্কুলজীবন কেটেছে নিজস্ব জেলায়। ২০১৫ সালে সে কুমারগঞ্জ ব্লকের আঙ্গিনা বড়োই হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন। ২০১৭ সালে বালুরঘাট ললিত মোহন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সফল হওয়ার পর ডিগ্রি অর্জনের জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এরপর থেকে গবেষণা নিয়ে পড়াশুনা শুরু হয় তার।
ইতিমধ্যেই আমেরিকার পাঁচ পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিবেশ নিয়ে গবেষণা করার সুযোগ পেয়েছে। স্বামী বিবেকানন্দের স্মৃতিধন্য শিকাগোতে গবেষণার জন্য ডাক পেয়েছে আবদুল। জানা গিয়েছে, মাসে ২ লক্ষ টাকা ভাতা পাওয়ার প্রতিশ্রুতি মিলেছে। ২৩ বছর বয়সী এই তরুণের সাফল্যে উচ্ছাসিত পরিবার সহ গ্রামবাসীরা।
সুস্মিতা গোস্বামী