মন্দিরের প্রতিষ্ঠা: কোচবিহার জেলার এই অন্যতম প্রাচীন মন্দিরটি কবে স্থাপিত সেটা সঠিক জানা যায়নি। তবে বিভিন্ন তথ্যসূত্র অনুয়ায়ী ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দের অনেক আগে থেকেই এই মন্দিরটির অস্তিত্ব ছিল। যতদূর জানা যায় এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন মহারাজা নরেন্দ্র নারায়ণের জ্যেষ্ঠ রাণী মহারানী নিস্তারিণী দেবী। তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকেই তিনি এটিকে নির্মাণ করেছিলেন।
advertisement
মন্দিরের ঠিকানা: মদনমোহন বাড়ি থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই মন্দিরটি রাজমাতা দীঘির উত্তরে অবস্থিত। নিউ কোচবিহার রেল স্টেশন থেকে এটি প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত।
মন্দিরের দেব-দেবী: এই মন্দির প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই এখানে পূজিত হয়ে আসছেন সত্যভামা রাধারমণ এবং দেবী তারা কালি।
মন্দির খোলা এবং বন্ধের সময়: মন্দির সকাল সাড়ে ৯-টার সময় খুলে দেওয়া হয় ভক্তদের উদ্দ্যেশ্যে। আর মন্দির বন্ধ করা হয় সন্ধে আরতির পর ৮ টার সময়।
মন্দিরের পূজোর সময়: এই মন্দিরে দিনে তিন বার পুজো করা হয়। সকালে ১০ টার মধ্যে দেবতাদের আরতী করা হয়। তারপর দুপুর ১২টা থেকে সাড়ে ১২ টার মধ্যে ভোগ নিবেদন করা হয় ভগবানকে। তারপর আবার বিকেল সাড়ে ৭টার সময় সন্ধ্যে আরতী করা হয়।
মন্দিরের অন্যান্য কিছু বৈশিষ্ট্য: মন্দিরটি দক্ষিণ দিকে মুখ করে অবস্থান করছে। এই একতলা মন্দিরটির নির্মাণের মাঝখানে একটি গম্বুজ রয়েছে। এছাড়া এই মন্দিরে রয়েছে মোট তিনটি কক্ষ। রাজ আমলে রাজমাতার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এই মন্দিরটি প্রায় ১৬৫ বছরের পুরোনো রাজ আমলের ইতিহাসের কথা বর্ণনা করে।
এখানে যেকোন যানবাহনের দ্বারা আসা সম্ভব। এবং এই মন্দিরে ঠিক সামনেই রয়েছে রাজমাতা দিঘি। দীঘিটিও রাজ আমলে খনন করা হয়েছিল।
এই মন্দিরের নিজস্ব কোন ওয়েবসাইট নেই তবে দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড এর ওয়েবসাইটের লিঙ্কে গিয়ে জানতে পারবেন এই মন্দির সম্পর্কে - http://coochbehar.gov.in/For_DTB/DTB/HTMfiles/DTB_Temples2.html#rajmata
মন্দিরের পূজোর নিয়মাবলী: এখানে অনলাইন কোন পূজোর ব্যবস্থা এখনও পর্যন্ত চালু করা হয়নি। তবে এখানে পূজো দেওয়ার নিয়ম হল। ভোগ নিবেদনের যাবতীয় সামগ্রী আপনাকে নিয়ে আসতে হবে মন্দিরে। তারপর মন্দিরের কুপন টিকিট কেটে নিয়ে তা মন্দির এর লোকের কাছে দিয়ে দিতে হবে। তারই আপনার ভোগ নিবেদন করে আপনাকে প্রসাদ বিতরণ করবে। মন্দিরে দানের ক্ষেত্রে কোনরকম বিশেষ নিয়ম নেই। নিজের সাধ্য অনুযায়ী দান করা সম্ভব। এছাড়া এখানে অন্য আর তেমন কোন বিশেষ নিয়ম নেই মন্দিরের।
মন্দিরের সব থেকে বড় উৎসব: এখানে দোল পূর্নিমার দিন বড় পুজো করা হয়। এছাড়াও রটন্তি কালী পুজো এখানে প্রচলিত আছে। এছাড়া দিপান্বিতা কালী পুজোরসময় বিশেষ পুজো করা হয় রাতে।
সার্থক পন্ডিত