কোচবিহারের দিনহাটার সাহেবগঞ্জ। একদিকে ভারত, ওপারে ঢিল ছোড়া দূরত্বেই বাংলাদেশ। এই সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় দাঁড়িয়ে আছে ছিন্নমস্তা মায়ের মন্দির। প্রতি বছর কৌশিকী অমাবস্যার রাতে এখানে আয়োজিত হয় বিশেষ পূজা। সেই ঐতিহ্য মেনে অনুষ্ঠিত হল ছিন্নমস্তা মায়ের পুজো, আর সেই পুজো ঘিরে হাজার হাজার ভক্ত ভিড় জমালেন সীমান্ত শহরে।সাহেবগঞ্জ সৎকার সমিতির তত্ত্বাবধানে দীর্ঘ বহু বছরেরও বেশি সময় ধরে এই পুজো অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
advertisement
স্থানীয়দের বিশ্বাস, মা ছিন্নমস্তার পূজো যেমন তাঁদের মনের আশা পূর্ণ করে, তেমনই সমৃদ্ধি আর শান্তির আশীর্বাদও দেয়। অনেকের কাছে এই পুজোর মাহাত্ম্য তারাপীঠের তারা পূজোর সমান। তাই তো জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, অসম থেকে শুরু করে কলকাতা পর্যন্ত বিভিন্ন জেলা থেকে ভক্তরা ছুটে আসেন সাহেবগঞ্জে।এই রাতে কাঁটাতারের ওপারের গেটও খোলা থাকে সারারাত। সীমান্তে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার মানুষ একসঙ্গে আরাধনা করেন মা ছিন্নমস্তার। ভক্তদের ভিড়ে জমজমাট হয়ে ওঠে পুরো সাহেবগঞ্জ গ্রাম।
অস্থায়ী দোকান, ভক্তদের মেলা, ঢাকের বাদ্য—সব মিলিয়ে যেন উৎসবের আবহ।পুজোতে আসা এক ভক্ত বলেন, “প্রতি বছরই এখানে আসি। মায়ের কাছে মানত করলে তা পূর্ণ হয়—এটাই আমাদের বিশ্বাস।” অন্যদিকে স্থানীয় এক প্রবীণ জানান, ছোটবেলা থেকেই কৌশিকী অমাবস্যার রাতে এই পুজো দেখছেন তিনি, আর এত মানুষের মিলনমেলা তাঁকে নতুন করে আবেগে ভরিয়ে তোলে।সীমান্তের কোলঘেঁষা এই মন্দিরে কৌশিকী অমাবস্যার ছিন্নমস্তা পুজো এখন শুধু ধর্মীয় নয়, এক সামাজিক মিলনক্ষেত্রও হয়ে উঠেছে। ভক্তির সঙ্গে মিলেছে আবেগ আর ঐতিহ্যের শক্ত বাঁধন।
Surajit Dey