ফসিল পার্কটি ইলামবাজারের আমখই এলাকায় অবস্থিত। বাংলার রাজ্যপাল ও কলকাতা হাইকোর্টের ছাড়পত্রের পরই 'বায়ো ডাইভারসিটি হেরিটেজ সাইট' হিসেবে এটিকে ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে এখনও পর্যন্ত গবেষকরা ১৬৫ টি ছোট-বড় বহু প্রাচীন উদ্ভিদ জীবাশ্ম খুঁজে পেয়েছেন।
বীরভূমের ইলামবাজারের চৌপাহাড়ি জঙ্গলের ভিতর আদিবাসী অধ্যুষিত আমখই গ্রাম। ২০১৫ সালে এখানে পুকুর খননের সময় স্থানীয় আদিবাসীরা বেশকিছু প্রস্তরীভূত কাঠ খুঁজে পান। যা আসলে উদ্ভিদ জীবাশ্ম। পরে ২০১৬ সালে সরকারের উদ্যোগে এখানে গড়ে ওঠে রাজ্যের প্রথম ও একমাত্র জীবাশ্ম উদ্যান৷
advertisement
আরও পড়ুন: ৭ দিন ধরে গান মেলার আসর বর্ধমানে, কলকাতার শিল্পীদের পাশে গাইবেন জেলার প্রতিভারাও
ভূ-বিজ্ঞানীদের মতে, ইলামবাজার এলাকা ছোটনাগপুর মালভূমির মধ্যে অবস্থিত৷ ক্রিটেশিয়াস যুগে এখানে বৃহৎ এলাকাজুড়ে উথালপাতাল ভূমিকম্প হয়। ফলে একসঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকার উদ্ভিদ ভূগর্ভে চলে যায়৷ এরপর উপরের স্তরের চাপ ও নিচের স্তরের তাপের ফলে চাপা পড়ে যাওয়া উদ্ভিদগুলি ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক নিয়মেই কার্বনে পরিণত হতে শুরু করে৷ এর মধ্যে শিলাস্তরের খনিজ পদার্থ মিশে এমনই বহু উদ্ভিদ জীবাশ্মে পরিণত হয়। এইসব উদ্ভিদের মূল গড়ন একই থাকলেও তা কাঠ থেকে শিলায় পরিণত হয়ে যায়। কমপক্ষে ১০ হাজার বছরের প্রাচীন না হলে তাকে জীবাশ্ম হিসেবে ধরা হয় না। কিন্তু, ইলামবাজারের এই উদ্ভিদ জীবাশ্মগুলি কমপক্ষে দেড় থেকে দুই কোটি বছরের প্রাচীন ও আকারে বৃহৎ।
এই বিরল ধরনের উদ্ভিদ জীবাশ্ম উদ্ধার হওয়াতেই উদ্যানটিকে 'বায়োডাইভারসিটি হেরিটেজ' ঘোষণা করেছে পরিবেশ দফতর। এই উদ্যানের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বিষয়টি জোরদার করার জন্য পশ্চিমবঙ্গ জীববৈচিত্র্য আইন ২০০৫-এর ২০ ধারা ও উপধারা-২ অনুযায়ী এটিকে ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে৷ এই প্রসঙ্গে বোলপুরের মহকুমাশাসক অয়ন নাথ বলেন, সদ্য এই সংক্রান্ত কাগজ আমাদের হাতে এসেছে৷ এটা খুবই খুশির খবর। জেলার মানুষের কাছে গর্বের বিষয়।
শুভদীপ পাল