বোলপুর পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মকরমপুরের বাসিন্দা ছিলেন অষ্টম দলুই (৪০)। এদিন ভোর ৪ টেয় বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। বোলপুর নেতাজি বাজারে চায়ের দোকান চালিয়েই স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে সংসার চলত। বড় মেয়ে মৌসুমি দলুই পারুলডাঙা শিক্ষানিকেতন আশ্রম বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। উচ্চমাধ্যমিকে তাঁর পরীক্ষা কেন্দ্র বোলপুর শৈলবালা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। এদিন, বাবার মৃতদেহ পড়ে। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিজন৷ কিন্তু, দুঃস্থ বাবার স্বপ্ন ছিল মেয়ে যেন ভাল করে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়, ফল ভাল হয়৷ তাই শোক উপেক্ষা করে নিজেকে শক্ত করে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছায় মৌসুমি। সকলের সঙ্গে বসে ইংরাজি পরীক্ষা দেয় সে৷
advertisement
আরও পড়ুন- শনিবার নিজ রাশিতেই প্রবেশ করতে চলেছেন শনিদেব! এই ৪ রাশির ভাগ্য হবে আলোর মতো উজ্জ্বল
আরও পড়ুন- বিমান চালানোর সময় পানীয়-গুজিয়া খেয়ে বিপাকে দুই পাইলট ! আপাতত সাসপেন্ড
অন্য দিকে, ভূবনডাঙার শুকনগর শ্মশানে শেষকৃত্যে জন্য নিয়ে যাওয়া হয় দেহ৷ শ্মশানে দেহ নামিয়ে পরিজন-প্রতিবেশীরা অপেক্ষা করতে থাকে মৌসুমির৷ বাড়ির বড় মেয়ে সে৷ তাই বাবার মুখাগ্নি তাকেই করতে হবে৷ পরীক্ষা শেষে শ্মশানে এসে বাবার মুখাগ্নি করে মৌসুমি। এমনই করুণ দৃশ্যের সাক্ষী থাকল বোলপুর৷ এখনও উচ্চমাধ্যমিকের আরও ৪টে পরীক্ষা বাকি৷ সেগুলিও একই ভাবে দেবে মৌসুমি।
সে জানায়, "এর আগেও বাবার দু'বার স্টোক হয়েছিল। তৃতীয় বারে বাবা মারা গেল৷ বাবা চাইত আমি যাতে ভালো করে পরীক্ষা দিই। তাই পরীক্ষা দিলাম, পরীক্ষা ভালো হয়েছে।"
মৌসুমির কাকা সুভাষ দলুই বলেন, "পড়াশোনা আগে৷ তাই বাবার মৃতদেহ রেখেই সে পরীক্ষা দিতে গিয়েছে। খুব মর্মান্তিক। আমাকে বলল কাকা কী করব৷ আমরা সবাই পরীক্ষা দিতে পাঠালাম। যে যাবার সে তো চলে গিয়েছে, আর ফিরবে না৷ পড়াশোনা করুক মেয়ে সেই ইচ্ছে ছিল দাদার।"