বাঁকুড়ার দ্বারকেশ্বর নদীর তীরবর্তী অন্যতম প্রাচীন জনপদ কেঞ্জাকুড়া। একদিকে যেমন রয়েছে বিখ্যাত কাঁসার শিল্প সম্ভার অপরদিকে রয়েছে রাঢ় বাংলার বিভিন্ন লোকসংস্কৃতি চর্চার অন্যতম স্থান বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়া। বহু প্রাচীনকাল থেকেই এই এলাকায় বিশ্বকর্মা ও ভাদু পূজা বিখ্যাত। আর এখানের ভাদুপূজা এবং বিশ্বকর্মা পূজা উপলক্ষে বছরের পর বছর প্রজন্ম ধরে পূর্বপুরুষদের দেখানো পথ অনুযায়ী কেঞ্জাকুড়ার মিষ্টান্ন শিল্পীরা গড়ে তোলেন বিরাট আকারের বিশেষ জিলিপি। এক একটি জিলাপির ওজন ৫০০ গ্রাম থেকে শুরু করে প্রায় দু কিলো পর্যন্ত। বাংলার ভাদ্র মাসের ২৭ তারিখ থেকে শুরু করে আশ্বিন মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত এই জাম্বো জিলিপি প্রস্তুত করা হয়। এখানে জিলিপি বিক্রি করা হয় ওজন দরে। এই জাম্বো জিলিপি গুলি দেড়শো টাকা কিলো হিসাবে বিক্রি করা হয়।
advertisement
আরও পড়ুন: ভাইরাল গ্রামের খুদে শিশুদের ফুটবল খেলার ভিডিও! আগ্রহ বাড়াতে, সাহায্যের হাত মালদহ পুলিশের!
চালগুড়ি ফেটে বিরি বেসনের খামি করে এরপর ছিদ্রযুক্ত বিশেষ ধরনের একটি কাপড়ের থুপি করে হাতের পাক দিয়ে ঘুরিয়ে প্যাঁচ দিয়ে তেল ভর্তি গরম কড়াইয়ে ভেজে সেটিকে চিনির রসে ডুবিয়ে তৈরি করা হয় বিশাল আকারের এই জাম্বো জিলিপি। তবে একটা সময় এই কেঞ্জাকুড়া গ্রামের মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলত কে কত বড় আয়তনের জিলিপি তৈরি করতে পারে। সময় পাল্টেছে পাল্টেছে জিলেপির আয়তনও। একটা সময় ছিল এক একটি জিলিপি তিন থেকে চার কেজি ওজন পর্যন্ত হত এখন সেই আয়তন কমে দেড় থেকে দুই কিলো এসে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বকর্মা ও ভাদু পুজো দিন নতুন কুটুম এবং আত্মীয়দের উপহার দিতে এই জাম্বো জিলিপি নিতে বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে মানুষ ভিড় জমান এই এলাকায়। বিশাল এই জিলিপি রাজ্য ছাড়িয়ে পাড়ি দেয় ভিন রাজ্যেও।
জয়জীবন গোস্বামী