

কোনও ভালো গান শুনে বা অনেক সময় প্রেমের মানুষের সঙ্গে থাকলে, দারুণ মুহূর্ত নেশার মতো লাগে অনেকের। আবার ভালো কোনও জায়গায় গেলেও নেশার মতো ঘোর ধরে যেতে পারে। কিন্তু ঘরে বসে বিনা কারণেই নেশা হয়ে গেলে তা অবশ্যই স্বাভাবিক বিষয় নয়। তবে, এটা অস্বাভাবিকও নয়, বলছেন চিকিৎসকরা।


মদ্যপান না করেও নেশা হতে পারে। দেখে মনে হতেই পারে নেশা করেছেন। কিন্তু না, ব্যক্তিটি হয় তো কখনওই মদ্যপান করেননি। এই সমস্যাকে বলা হয় অটো-ব্রিউয়ারি সিনড্রোম (Auto-Brewery Syndrome) বা ABS। যা রয়েছে ৬২ বছরের নিক কার্সনের। তিনি মদ্যপান না করলেও নেশায় ডুবে যান। সামান্য কেক খেয়েও তাঁর নেশা হয়ে যায়।


কী এই অটো-ব্রিউয়ারি সিনড্রোম? চিকিৎসকরা বলছেন, কোনও ব্যক্তি কিছু খেলে তার থেকে কার্বোহাইড্রেট শরীরে পৌঁছালে সেই কার্বোহাইড্রেটের সঙ্গে শরীরের অভ্যন্তরীণ জীবাণুগুলি বিক্রিয়া করে। যার ফলে যে ইথানল তৈরি হয়, তা ক্ষুদ্রান্ত শোষণ করে। এবং রক্তে অ্যালকোহলের মাত্রা বেড়ে যায়।


এই সমস্যা শুধুই যে নিকের রয়েছে তা নয়, এই সমস্যা অনেকেরই থাকতে পারে। বিশেষ করে যাদের শরীরে আগে থেকে কোনও ক্রনিক ডিজিজ রয়েছে, যেমন ডায়াবেটিস বা এই ধরনের কোনও সমস্যা আগে থেকে থাকার ফলে ABS-এর সমস্যা দেখা দিতে পারে।


এ ক্ষেত্রে বহু সময় ধরে অ্যান্টি-বায়োটিক খাওয়া, অতিরিক্ত কার্বোহাইট্রেড-যুক্ত খাবার খেলেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। ল্যাডবাইবেল-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, নিক লন্ডনে থাকেন এবং তাঁর নিজের একটি ক্লিনিং এর ব্যবসা রয়েছে। সেই সংক্রান্ত কাজের জেরেই ২০ বছর আগে তাঁর ABS ধরা পড়ে।


কী ভাবে ধরা পড়ল তাঁর এই রোগ? তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, একদিন একটি বাড়িতে কাজ করার সময় হঠাৎই তাঁর অস্বস্তি লাগে এবং তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে বাড়ি ফিরে তাঁর সব কিছু গুলিয়ে যেতে থাকে। এবং শরীর খারাপ লাগতে শুরু করে। কিন্তু সেই সময়ে এই রোগ ধরা পড়েনি।


পরে তিনি তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ব্রিটিশ কমেডি সিরিজ ডক মার্টিন দেখার সময় ABS সম্পর্কে জানতে পারেন। এই শোতে ABS নিয়ে একটি অনুষ্ঠান হয়। নিক জানিয়েছেন, তিনি ABS নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন যথাসাধ্য। কেক কম খান, কার্বোহাইট্রেড-যুক্ত খাবার কম খান। এমনকি কিটো ডায়েটও করেন। তিনি বলেন, আমি যে কোনও মুহূর্তে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারি। ফলে এটা খুবই চাপের বিষয়।