#বারাসাত: দীর্ঘদিন পর অবশেষে খুলেছে স্কুলের দরজা। এখন থেকে নিয়মিত স্কুলে যাবে পড়ুয়ারা। নিয়মিত ক্লাস হবে। টিফিনের সময় সহপাঠীদের সঙ্গে খুনসুটিও হবে নিয়মিত। নিয়মিত বাজবে ছুটির ঘণ্টাও। কিন্তু তার কোনওটাই আর হবে না কচুরিওয়ালার ইংরেজি স্কুলে। কারণ আর কোনও দিনও খুলবে না কচুরিওয়ালার স্কুল।
ইংরেজিটা শিখতেই হবে। না হলে পিছিয়ে পড়বে বাংলার নতুন প্রজন্ম। কিন্তু গোড়ায় ইংরেজি শেখাতে হবে সরল ভাবে যাতে সহজেই আয়ত্ত করা যায়। এমনটাই মনে করেন উত্তর ২৪ পরগণা জেলার কদম্বগাছি এলাকার বাসিন্দা কানাই সাহা। ট্রেনে কচুরি বিক্রি করে সংসার চলতো কানাই সাহার। নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী একদিন নেমেই পড়লেন। লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য ২০০৭ সালে নিজের দু-কাঠা জমিতেই সঞ্চিত অর্থ দিয়ে কোনওরকমে একটি স্কুল তৈরি করেন। কম খরচে এলাকার গরিব শিশুদের পড়ানো হতো স্কুলে। স্কুলের খরচ চালানোর জন্য আরও বেশি করে পরিশ্রম করতে লাগলেন।
আরও পড়ুন: দলের নির্দেশ অমান্য করে নির্দল প্রার্থী, কালনায় ২ নেতাকে বহিষ্কার তৃণমূলের
সকালে কচুরি বিক্রি দুপুরে স্কুল। খুব আড়ম্বর না থাকলেও এ টুকুই শান্তি ছিল যে, বাচ্চাদের শেখানো যাচ্ছে। বিশেষ করে ইংরেজিটা। বেশ কয়েকবছর ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই শুরু হয়ে যায় বিশ্বব্যাপী করোনার দাপট। দেশজুড়ে শুরু হয়ে যায় লকডাউন। বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন। একদিকে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার দায় অন্যদিকে রোজগার বন্ধ। কানাই সাহা জানান, 'নিজের যা কিছু ছিল সব দিয়ে সবাইকে বেতন শোধ করে স্কুলটা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হলাম। নতুন করে স্কুল খোলার আর কোমরের জোরও ছিল না। সঙ্গে লাল ফিতের ফাঁস তো আছেই। সেই স্কুল বাড়িটাকেও ভাড়ায় দিয়ে দিয়েছি। আর নিজে পাড়ায় পাড়ায় কচুরি বিক্রি করি।'
আরও পড়ুন: পরনে জোড়া ফুলের শাড়ি, হাতে লক্ষ্মীর ভান্ডার! বাড়ি বাড়ি ভোটে প্রচারে 'লক্ষ্মী'
করোনা আবহে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে বিদ্যালয়গুলি খুলতে শুরু করেছে। গত ৩১ জানুয়ারি অষ্টম শ্রেণি থেকে এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক থেকে বিদ্যালয় খোলার ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য। কিন্তু কচুরিওয়ালার ইংরেজি স্কুল আর খুলবে না। তবে কেউ স্কুল চালাতে চাইলে তিনি সাহায্য করবেন বলে জানিয়েছেন কচুরিওয়ালা।
Ujjal Roy
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Barasat, Coroanvirus