হোম /খবর /দক্ষিণবঙ্গ /
অজানা কারণে এলাকা জুড়ে হলুদ বৃষ্টি, তীব্র আতঙ্কে এলাকাবাসী

অজানা কারণে এলাকা জুড়ে হলুদ বৃষ্টি, তীব্র আতঙ্কে এলাকাবাসী, নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হলো দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ দফতরে

বায়ু দূষণের জেরেই এমন ঘটনা মত বিজ্ঞানীদের | এলাকায় গুজব রুখতে নজরদারি প্রশাসনের

  • Last Updated :
  • Share this:

#হাওড়া: এলাকা জুড়ে হলুদ বৃষ্টি, আর তার জেরে জনজীবনে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে বাগনান এলাকায় । মানুষজন ঘর ছেড়ে বাইরে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন। খবর পেয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেই বৃষ্টির নমুনা সংগ্রহ করে পরিবেশ দপ্তরে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার। বাগনান-১ পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত পাতিনান, কাজীপাড়া, মণ্ডলপাড়া, সাবসিট, শিটপাড়া, মাইতিপাড়া প্রভৃতি এলাকার বাসিন্দারা এলাকা জুড়ে গাছের পাতা থেকে শুরু করে টিনের চাল, রোদে শুকোতে দেওয়া জামাকাপড় প্রভৃতিতে হলুদ রঙের ছোট ছোট ছিটে পড়ে থাকতে দেখেন। তা প্রথমে জলীয় পদার্থের আকারে থাকলেও পরে এই পদার্থ শুকিয়ে গিয়ে গুঁড়ো হলুদের মতো হয়ে যাচ্ছে।

প্রথমে বিষয়টিকে এলাকাবাসী ততটা গুরুত্ব না দিলেও শুক্রবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটায় এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়ায়। এই হলুদ পদার্থ দেখে বিভিন্ন ধরণের গুজবের দাবানল এতটাই ব্যাপ্ত হয়েছে যে এলাকার মানুষ খোলা জায়গায় রান্না করাও বন্ধ করে দিয়েছেন। ছোট ছেলে-মেয়েদের ঘরের বাইরে পর্যন্ত বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। লক্ষ্মী মান্না, স্থানীয় এক গৃহবধূ জানান গত দু'দিন ধরে এই ঘটনা ঘটে চলায় তাঁরা অত্যন্ত আতঙ্কিত। তাঁরা অবিলম্বে এই বিষয়ে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ দাবি করেন।  বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে  বাগনান-১ বিডিও সত্যজিৎ বিশ্বাস ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই অজানা পদার্থের নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা করেন। এবং স্থানীয়দের আতংকিত না হওয়ার পরামর্শ দেন | হলুদ  রঙের ওই অজানা পদার্থটির নমুনা সংগ্রহ করে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ পাঠানো হচ্ছে বলে বিডিও সত্যজিৎ বিশ্বাস জানান।

পঞ্চায়েত সমিতি ও ব্লক প্রশাসন বিষয়টির উপরে নজর রেখেছে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ অসুস্থ হয়নি। এটা সম্পূর্ণ ভাবে একটা প্রাকৃতিক ঘটনা বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। তবে ওই যৌগটি পরীক্ষাগারে পরীক্ষার পরেই বিষয়টি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যাবে তিনি জানান। উদ্ভীদ বিজ্ঞানী বসন্ত সিংয়ের দাবি এলাকায় বায়ু দূষণের জেরেই এই ধরণের ঘটনা ঘটছে | এটি এক ধরণের অ্যাসিড ,  এই অ্যাসিড বৃষ্টি পরিবেশের অনেক স্থানেই হয়ে থাকে মূলত যেই এলাকায় বায়ু দূষণের মাত্রা অনেক বেশী সেই এলাকায় এই ধরণের বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে | তিনি আরো জানান এই মূলত বায়ুতে নাইট্রিক অক্সাইড থাকলে তা অক্সিজেন ও জলের সংস্পর্শে এলে নাইট্রাস অ্যাসিড (HNO2) তৈরী হয়, এবং সেটি বৃষ্টির আকারে এলাকায় বর্ষিত হয় |

এই অ্যাসিড বৃষ্টির কারণ হিসাবে সবথেকে গুরুত্ব হচ্ছে এলাকায় বা আশপাশে প্রায় ৫-১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো চামড়ার ফ্যাক্টরি বা কোনো ভার্টিলাইসার ইন্ডাস্ট্রি থাকলে এই ধরণের নাইট্রেট অক্সাইড বায়ুতে বিরাজ করে | এই ধরণের বৃষ্টিতে মূলত উদ্ভিদ ও পশু পাখিদের ওপর বড়ো প্রভাব ফেলে , মানুষের জীবনে প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও চর্মরোগের সমস্যা দেখা  যায় | তবে এই ধরণের বৃষ্টি নিয়ে অযথা আতঙ্কের কিছু না হলেও পরিবেশের ওপর তার দূষণ নিয়ে সজাগ হাহাকার পরামর্শ দিচ্ছে বসন্ত বাবু | প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে এই এলাকাগুলিতে নজরদারি রাখা হচ্ছে যাতে এই প্রাকৃতিক বিষয় নিয়ে কোনো রকম গুজব ও আতঙ্ক না ছড়ানো হয়, সোস্যাল মিডিয়ার ওপরেও নজরদারি রাখা হচ্ছে |

Debasish Chakraborty

Published by:Elina Datta
First published:

Tags: Acid Rain, Mysterious yellow rain, Pollution