হোম /খবর /দক্ষিণবঙ্গ /
'সঠিক কাগজ' নেই, করোনা আক্রান্তকে ফেরালো কোভিড হাসপাতাল! মৃত্যু মহিলার

'সঠিক কাগজ' নেই, করোনা আক্রান্তকে ফেরালো কোভিড হাসপাতাল! মৃত্যু মহিলার

কোভিড হাসপাতালে পৌঁছলে সেখানে রোগী ভর্তি নেওয়া হয়নি। বলা হয়, এস আর এফ আই ডি নেই। তাই রোগী ভর্তি করা যাবে না। তাঁরা ফের রোগী নিয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ফিরে আসেন ভোর চারটের সময়। তারপর শুরু হয় নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করার কাজ।

আরও পড়ুন...
  • Last Updated :
  • Share this:

#বর্ধমান: কাগজ ঠিক নেই বলে রোগী ফেরালো কোভিড হাসপাতাল!ভোর থেকে সেই কাগজ ঠিক করাতে দুপুর গড়াল বর্ধমান মেডিক্যালে। তার মাঝেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন করোনা আক্রান্ত মহিলা। রাতভর দৌড়াদৌড়ির পর মৃত্যু হল করোনা আক্রান্ত মহিলার। চিকিৎসার গাফিলতিতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, ওই রোগী সংকটজনক অবস্থায় এসেছিলেন। সাধ্যমতো চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি।

কাগজপত্রে ভুল রয়েছে জানিয়ে করোনা হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় ওই রোগীকে। ফের কাগজপত্র তৈরি হওয়ার মাঝেই মারা যান রোগী।  ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। রোগীর চিকিৎসা না করে কেন কাগজপত্রের ত্রুটি আঁকড়ে থাকল কোভিড হাসপাতাল প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও।

সোমবার রাত দশটা নাগাদ বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বর্ধমান শহরের তেলমাড়ুই পাড়ার বছর পঁয়ত্রিশের এক মহিলাকে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। জরুরি বিভাগে দেখানোর পর তাঁকে  নিউ সারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করিয়ে তাঁকে ওল্ড সারি ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় তাঁর করোনা  পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এরপর তাঁকে দু নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে বামচাঁদাইপুরে  কোভিড হাসপাতালে রেফার করা হয়। দীর্ঘ অপেক্ষার পর রাত দুটো নাগাদ  রোগীর পরিবারের হাতে কাগজপত্র দেওয়া হয়। অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করে রাত তিনটে সময় ওই মহিলাকে কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

আরও পড়ুন চূড়ান্ত অসাবধানতায় বাড়ছে করোনার গ্রাফ! ৬ মাসেও হুঁশ ফেরেনি শিলিগুড়ির! 

কোভিড হাসপাতালে পৌঁছলে সেখানে রোগী ভর্তি নেওয়া হয়নি। বলা হয়, এস আর এফ আই ডি নেই। তাই রোগী ভর্তি করা যাবে না। তাঁরা ফের রোগী নিয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ  হাসপাতালে ফিরে আসেন ভোর চারটের সময়। তারপর শুরু হয় নতুন করে  কাগজপত্র তৈরি করার কাজ। রোগীকে এই সময় ওল্ড সারি ওয়ার্ডে রাখা হয়। কাগজপত্র তৈরি হওয়ার আগেই বেলা বারোটা নাগাদ ওই মহিলা মারা যান।

এই ঘটনার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগীর পরিজনরা। নিউ বিল্ডিংয়ের ওল্ড সারি ওয়ার্ডের চেয়ার টেবিল উল্টে দেওয়া হয়। বর্ধমান হাসপাতালের পুলিশ কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। মৃতার আত্মীয়দের দাবি, হাসপাতালের গাফিলতিতেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। কেন সঠিক কাগজ দেওয়া হল না বা পরবর্তী সময়ে দুপুর গড়িয়ে গেলেও কেন কাগজ দেওয়া হল না সে প্রশ্ন উঠছে। মৃতার ছেলে সাহিল খান বলেন, সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত কাগজপত্রের ফাঁসে আটকে কোভিড হাসপাতালে মাকে  ভর্তিই  করা গেল না। অবহেলায় মা মারা গেলেন। মৃতার স্বামী ফিরোজ খান বলেন, ভোরে রোগীকে না ফিরিয়ে ভর্তি নিতে পারত কোভিড হাসপাতাল। কাগজ সকালেও এনে দেওয়া যেত। ভোর চারটে থেকে দুপুর বারোটা পর্যন্ত কেন আই ডি দিতে পারল না হাসপাতাল সে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

এব্যাপারে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেপুটি সুপার কুনালকান্তি দে বলেন, ওই রোগীর অবস্থা সংকটজনক ছিল। করোনা পজিটিভ হওয়ায় ওই রোগীকে কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। ফিরে আসার পরও চিকিৎসকরা চেষ্টা চালান তাঁরা। কিন্তু তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। কাগজপত্র সম্পর্কিত সমস্যা থাকার কথা নয়। তবু রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Published by:Pooja Basu
First published:

Tags: Coronavirus, South bengal news