আয়লার ধাক্কা এতদিনে সামলে সবে শুরু হয়েছিল চাষ, আমফানে ফের নোনাজলের তলায় কৃষিজমি, মাথায় হাত হিঙ্গলগঞ্জের কৃষকদের

Last Updated:

" মহাজনের কাছ থেকে চাষের জন্য মোটা ঋণে টাকা ধার নিয়েছিলাম । কিন্তু এখন জমিগুলোই নোনা জলে শেষ হয়ে গেল।’’

#হিঙ্গলগঞ্জ: একের পরে এক গ্রাম জলের তলায়।কেটে গেছে পাঁচটা দিন। এখনো ওদের আতঙ্ক কাটেনি। নতুন করে বাঁচার উদ্যমী মানসিকতা হারিয়ে ফেলেছে। কারণটা বুধবারের বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় আমফান। যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই তছনছ হয়ে গেছে বুধবারের এই ঘূর্ণিঝড়ে। হিঙ্গলগঞ্জ এর এমনই ছবি উঠে এসেছে। গ্রাম জলের তলায় যাওয়ার পাশাপাশি নদীর বাঁধ ভেঙে কৃষিজমি ও এখন জলের তলায়। আর তাই মাথায় হাত হিঙ্গলগঞ্জ কৃষকদের। ক্রমশই নোনা জলের পরিমাণ বেড়েই চলেছে হিঙ্গলগঞ্জ একাধিক কৃষিজমিগুলোতে। স্বভাবতই কৃষকদের চোখে মুখে এখন একটাই প্রশ্ন কিভাবে ফলবে ফসল?
হাসনাবাদ থেকে হিঙ্গলগঞ্জ এর দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার।যেতে কমপক্ষে সময় লাগে এক ঘন্টা। তবে অন্যান্য দিনের যাওয়া আর এদিনের এই যাওয়ার মধ্যে অনেকটাই ফারাক ছিল। কারণটা অবশ্য আমফানের তাণ্ডবে একের পর এক গাছ নেতিয়ে পড়ে রয়েছে হাসনাবাদ থেকে হিঙ্গলগঞ্জ যাওয়ার রাস্তায়। সমানতালে পড়ে রয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি গুলো। তাই যেতে অনেকটাই সমস্যা থাকলেও শেষমেষ পৌঁছানো গেল হিঙ্গলগঞ্জ। গত বুধবারে এই বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় উত্তর ২৪ পরগনার যে কয়েকটি অঞ্চলে প্রভাব ফেলেছে তার মধ্যে অন্যতম এই সীমান্তবর্তী অঞ্চল হিঙ্গলগঞ্জ। নদীর বাঁধ ভেঙে একের পর এক গ্রাম জলে ভেসে যাচ্ছে। এলাকাতে পৌঁছানো মাত্রই গ্রামবাসীরা ঘিরে ধরে অভিযোগ করেন "বাড়িগুলো গুলো সব জলের তলায়।একের পর এক ইটভাটা নদীর বাঁধ গুলোকে দুর্বল করে ফেলেছে। ত্রাণ জুটলেও তা পর্যাপ্ত জুটছে না। কি করে বাঁচবো আমরা জানি না।"
advertisement
যতই হিঙ্গলগঞ্জ এর ভেতরে ঢোকা হচ্ছে ততই যেন ধ্বংসলীলার মর্মান্তিক ছবি উঠে আসছে। সীমান্তবর্তী এলাকার এই অঞ্চলের মানুষ রা আবার কৃষি কাজের সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন। একবারে যেমন নদী রয়েছে তেমনি রাস্তার ওপারে রয়েছে একাধিক কৃষিজমি। কোন কোন কৃষি জমি দু-ফসলি আবার কোন কৃষিজমি তিন ফসলি পর্যন্ত রয়েছে বলে জানাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু সেই কৃষিজমির ভবিষ্যৎ নিয়েই এবার আশঙ্কায় হিঙ্গলগঞ্জের কৃষকরা।
advertisement
advertisement
একের পর এক কৃষি জমিতে নদীর নোনা জল ঢুকে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট করছে। এই সময় জমিতে আমন ধানের প্রক্রিয়া শুরু করতো কৃষকরা। কিন্তু জমিতে নোনা জল ঢুকে তার সব কাজই নষ্ট করে দিল। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা এক কৃষক বলছেন " মহাজনের কাছ থেকে মোটা ঋণে টাকা ধার নিয়েছিলাম চাষের জন্য। কিন্তু এখন জমিগুলোই নোনা জলে শেষ হয়ে গেল। সরকার পাশে না দাঁড়ালে কি ভাবে বাঁচবো আমরা জানি না।"
advertisement
গত শুক্রবারই হিঙ্গলগঞ্জের ওপর দিয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি,মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন হেলিকপ্টারে যেতে যেতে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজ্যকে এক হাজার কোটি টাকা প্যাকেজ দিয়েছে। আর সেই আশাতেই এখন বুক বাঁধছে গোটা হিঙ্গলগঞ্জের কৃষকরা।"জমি তো চলে গেছে সরকার যদি আর্থিক সহায়তা করে অন্তত আমাদের জীবনটা বেঁচে যাবে"। এমনই বলছেন হিঙ্গলগঞ্জের এক কৃষক। আর তাই ত্রাণ, পানীয় জলের হাহাকারের মধ্যেও এখন কৃষকরা নতুন ভাবে বাঁচার রসদ খুঁজছেন। কবে মাথা তুলতে পারবে হিঙ্গলগঞ্জ কৃষকরা তা জানে না তারাও। শুধু একটাই কথা তাদের চোখে-মুখে জমি গেল কিন্তু টাকা শোধ না দিতে পেরে যাতে নিজেদের জীবন না চলে যায়।
advertisement
হিঙ্গলগঞ্জ থেকে সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়
view comments
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
আয়লার ধাক্কা এতদিনে সামলে সবে শুরু হয়েছিল চাষ, আমফানে ফের নোনাজলের তলায় কৃষিজমি, মাথায় হাত হিঙ্গলগঞ্জের কৃষকদের
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement