#কলকাতা: লকডাউন, আমফান সব বিপদের মুশকিল আসান হয়ে দাঁড়াবে ইলিশ। ভরসা ছিল এমনটাই। মৎস্য বিশারদরা তেমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। বাংলার বাজারে এবার বাড়বাড়ন্ত থাকবে ইলিশের। কিন্তু কোথায় কী! এক বুক আশা নিয়ে জুনের ১৫ তারিখের আশেপাশে সমুদ্রে ট্রলার ভাসিয়েছিলেন কাকদ্বীপ, ডায়মন্ড হারবার, ফ্রেজারগঞ্জের মৎস্যজীবীরা। ফিরে এসেছেন নিরাশ হয়ে।
কোথায় ইলিশ! এখনও দেখা নেই মাছের রাজার। ইলিশের আশায় বঙ্গোপসাগরের ভেতরে বাঘের চড় পর্যন্ত ট্রলার নিয়ে পৌছে গিয়েছিলেন মৎস্যজীবীরা। জাল ফেলে ইলিশের অপেক্ষায় থেকেছেন। দেখা মেলেনি ইলিশের। কাঁকড়া, চিংড়ি, পমফ্রেট, ভোলা আর লটে মাছে টলার ভরে হতাশ হয়ে ফিরে আসতে হয়েছে। বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে ট্রলার মালিকদেরও। পাঁচটি ট্রলারের মালিক কাকদ্বীপের আদিত্য বিশ্বাস বলছিলেন,"ইলিশের অনুকূল পরিবেশ ছিল এবার। পূবালী হাওয়াও ছিল। কিন্তু তাতেও বাংলাদেশ বা মায়ানমারের দিক থেকে মাছ আসেনি। খালি হাতে ফিরতে হয়েছে।"
ইলিশের আশায় জুনের মাঝামাঝি সাগরের পথে ভেসে ছিল কাকদ্বীপের প্রায় হাজার দু’য়েক ট্রলার। ডিজেলের দাম বেড়েছে। লকডাউনের কারণে বরফের দাম আকাশছোঁয়া। এরওপর আবার প্রতিটি ট্রলারে ১৬ থেকে ১৮ জন মৎসজীবীর খরচ। সব মিলিয়ে সমুদ্রে চলার পথে যাতায়াত খরচ দাঁড়িয়েছে ট্রিপ পিছু তিন লাখের ওপরে। কিন্তু ইলিশ না পাওয়ায় বিশাল ক্ষতির সামনে পড়েছেন ট্রলার মালিকরা। কাকদ্বীপ বাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে শত্রুঘ্ন গিরি বলছিলেন,"উল্টো রথ গেলে যদি কিছু হয়! আটটা ট্রলারের দাদন নিয়ে বসে আছি। ইলিশ না উঠলে সব শেষ।"
শত্রুঘ্ন গিরি বা আদিত্য বিশ্বাসরা তো প্রতীকী। কাকদ্বীপ, ফ্রেজারগঞ্জ, ডায়মন্ড হারবারের মৎস্য ব্যবসায়ীদের মনের কথা এখন এটাই। লকডাউন কিংবা আমফানের জোড়া ধাক্কায় সব হারিয়ে ইলিশের মুখাপেক্ষী হয়েছিলেন গ্রাম বাংলার হাজার হাজার মৎস্যজীবী পরিবার। কিন্তু এখনও যা পরিস্থিতি, তাতে মাছের রাজা কবে দেখা দেবে, সেটাই যে অনিশ্চিত! জুন মাস শেষ হতে চলল। মৎস্যজীবীদের প্রতীক্ষার চোখ এখন উল্টো রথে! যদি ইলিশ আসে!
PARADIP GHOSH
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।