একচালার কাগজের দুর্গা! সপ্তম শ্রেণির ছাত্রের চোখধাঁধানো হাতের কাজ, ছোট্ট অরিজিতের শিল্প থেকে চোখ ফেরানো মুশকিল

Last Updated:

Paper Durga Idol: কাগজ, শোলা, কার্ডবোর্ড, আর্ট পেপার সহ কিছু সাধারণ সামগ্রী দিয়ে পাঁচ ফুট উচ্চতার এক অপূর্ব দুর্গা মূর্তি। শান্তিপুর মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া অরিজিৎ সাহা এই মূর্তি বানিয়েছে

+
অরিজিৎ

অরিজিৎ সাহার হাতে তৈরি কাগজের দুর্গা প্রতিমা

শান্তিপুর, নদিয়া, মৈনাক দেবনাথঃ সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়ার হাতে যেন জাদু! শান্তিপুরের বাসিন্দা অরিজিৎ সাহা এই দুর্গাপুজোতেও কাগজ, শোলা, কার্ডবোর্ড, আর্ট পেপার সহ কিছু সাধারণ সামগ্রী দিয়ে বানিয়ে ফেলেছে পাঁচ ফুট উচ্চতার এক অপূর্ব দুর্গা মূর্তি। এই অনন্য মূর্তি তৈরি করে সে শান্তিপুরবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া অরিজিৎ শান্তিপুর মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলের ছাত্র।
ছোটবেলা থেকেই মৃৎশিল্পীদের মূর্তি গড়ার কাজ দেখত অরিজিৎ। তখন থেকেই তাঁর মনে জন্মায় এক কৌতূহল। প্রশ্ন জাগে, ‘এত পরিশ্রম করে মাটির মূর্তি বানানো যায়, তাহলে আমি কি নিজের মতো সহজ এবং হালকা কিছু দিয়ে মূর্তি বানাতে পারি না?’ এই ভাবনা থেকেই খুদের যাত্রা শুরু।
আরও পড়ুনঃ  পুরুলিয়ার নৃত্য কাঁপাবে বিদেশের মাটি! দুর্গাপুজোয় জাপান পাড়ি দিচ্ছেন নাটুয়া শিল্পীরা, কারণ জানলে গর্ব হবে
ক্লাস ওয়ানে পড়ার সময়েই প্রথম ঠাকুর বানানোর চেষ্টা করে অরিজিৎ। তখন শুধু কাগজ আর পেনসিলেই দেবী দুর্গার অবয়ব আঁকত সে। এরপর সময়ের সঙ্গে নিজেকে দক্ষ এক কাগজশিল্পী হিসেবে গড়ে তুলেছে। এবারের দুর্গা মূর্তিটি সে এক মাসের মধ্যে বানিয়েছে। কাগজ, পিচ বোর্ড, শোলা ও বিভিন্ন রঙিন আর্ট পেপার দিয়ে সম্পূর্ণ মূর্তিটি বানানো হয়েছে।
advertisement
advertisement
কাঠের কাঠামোর পরিবর্তে শোলা ও বাঁশের কঞ্চি ব্যবহার করেছে অরিজিৎ। কার্ডবোর্ডে মূর্তির নিচের পাটাতন তৈরি হয়েছে। সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়ার হাতে তৈরি এই মূর্তি দেখতে যেমন চমৎকার, তেমনই অনেকটা হালকা ও পরিবেশবান্ধব। মূর্তি বানানোর সব উপকরণ সে নিজেই সংগ্রহ করে। স্থানীয় বাজারে সবকিছু পাওয়া যায় না বলে খুদে শিল্পীকে কৃষ্ণনগর যেতে হয়।
advertisement
অরিজিতের কথায়, ‘মায়ের মূর্তি নিজে বানানো, নিজে সাজানো আর নিজে পুজো করার আনন্দই আলাদা’। শুধু মূর্তি গড়াই নয়, মূর্তির অলংকরণেও সে নিজস্ব কল্পনা মিশিয়ে দেয়। এই বছর মা-কে সাজাতে কলকাতার খান্না থেকে কাতান বেনারসি কিনে এনেছে। প্রতিটি অলংকার, সাজসজ্জা- সবকিছুতেই তাঁর পরিশ্রম ও সৃজনশীলতার ছাপ স্পষ্ট।
অরিজিৎ জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এই শিল্পকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে চায়। তাঁর লক্ষ্য, একটি নামী আর্ট কলেজে পড়াশোনা করা এবং নিজের দক্ষতাকে আরও পরিণত করে তোলা। পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে সে কাগজ দিয়ে বিভিন্ন ধরণের আর্ট তৈরি করে। সেগুলি তাঁর বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীদের মধ্যে বহুবার প্রশংসিত হয়েছে।
advertisement
অরিজিতের মা মৌসুমী সাহা জানান, ওঁকে আমরা কোনও কিছুতে বাধা দিইনি। পাঁচ দিনই ও পুজো করবে। যতটা সম্ভব আমরা চেষ্টা করব। ছোটবেলা থেকেই দেখতাম ও কাগজ দিয়ে জিনিসপত্র বানাতে খুব ভালোবাসে। প্রথম দিকে আটকালেও যখন দেখি সত্যিই ধীরে ধীরে ওঁর শিল্পের দক্ষতা বাড়ছে, তারপর থেকে আর আটকাই না। ওঁর যেটা ইচ্ছে সেটাই করতে বলেছি। এই বছর তুলনামূলক একটু বড় মূর্তি বানিয়ে ফেলেছে। ওঁর খুব ইচ্ছে ছিল এই মূর্তিটি বানানোর। আমাদেরও খুব ভাললাগে, আমরা ভীষণ আনন্দিত। প্রতিবছর দুর্গাপুজোর সময় এইভাবেই নিজের হাতে ঠাকুর বানায় এবং ঘরের মধ্যেই অল্প পরিসরে মাকে পুজো করে।
advertisement
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
পুজোর শেষে একটি ছোট্ট ভ্যানে করে প্রতিমা নিয়ে গিয়ে বিসর্জন হয়। বহু মানুষ তাঁর তৈরি ঠাকুর দেখতে আসে, এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বলে জানায় অরিজিৎ। এই কিশোর শিল্পীর শিল্পনৈপুণ্য ও নিষ্ঠা ফের একবার মনে করিয়ে দেয়, প্রতিভা বয়সের অপেক্ষা করে না। শুধু দরকার অনুপ্রেরণা, অধ্যবসায় ও ভালবাসা- তাহলেই হাতের মুঠোয় ধরা দেয় সাফল্য। শান্তিপুরের এই খুদে শিল্পীর হাত ধরে ফের যেন প্রমাণ হল, শিল্পের প্রকৃত রূপ কল্পনা ও সাধনা।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
একচালার কাগজের দুর্গা! সপ্তম শ্রেণির ছাত্রের চোখধাঁধানো হাতের কাজ, ছোট্ট অরিজিতের শিল্প থেকে চোখ ফেরানো মুশকিল
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement