কান পাতলেই শোনা যায় ইতিহাসের ফিসফিস...! হাজারদুয়ারি তো অনেক ঘুরলেন! এবার ঘুরে আসুন মুর্শিদাবাদের 'কর্ণসুবর্ণ'

Last Updated:

Murshidabad Tourism: মুর্শিদাবাদ জেলাতে অবস্হিত শশাঙ্কের রাজধানী কর্ণসুবর্ণতে সেইভাবে পর্যটকদের দেখা মেলে না। যার কারণে আক্ষেপের সুর সকলের গলায়। তবে পর্যটকরা এলে আর্থিক উন্নয়ন হবে এলাকার। 

+
কর্ণসুবর্ণ

কর্ণসুবর্ণ

মুর্শিদাবাদ: বর্তমানে শীতের মরশুমে পর্যটকদের ভিড় হাজারদুয়ারীতে। কিন্তু পর্যটকদের দেখা নেই শশাঙ্কের রাজধানী কর্ণসুবর্ণতে। বর্তমানে হাড় কাঁপানো ঠান্ডাতে কাঁপছে বঙ্গ। তবে এই শীতের মরশুমে অনেকেই নবাবের জেলাতে আসেন ঘুরতে। ইতিহাসের স্মৃতি নিতে হাজারদুয়ারী সহ আনাচে কানাচ আকর্ষণীয়। কিন্তু এই মুর্শিদাবাদ জেলাতেই আছে বাংলার সম্রাট শশাঙ্কের রাজধানী কর্ণসুবর্ণ।
সেইভাবে পর্যটকদের দেখা মেলে না এই প্রাচীন শহরে। মুর্শিদাবাদ, এই একটি নাম জড়িত রয়েছে ইতিহাসের পরতে পরতে। রয়েছে বহু নিদর্শন। সুবে বাংলার রাজধানী হিসেবে নয়, বৌদ্ধ যুগেও এই স্থানের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। একসময়ের রক্তমৃত্তিকা মহাবিহারের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে এই জেলায়।
advertisement
advertisement
খৃষ্টীয় সপ্তম শতকে গৌড়ের তথা বাংলার স্বাধীন রাজা শশাঙ্কের রাজধানী ছিল এই জেলার কর্ণসুবর্ণতে। হিউয়েন সাঙ-এর লেখাতেও কর্ণসুবর্ণের উল্লেখ পাওয়া যায়। ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত বাংলার প্রথম নৃপতি। খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকে বঙ্গদেশের ছোটো ছোটো রাজ্যকে একত্রিত করে তিনি গড়ে তুলেছিলেন গৌড় রাজ্য। বাংলার প্রথম সম্রাট ছিলেন শশাঙ্ক।
৫৯০ থেকে ৬২৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তিনি রাজ্যত্ব করেছিলেন। আর সেই শশাঙ্কের রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ। অর্থাৎ, কর্ণসুবর্ণ হয়ে উঠেছিল স্বাধীন ঐক্যবদ্ধ বাংলার প্রথম রাজধানী। এখনকার মুর্শিদাবাদ জেলার কানসোনা গ্রামই প্রাচীন যুগের কর্ণসুবর্ণ।
advertisement
জানা যায়, কর্ণসুবর্ণ হয়ে উঠেছিল স্বাধীন ঐক্যবদ্ধ বাংলার প্রথম রাজধানী। এখনকার মুর্শিদাবাদ জেলার কানসোনা গ্রামই প্রাচীন যুগের কর্ণসুবর্ণ গ্রাম। স্বাধীন বাংলার প্রথম রাজধানী যেমন মুর্শিদাবাদে, তেমনি, বাংলার শেষ স্বাধীন নবাবের রাজধানীও ছিল এই মুর্শিদাবাদ জেলা।
advertisement
বাংলার নবাবরা অবশ্য খাতায় কলমে মুঘলদের অধীনেই ছিলেন। তবে বাস্তবে স্বাধীনভাবেই প্রশাসনিক কাজকর্ম চালাতেন তাঁরা। চৈনিক পরিব্রাজক হিউয়েন-সাং কর্ণসুবর্ণ নগরীকে ‘কিলোনসুফলন’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। তাঁর বর্ণনা অনুযায়ী, এখানে জনবসতি ছিল যথেষ্ট। বাসিন্দারা প্রচুর ধনের অধিকারী ছিলেন।
কর্ণসুবর্ণের পাশেই ছিল বিখ্যাত রক্তমৃত্তিকা মহাবিহার। এছাড়া নগরের ভিতর বেশ কিছু বৌদ্ধ মঠ ছিল। যাঁরা বৌদ্ধ নন, তাঁদেরও ছিল অনেক মন্দির। এখানকার শিক্ষা এবং সংস্কৃতি চর্চার প্রশংসা করেছেন হিউএন-সাং। আরও বেশ কিছু লিপি এবং গ্রন্থে কর্ণসুবর্ণের অল্পবিস্তর বর্ণনা আছে। মুর্শিদাবাদের রাঙামাটি গ্রামের রাজবাড়িডাঙায় খননকার্য চালিয়ে এক প্রাচীন বৌদ্ধ মঠের ধ্বংসস্তূপ পাওয়া গেছে। এটাই ছিল রক্তমৃত্তিকা মহাবিহার। তার কাছেই প্রতাপপুর গ্রামের রাক্ষসীডাঙা ঢিবিতে খননকার্য চালিয়েও পাওয়া গিয়েছে প্রাচীন ইটের ভাঙাচোরা স্থাপত্য।
advertisement
গুপ্তযুগের পর এবং পাল যুগের আগে কর্ণসুবর্ণ হয়ে উঠেছিল পূর্বভারতের রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু। শশাঙ্কের রাজধানীকে দখল করতে চেয়েছিলেন থানেশ্বরের সম্রাট হর্ষবর্ধন, কামরূপের রাজা ভাস্করবর্মন এবং আরও বেশ কিছু শাসক। শশাঙ্কের মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে মানবদেব কয়েক মাস গৌড় শাসন করেছিলেন। যদিও সেই একদা শশাঙ্কের রাজধানী এই কর্ণসুবর্ণ গ্রাম আজ পরিচর্যার অভাবে ধ্বংস হতে চলেছে। মুর্শিদাবাদ জেলার একাধিক স্হান পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠলেও, কর্ণসুবর্ণ গড়ে ওঠেনি কোন পর্যটন কেন্দ্র, ফলে আক্ষেপ রয়ে গিয়েছে জেলাবাসীর মধ্যে আজও।
advertisement
কৌশিক অধিকারী
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
কান পাতলেই শোনা যায় ইতিহাসের ফিসফিস...! হাজারদুয়ারি তো অনেক ঘুরলেন! এবার ঘুরে আসুন মুর্শিদাবাদের 'কর্ণসুবর্ণ'
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement