বোনের স্মৃতিতে ২৯ বছর ধরে জলপাইয়ের আঁটি মুখে এই দাদা, জীবন্ত ভাইফোঁটার স্মৃতি, শুনলে চমকে উঠবেন!
- Published by:Sanjukta Sarkar
- hyperlocal
- Reported by:Rudra Narayan Roy
Last Updated:
Bhaiphonta: ভাইফোঁটার দিন আসলেই মন ভার হয়ে ওঠে অশোকনগর কচুয়া মোড় এলাকার বাসিন্দা জয়দেব বিশ্বাসের। প্রায় ২৯ বছর আগে ভাই ফোঁটার দিনই, বোনের কথা রাখতে দাদা জয়দেব মুখে নিয়েছিলেন একটি জলপাইয়ের আঁটি।
উত্তর ২৪ পরগনা, রুদ্র নারায়ণ রায়: ভাইফোঁটার দিন কথা দিয়েছিলেন বোনকে। আর তারপর থেকেই বোনের স্মৃতিতে ২৯ বছর ধরে মুখে রেখে দিয়েছেন জলপাইয়ের আঁটি। শুনতে অবাক লাগলেও, এটাই সত্যি। মুখে আঁটি নিয়েই, তিনি সারেন খাওয়া দাওয়া থেকে ঘুমোন সবকিছুই। বোন না থাকলেও, বোনের স্মৃতি আজ এভাবেই আগলে রেখেছেন এক দাদা
advertisement
ভাইফোঁটার দিন আসলেই মন ভার হয়ে ওঠে অশোকনগর কচুয়া মোড় এলাকার বাসিন্দা জয়দেব বিশ্বাসের। প্রায় ২৯ বছর আগে ভাই ফোঁটার দিনই, বোনের কথা রাখতে দাদা জয়দেব মুখে নিয়েছিলেন একটি জলপাইয়ের আঁটি। ১৩ বছর আগে সেই বোন মারা গিয়েছেন। বোনের স্মৃতি ধরে রাখতে দাদা আজও মুখের মধ্যে রেখে দিয়েছেন ওই জলপাইয়ের আঁটি
advertisement
বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার প্রাক্তন কর্মী বছর ৭০ জয়দেব বিশ্বাস। নিজের বোন না থাকায়, ভাইফোঁটার দিন প্রতিবেশী তরুণী অগ্নিবীণা দেবী জয়দেব বাবুকে প্রতিবছর ফোঁটা দিতেন। সম্পর্ক যেন ছিল আপন ভাই বোনের মতোই। জয়দেব বাবুও তাকে নিজের বোনের মতোই স্নেহ করতেন। ভাইফোঁটা দিন ফোঁটা দেওয়ার পাশাপাশি নানান মেনু রান্না করতেন বোন। জানালেন, নিজের হাতে মাছ, মাংস, ডাল সহ বিভিন্ন খাবার। তবে পছন্দের মেনুতে অবশ্যই থাকত জলপাইয়ের চাটনি
advertisement
১৯৯৬ সালে ভাইফোঁটার শেষ পাতে ছিল চাটনি। জয়দেব বাবু যখন হাত চেটেপুটে খাচ্ছেন, তখনই বোন একপ্রকার কৌতূহল বসতই, দাদাকে বলেন আমার হাতের জলপাইয়ের চাটনি যখন এতই পছন্দের, এই জলপাইয়ের আঁটিটি তিনি কতদিন মুখে রেখে দিতে পারবেন! জয়দেব বাবু বলেন, বোনের হাতের জলপাইয়ের চাটনি যখন এত পছন্দ তখন এই জলপাইয়ের বীজ তিনি রেখে দেবেন মুখে। কিন্তু কতদিন!
advertisement
বোনের প্রশ্নের উত্তরে দাদা বলেছিলেন, যতদিন তুই ফেলতে না বলবি। তারপর থেকেই, একদিন দুদিন করে কেটেছে বেশ কয়েকটা ভাইফোঁটা। বোনকে দেওয়া কথা রাখতে দাদা মুখ থেকে ফেলেননি জলপাইয়ের ওই আঁটি। বোন মাঝে মাঝেই দাদার কাছে এসে দেখতে চাইতেন মুখে আছে কিনা ওই বীজটি। এক সময় কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়ে যান জয়দেব বাবু। কিন্তু যেহেতু বোন বিষয়টি নিয়ে উৎসাহ প্রকাশ করে, তাই মুখ থেকে ফেলেন নি ওই বীজটি
advertisement
মুখে জলপাইয়ের আঁটি নিয়েই ৩৬৫ দিন করে পেরিয়ে গিয়েছে অনেক বছর। ২০১২ সালের ২৪ শে জানুয়ারি বোন অগ্নিবীণা আত্মহত্যা করেন। বোনের স্মৃতি ধরে রাখতে আজও মুখে রেখে দিয়েছেন জলপাইয়ের আঁটি। জয়দেব বাবু জানান, বোনের এই স্মৃতি নিয়েই বাঁচতে চাই বাকি জীবনটা। খাওয়া ঘুম দাঁত মাজা দিনে রাতে কোন সময়ই তিনি বীজ বের করেন না মুখ থেকে। প্রথম প্রথম বীজ মুখে রাখার ফলে কেটে যেত মুখের ভেতরে অংশ। তবে এখন অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। বাজার হাট করা থেকে বাইরে বেরোলেই, এলাকার বহু মানুষ তার মুখে রাখা এই বোনের স্মৃতি দেখতে চান প্রায় প্রতিদিনই। দাদাও বোনের স্মৃতি স্বরূপ মুখে রাখা জলপাইয়ের আঁটি দেখাতে দ্বিধাবোধ করেন না বিন্দুমাত্র। ভাইফোঁটার দিন এভাবেই বোনের স্মৃতি আগলে এক দাদা ২৯ বছর ধরে মুখে রেখে দিয়েছেন জলপাইয়ের আঁটি