Toto Driver: কাশ্মীরে পাচার হওয়া থেকে তিন নাবালিকাকে বাঁচিয়ে শিলিগুড়িতে হিরো টোটো চালক খুরশিদ
- Reported by:ANIRBAN ROY
- news18 bangla
- Published by:Ananya Chakraborty
Last Updated:
শিলিগুড়ি বিধান মার্কেট এলাকার অতি সাধারণ টোটো চালক খুরশিদ আলি। তাঁর তৎপরতাতেই পাচারের হাত থেকে রক্ষা পায় ওই তিন নাবালিকা।
শিলিগুড়ি: তিন নাবালিকা যাত্রীর বিপদ টের পেয়ে ইচ্ছে করে ট্রাফিক আইন ভেঙেছিলেন টোটো চালক খুরশিদ আলি। তাঁর লক্ষ্যই ছিল ট্রাফিক আইন ভেঙে পুলিশের নজরে পড়া। যাতে টোটোয় বসে থাকা তিন নাবালিকাকে পাচারের হাত থেকে উদ্ধার করা যায়। এই কাজে ‘স্টার মার্কস’ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন টোটো চালক খুরশিদ। এই কৃতিত্বের জন্য সকলের কাছে এখন হিরোর মর্যাদা পাচ্ছেন তিনি। সেই সঙ্গে তাঁর তৎপরতাতেই নাবালিকা পাচারের ঘটনায় জড়িত লাদাখের দুই মহিলাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।
উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার তিন নাবালিকাকে ভালো করে লেখাপড়া করানো ও খেতে দেওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে সম্প্রতি শিলিগুড়ি নিয়ে এসেছিলেন লাদাখের দুই মহিলা। শিলিগুড়ি থেকে ট্রেনে তাদের জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে গিয়ে পাচার করে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু তাঁদের সেই পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেন শিলিগুড়ি বিধান মার্কেট এলাকার অতি সাধারণ টোটো চালক খুরশিদ আলি। তাঁর তৎপরতাতেই পাচারের হাত থেকে রক্ষা পায় ওই তিন নাবালিকা। পাশাপাশি ধরা পড়ে সিওয়ান চিন্দু ও ইয়াসমিন মালিক নামে অভিজাত বেশভূষায় সজ্জিত দুই মহিলা পাচারকারী। এই ঘটনার পর থেকেই পুলিশের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছে খুরশিদ আলিকে।
advertisement
advertisement
অতি সাধারণ জীবন খুরশিদের। শিলিগুড়ির ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের জ্যোতিনগরে বসবাস। বাড়িতে স্ত্রী, ছেলে, বোন ও মা থাকেন। আধাভাঙা ঘর, ভাঙা টিনের চাল। টোটো চালিয়ে কোনরকমে সংসার চালান। পেটের দায়ে গত পাঁচ বছর ধরে এটাই খুরশিদ আলির পেশা। আর পাঁচটা দিনের মতই সেদিন ভাড়ার জন্য বিধান মার্কেটে অপেক্ষা করছিলেন। সেই সময়ই লাদাখের ওই দুই মহিলা তিন নাবালিকা সহ তাঁর টোটোয় চাপে বসেন। হোটেলে যাবেন বলে জানান। কিন্তু টোটোয় ওঠার পর থেকেই ওই তিন নাবালিকা ক্রমাগত কেঁদে চলে। আর তাতেই সন্দেহ দানা বাঁধে খুরশিদের। তিনি ওই মহিলাদের হিন্দিতে প্রশ্ন করেন, ‘ইয়ে বাচ্চিলোগ ইতনা কিঁউ রোরেহি হ্যায়’। কিন্তু উত্তর আসে, ‘আপকো ক্যায়া? ভাড়া ঠিকঠাক মিল যায়েগা!’ এই শুনে সন্দেহ আরও দৃড় হয়। এরপরই লেন ভেঙে এয়ারভিউ মোড়ের ট্রাফিক পুলিশ গার্ডের সামনে গিয়ে হাজির হন। তারপরই ট্রাফিক সার্জেন্টকে গিয়ে নিজের মনের সন্দেহের কথা খুলে বলেন। আর তাতেই নাবালিকা পাচারের পর্দা ফাঁস হয়।
advertisement
সকলে তাঁকে ধন্য ধন্য করলেও বিষয়টি নিয়ে কিছুটা যেন ভাবলেশহীন খুরশেদ আলি। তিনি বলে, যাত্রীর জন্য দাঁড়িয়ে ছিলাম। ওরা টোটোয় উঠল। কিন্তু মেয়েগুলোর টানা কান্নাকাটিতে আমার সন্দেহ হয়। এরপরই সোজা পুলিশের কাছে নিয়ে যাই। ভালো লাগছে ওদের বাঁচাতে পেরে।
এদিকে ছেলের এই কাজে খুশি মা ফরিজা খাতুন। প্রথমে যখন শিলিগুড়ি থানা থেকে তাঁর কাছে খবর আসে যে তাঁর ছেলে থানায় রয়েছে, তা শুনে ভয়ে তিনি মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন। পরে সবটা শোনার পর তাঁর বুক গর্বে ভরে ওঠে। তিনি বলেন, আমাদের খুব সাধারণ গরিব খেটে খাওয়া পরিবার। শত কষ্টেও নিজের বাচ্চাদের আগলে রাখি। ছেলে এই কাজ করায় খুব ভালো লাগছে।
advertisement
অনির্বাণ রায়
view commentsLocation :
Kolkata,West Bengal
First Published :
May 18, 2023 2:01 PM IST







