#হলদিয়া: ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে মৈত্রী বাণিজ্যের ভিত আরও সুদৃঢ় হল। হলদিয়া বন্দর থেকে নদীপথে এই প্রথম ন্যাপথা রপ্তানি শুরু হল বাংলাদেশে। ভারত-বাংলাদেশ প্রটোকল রুটে প্রায় ২ হাজার টন ন্যাপথা নিয়ে রওনা দিল O T সাংহাই 8(OT Shanghai Eight) নামে একটি বার্জ। এদিন বন্দরের আনুষ্ঠানিকভাবে বার্জ -এর যাত্রা শুরু করলেন হলদিয়া বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান অমল কুমার মেহেরা এবং হলদিয়া ইন্ডিয়ান অয়েলের (I.O.C) এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর পার্থ ঘোষ। হলদিয়া বন্দর ও প্রটোকল রুট ব্যবহার করে ভারতের প্রতিবেশী বাংলাদেশ সহ অন্যান্য দেশগুলির মধ্যে মৈত্রী বাণিজ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে মনে করছে হলদিয়ার শিল্পমহল। হলদিয়া বন্দর ও আইওসি সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিয়ার আই ও সি রিফাইনারি থেকে ১৮ কোটি টাকা মূল্যের ন্যাপথা রপ্তানি করা হয়েছে বাংলাদেশের অ্যাকোয়া রিফাইনারি সংস্থাকে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে নরসিংডি জেলায় শীতলাক্ষ নদীর তীরে আমেরিকান প্রযুক্তিতে গড়ে ওঠা রিফাইনারি সংস্থার প্ল্যান্টে। ইন্দো-বাংলা প্রটোকল রুট দিয়ে বার্জটি প্রথমে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ বন্দরে পৌঁছাবে। সেখান থেকে এই ন্যাপথা যাবে ওই রিফাইনারি সংস্থায়। সম্প্রতি বিদেশ থেকে পেট্রোপণ্য বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বা মঙ্গলা বন্দর থেকে ওই দেশের উত্তরাংশ নিয়ে যেতে বেশি খরচ হয়। তাই বাংলাদেশের খুলনা সহ উত্তর জেলা গুলি হলদিয়া বন্দর থেকে নদী পথে বার্জে পণ্য আমদানীতে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আর এর ফলেই ইন্দো বাংলা প্রটোকল রুটটি ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী বাণিজ্য স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুতে বিভোর? ভারতের এই দীর্ঘতম সেতু ধারেভারে অনেক এগিয়ে! জানলে চমকে উঠবেন!
হলদিয়া বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগে প্রোটকল রুটের কার্যকারিতা দিন দিন বাড়ছে। হলদিয়া বন্দর ও শিল্প সংস্থাগুলির বাড়তি বাণিজ্যের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে এই প্রটোকল রুট। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি এই প্রোটকল রুট দিয়ে বাংলাদেশ হয়ে অসমের পান্ডুতে স্টিলপন্য পরিবহনের সূচনা করেছিলেন কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রী। এই প্রটোকল রুটের গুরুত্ব বাড়িয়ে হলদিয়া বন্দরের রপ্তানি বাড়াতে ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে মাল্টিমোডাল হাব ও জেটি তৈরি করা হয়েছে। প্রটোকল রুট ও অসমের ব্রহ্মপুত্র নদীতে জাতীয় জলপথ ২ ব্যবহার করে উত্তর-পূর্ব ভারতে বিভিন্ন শিল্প সংস্থার মালপত্র আমদানি রপ্তানিতে জোর দিয়েছে কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রক।
আরও পড়ুন: ঝুলছে স্বামী, স্ত্রী'র দেহ পড়ে খাটের উপর, মেমারিতে হাড়হিম কাণ্ড!
হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হলদিয়া বন্দর থেকেই প্রতিবছর ১৯ লক্ষ টন পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি হয়। আইওসি থেকে পেট্রোপণ্য রপ্তানি নিয়মিত শুরু হলে বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানি প্রতিবছর প্রায় ২২ লক্ষ টন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। আই ও সি এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর পার্থ ঘোষ বলেন, 'হলদিয়া থেকে রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে হলদিয়া রিফাইনারি নতুন সম্পর্ক তৈরি হল। ন্যাপথা ছাড়াও বাংলাদেশে হাই স্পিড ডিজেল, হার্নেস অয়েল, সালফার পেটকোক প্রভৃতির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আগামী দিনে এই পণ্যগুলি বার্জে করে বাংলাদেশ রপ্তানির সুযোগ তৈরি হল। এবং আন্তর্দেশীয় ও ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক মৈত্রী ব্যবসা-বাণিজ্য গুরুত্ব বাড়ল। এর ফলে ভারত বাংলাদেশ সহ অন্যান্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির সাথে ভারতের সুসম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আশা করছে শিল্প মহল।
সৈকত শী
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Haldia, India Bangladesh Relation