অন্ধকার দামোদরের পাড়ে একা কাঁদছে কিশোর! উদ্ধারের পর কারণ শুনে চমকে গেল পুলিশ
- Reported by:Saradindu Ghosh
- Published by:Debamoy Ghosh
Last Updated:
ধৃতদের আজ বর্ধমান আদালতে তোলা হয়। সামগ্রিক ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রায়না থানার পুলিশ।
রায়না: ছেলে চঞ্চল। তাতে শান্ত করতে এমন কান্ড করলো বাবা মা তা শুনেই তাজ্জব সকলে।
আশ্রমের সাধুর পরামর্শে সন্ধ্যা নামতেই দামোদরের পাড়ে নির্জন এলাকায় তাকে ছেড়ে দিয়ে এলো বাবা মা ও মামাবাড়ির দাদু। কান্না শুনে এলাকার বাসিন্দারা ওই কিশোরকে উদ্ধার করে। তাকে হুগলির একটি হোমে পাঠিয়েছে পুলিশ।
রাত গভীর হতেই কিশোরের কান্নায় চমকে ওঠেন পূর্ব বর্ধমানের রায়নার শিয়ালি গ্রামের বাসিন্দারা।তাঁরা নদীর পাড় থেকে ওই কিশোরকে গ্রামে নিয়ে এসে পুলিশকে খবর দেন।পুলিশ ওই কিশোরকে উদ্ধার করে জানতে পারে, স্থানীয় একটি আশ্রমের সাধুর কথায় কিশোরকে নদীর পারে ফেলে রেখে চলে গিয়েছিলেন বাবা, মা ও মামার বাড়ির দাদু।এরপরই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে রায়না থানার পুলিশ ওই তিনজনকে বুধবার রাতে গ্রেফতার করে। একই সঙ্গে আশ্রম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও মামলা রুজু করেছে পুলিশ।কিশোরকে শিশুকল্যাণ কমিটির কাছে পেশ করা হলে তারা বাবা-মা এর উপরে আস্থা রাখতে না পেরে হুগলির সিঙ্গুরের একটি হোমে পাঠিয়েছে।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন: যা করেছেন নিজের দায়, জ্যোতিপ্রিয়র গ্রেফতারি নিয়ে বিস্ফোরক কাকলি! কী বললেন তৃণমূল সাংসদ?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছেলেটির বাড়ি নদিয়ার চাকদহে। তার মামার বাড়ি মেমারি থানা এলাকায়। মামার বাড়ির সূত্র ধরেই ছেলেটির পরিজনদের রায়নার শিয়ালি গ্রামের ওই আশ্রমে যাতায়াত ছিল।প্রায় ২০ বছর ধরে শিয়ালিতে আশ্রমটি রয়েছে। তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ওই কিশোর পুলিশকে জানিয়েছে,আশ্রমের সাধুর কথাতেই তার বাবা, মা ও দাদু নদীর পারে তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে গিয়েছিল।
advertisement
কিশোরকে উদ্ধারের সময় পুলিশ জানতে পারে ওই আশ্রমেই কিশোরের মা রয়েছে।সেই মতো পুলিশ ওই আশ্রমে খোঁজ নিতে গেলে বাধা পায়।পুলিশের দাবি, আশ্রমের মহিলা ভক্তরা তাদের দীর্ঘক্ষণ আটকে রেখেছিল। পরে আরও পুলিশ গিয়ে ওই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে রায়না থানায় নিয়ে আসে।পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করে ওই মহিলাকে প্রথমে গ্রেফতার করে।পরে শক্তিগড় থেকে কিশোরের বাবা ও মামার বাড়ির দিকের দাদুকেও গ্রেফতার করে।
advertisement
পুলিশের দাবি,পরে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে কিশোরের মা জানায়,আশ্রমের উপর তাদের অগাধ ‘বিশ্বাস’। বেশ কয়েকবার আশ্রমের জন্যেই তাঁদের ছেলে বিপদের হাত থেকে বেঁচে ফিরেছে।ছেলে দিনের পর দিন চঞ্চল হয়েআশমের উঠছে,তা শোধরানোর জন্যেই তাঁরা নদিয়া থেকে ওই আশ্রমে এসেছিলেন। নদীর পাড়ে ছেলে রাত কাটালে নাকি তার দুষ্টুমি কমে যাবে, সে কথা শুনেই বিশ্বাস ভরে ছেলেকে নদীর পাড়ে রেখে দিয়ে চলে এসেছিলেন।
advertisement
ধৃতদের আজ বর্ধমান আদালতে তোলা হয়। সামগ্রিক ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রায়না থানার পুলিশ।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ওম প্রকাশ সিং বলেন, ‘বাচ্চারা এই বয়সে চঞ্চল হবেই, বাড়াবাড়ি কিছু হলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে তার সমাধানও আছে।কিছু কিছু মানুষ আস্থায় ভর করে এই সব সাধুদের কাছে যায় আর তাদের অন্ধ বিশ্বাসের জন্য এইসব ফেথহুলাররা এই ধরনের ঘটনা ঘটায়।আমাদের এই কুসংস্কার থেকে বের হতে হবে।
advertisement
পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের বর্ধমান শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তা চন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায় জানান, ‘শিশুদের মন সবসময় চঞ্চল প্রকৃতির হয়।অন্ধ বিশ্বাসের কবলে পরে সমস্যা সমাধানের থেকে তা আরও জটিলই হয়।অনেকেই প্রিয়জনকেও হারাতে হয়।আসলে এগুলি একটা মানসিক বিকার।প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।’
view commentsLocation :
Kolkata,West Bengal
First Published :
Nov 02, 2023 8:18 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/পূর্ব বর্ধমান/
অন্ধকার দামোদরের পাড়ে একা কাঁদছে কিশোর! উদ্ধারের পর কারণ শুনে চমকে গেল পুলিশ










