খেলতে খেলতে অসুস্থ ৪ শিশু, ‘ভূতে ধরেছে’ বলে হাসপাতালে না এনে ডাক পড়ল ওঝার, মৃত্যু ২ জনের
- Published by:Elina Datta
- news18 bangla
Last Updated:
৪ শিশুকে "ভূতে ধরেছে"। "ভূত তাড়াতে" ডেকে আনা হয় স্থানীয় ওঝা মহম্মদ রফিককে। তিনি দীর্ঘক্ষণ ওই শিশুদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঝাড়ফুঁক চালাতে থাকেন । এতে বেশ কয়েক ঘণ্টা কেটে যায় । শিশুদের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়।
#মালদহ: ফের কুসংস্কারের বলি ২ শিশু। গাজোলে অসুস্থ ৪ শিশুকে চিকিৎসা না করিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চলে ঝাড়ফুঁক । চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্য়ু হয় ২ শিশুর। মালদহ মেডিকেল কলেজে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি আরও ২ শিশু। মালদহের গাজোল থানার আলাল পঞ্চায়েতের কদমতলী গ্রামের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকাজুড়ে। শিশুদের সময়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তারা বেঁচে যেত বলেই মত চিকিৎসকদের।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার বিকেলে আলাল পঞ্চায়েতের কদমতলী গ্রামে একটি বাঁশবাগানে ওই শিশুরা খেলা করছিল । কিন্তু, সন্ধ্যা নাগাদ বাড়ি ফিরতেই পেটব্যথা , মাথাঘোরা , দৃষ্টিসমস্যার মতো নানা উপসর্গ দেখা দেয় শিশুদের। ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে পড়তে থাকে একের পর এক শিশু। একপরই গ্রামবাসীদের একাংশ দাবি করেন, ৪ শিশুকে "ভূতে ধরেছে"। "ভূত তাড়াতে" ডেকে আনা হয় স্থানীয় ওঝা মহম্মদ রফিককে। তিনি দীর্ঘক্ষণ ওই শিশুদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঝাড়ফুঁক চালাতে থাকেন । এতে বেশ কয়েক ঘণ্টা কেটে যায় । শিশুদের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। শেষে রাত একটা নাগাদ অসুস্থদের মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু রাস্তাতেই মৃত্যু হয় ফিরোজ রহমানের (৭)। বাকি তিন শিশুকে রাত তিনটে নাগাদ মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার সকালে মালদহ মেডিক্যালে মৃত্যু হয় চিকিৎসাধীন সফিকুল আলমের ( ৬) । বাকি দুই শিশু কোহিনুর খাতুন (৫) এবং শাবনুর খাতুন (৩) আশঙ্কাজনক অবস্থায় মালদহ মেডিকেলে ভর্তি রয়েছে। খবর পেয়ে শনিবার সকালে মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুদের দেখতে যান গাজোলের তৃণমূল বিধায়ক দিপালী বিশ্বাস। গ্রামবাসীদের ঝাড়ফুঁকের সিদ্ধান্তে ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিধায়ক।
advertisement
চিকিৎসকদের প্রাথমিক অনুমান, মৃত ২শিশুর খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে মৃত্যু হয়েছে। মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার অমিত কুমার দাঁ বলেন, শিশুদের সময়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তারা বেঁচে যেত। সরকারি ও বেসরকারি স্তরে বারবার প্রচারের পরেও কুসংস্কারের অন্ধকার যে এখনও থেকে গিয়েছে, শুক্রবার গাজোলের ঘটনা ফের একবার তাই প্রমাণ করল। ইতিমধ্যেই মহম্মদ রফিককে আটক করেছে পুলিশ। গ্রামবাসীদের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। মৃত ফিরোজ রহমানের বাবা আব্দুল খাবির বলেন, "ছেলে অসুস্থ হওয়ার পর গ্রামবাসীদের একাংশ জানায়, ওই শিশুদের ভূতে ধরেছে । এরপর গ্রামবাসীরাই ওঝা এনে ঝাড়ফুঁক শুরু করেন। যদিও সেই সময় আমরা কোনওরকম আপত্তি করতে পারিনি ।" অসুস্থ দুই শিশুর আত্মীয় আসিফ আলম বলেন, "আমার দুই ভাগ্নী এখনও চিকিৎসাধীন। আগে উদ্যোগ নিলে বাকিদের হয়তো বাঁচানো যেত। সন্ধ্যার পরে খবর পেয়ে গাড়ি নিয়ে আমি এলাকায় পৌঁছাই। কিন্তু , গ্রামবাসীদের একাংশ অপমান করে তাড়িয়ে দেন। তাঁরা ঐ শিশুদের হাসপাতালে এনে চিকিৎসার পরিবর্তে ওঝার উপর ভরসা রাখেন । এতেই বিপত্তি ঘটে।"
advertisement
advertisement
সেবক দেবশর্মা
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
February 15, 2020 5:11 PM IST