অজানা সংক্রমণের সঙ্কেত, ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে দেশের মাছের আড়তগুলি; খাওয়ার আগে একবার জেনে নিন
- Published by:Ananya Chakraborty
- news18 bangla
Last Updated:
মাছ খাওয়া কতটা সুরক্ষিত? দেখে নেওয়া যাক কী বলছে সমীক্ষা
হিমাচল প্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ-সহ দেশের বেশ কিছু রাজ্যে বার্ড ফ্লু শুরু হয়েছে। মৃত্যু হচ্ছে শয়ে শয়ে পাখির। এই পরিস্থিতিতে চিকেন খাওয়া এড়িয়ে যাচ্ছেন অনেকে। আর এর ফলেই মাছ ও ডিমের প্রতি ঝোঁক বেড়েছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে মাছ খাওয়া কতটা সুরক্ষিত? দেখে নেওয়া যাক কী বলছে সমীক্ষা!
সম্প্রতি এই পরিস্থিতির উপরে নির্ভর করে দেশের ১০টি রাজ্যের ২৪১টি মাছের ফার্মে সমীক্ষা চালানো হয়। সাধারণত মানুষের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে, খাদ্য সুরক্ষার কথা মাথায় এই সমীক্ষা হয়। যাতে দেখা যায়, তামিলনাড়ুতে মাছ যে জলে চাষ করা হয় তার মান অত্যন্ত নিম্ন। পাশাপাশি অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, পুদুচেরির মাছ চাষের জলেরও একই অবস্থা। আর বিহার ও ওড়িশার জলের অবস্থাও ভালো নয়। বিশেষজ্ঞদের কথায়, খুব একটা ভালো পরিস্থিতিতে নেই দেশের মাছের আড়তগুলি। পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বড় কোনও সংক্রমণও দেখা যেতে পারে।
advertisement
বিষাক্ত মাছ
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, দেশের বেশিরভাগ মাছের ফার্মেরই জল দূষিত। লিড ও ক্যাডমিয়ামের পরিমাণ বেশি। যা মাছের শরীরেও প্রবেশ করে এবং তার মাধ্যমে মানুষের শরীরে এটি প্রবেশ করে। এই লিড ও ক্যাডমিয়াম সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে বাচ্চাদের শরীরে ও অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের শরীরে এর ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে।
advertisement
জানা যায়, এর জন্য স্যামন মাছ নরওয়েতে এক সময়ে ব্যান করা হয়েছিল। কিন্তু পরে মাছের ফার্মগুলি নির্দিষ্ট পরিমাণ লিড ও ক্যাডমিয়ামের মাত্রা নিশ্চিত করায় ফের অনুমতি দেওয়া হয়।
advertisement
মাছ নিঃশ্বাস নিতে পারে না
এই সমীক্ষার প্রধান গবেষক কৌশিক রাঘবনের কথায়, বেশিরভাগ ফার্মেই জলে অতিরিক্ত নাইট্রোজেন দিয়ে দেওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়। এতে পুকুরের গভীরে অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না। তাই নিচের অংশে যে মাছ থাকে তারা নিঃশ্বাস না নিতে পেরে মারা যায়। বা তারা উপরে উঠে আসে। এই সমস্যা ফার্মগুলি সাধারণত এড়িয়ে যায়।
advertisement

তাঁর কথায় এর জন্য ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রয়োজন। এই পদ্ধতি শুধুই পরিবেশ ভালো রাখে তাই নয়, মাছের ফার্মগুলিও পরিষ্কার রাখে ও মাছ সুরক্ষিত থাকে। নোংরা জলাশয়ে মাছের পুষ্টিগণ হারিয়ে যায় ও বিষাক্ত জিনিস প্রবেশ করে মাছের মধ্যে।
মাছের ফার্মগুলির সমস্যার পাশাপাশি এতে মানুষেরও কিছু হাত থাকে। যেমন অনেক পুকুরেই যেখানে মাছ চাষ করা হয় সেখানে মানুষ সাবান মাখে, বাসন মাজে। তামিলনাড়ুতে দেখা গিয়েছে, এর ফলে প্রচুর মাছ মারা যায়। পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় দেখা গিয়েছে, মাছের ভেড়ির পাশেই আবর্জনার স্তূপ। এতেও কিন্তু জল দূষিত হয়ে মাছ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
advertisement
এসবের পাশাপাশি ফার্ম বা ভেড়িগুলিতে মাছে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের প্রবণতা নিয়ে কথা বলেছেন রাঘবন। তাঁর কথায়, অ্যান্টিবায়োটিকে থাকা প্রোফাইল্যাকটিক বিরাট ক্ষতি করতে পারে মানুষের শরীরে। সেটাও কিন্তু মাছের মাধ্যমেই আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এ ছাড়াও ফরমালিন ব্যবহারের সমস্যাও রয়েছে।
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, শুধু ফরমালিন ব্যবহারের জন্য গত বছর কেরলে ২০০০ কেজি মাছ নষ্ট করে দেওয়া হয়। দিল্লি বা দেশের অন্যান্য রাজ্যেও মাছে ফরমালিন দেওয়া হয়। এটি বড় সমস্যা।
advertisement
ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের সমস্যা ও রোগভোগ বেড়ে যাওয়া
একাধিক ক্ষেত্রেই ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের তেমন কোনও ব্যবস্থা নেই। ক্রমেই এটি একটি বড়সড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাথায় রাখতে হবে, এই সব বর্জ্য কিন্তু পরিবেশের পক্ষেও অত্যন্ত ক্ষতিকর। সাধারণত অধিকাংশ ফার্ম তাদের বর্জ্য পদার্থগুলি আশেপাশের কোনও জলাশয়ে বা নিকটবর্তী নদীতে ফেলে দেয়। এর জেরে জল দূষণের মাত্রা বাড়ে। সেই জলই আবার কোনও নির্দিষ্ট এলাকার মানুষজন ব্যবহার করেন। এর জেরে নানা রোগ ছড়াতে পারে। একই বিষয় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে রাঘবনের বক্তব্যে।
advertisement
সব মিলিয়ে এক বড়সড় আশঙ্কা দানা বাঁধছে। করোনা সংক্রমণের সময় থেকেই এই পরিস্থিতির ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বার্তা, পোলট্রি, ডেয়ারি থেকে শুরু করে মাছের আড়ত সব ক্ষেত্রেই প্রক্রিয়াকরণে একাধিক ত্রুটি থেকে যাচ্ছে। যা বড় কোনও সংক্রমণ ডেকে আনতে পারে। অবিলম্বে সামগ্রিক ব্যবস্থার সংস্করণ প্রয়োজন। জনস্বাস্থ্য মজবুত করতে ও খাদ্য সুরক্ষার খাতিরে প্রয়োজনে নানা প্রকল্প ও নীতিও রূপায়ন করতে হবে।
দেশের সব লেটেস্ট খবর ( National News in Bengali ) এবং বিদেশের সব খবর ( World News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
January 21, 2021 4:13 PM IST








