বাবা দোকানের কর্মী, মা দর্জি, গণিত ও অর্থনীতি পড়তে বৃত্তি নিয়ে আমেরিকার পথে প্রত্যন্ত গ্রামের কিশোরী

Last Updated:

Success Story: অংশিকার বাবা একটি দোকানে একজন সাধারণ কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন, অন্য দিকে তাঁর মা পেশায় একজন দর্জি

১৮ বছর বয়সি অংশিকা ১০০ শতাংশ স্কলারশিপ নিয়েই পাড়ি জমাচ্ছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের লি ইউনিভার্সিটিতে
১৮ বছর বয়সি অংশিকা ১০০ শতাংশ স্কলারশিপ নিয়েই পাড়ি জমাচ্ছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের লি ইউনিভার্সিটিতে
উত্তরপ্রদেশের প্রত্যন্ত  গ্রামের বাসিন্দা অংশিকা পটেল (Anshika Patel) আমাদের সবার রোল মডেল। কঠোর পরিশ্রমেই যে মানুষ সাফল্য অর্জনে সফল হন তার সেরা উদাহারণ অংশিকা। জৌনপুর জেলার পাকরি গোদাম গ্রামের ১৮ বছর বয়সি অংশিকা ১০০ শতাংশ স্কলারশিপ নিয়েই পাড়ি জমাচ্ছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের লি ইউনিভার্সিটিতে (Lee University)। সেখানেই তিনি অর্থনীতির সঙ্গে গণিত নিয়ে পড়াশোনা করবেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও অংশিতা কাতারের জর্জটাউন ইউনিভার্সিটিতেও (Georgetown University) নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়াও অন্য পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়েও তাঁর নাম ওয়েটিং লিস্টে ছিল।
অংশিতা সম্প্রতি বুন্দেলশহর বিদ্যাজ্ঞান লিডারশিপ অ্যাকাডেমি (VidyaGyan Leadership Academy) থেকে দ্বাদশ শ্রেণীতে ৯৫ শতাংশ পেয়ে স্নাতক হয়েছেন। ভারতীয় অর্থনীতি, মাইক্রোইকোনমিক্স এবং ম্যাক্রো ইকোনমিক্সের উপর তিনি একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীতে তিনি জোর দিয়েছিলেন। দশম শ্রেণীতে তাঁর স্কোর ছিল ৯৮ শতাংশ।
এবারে আসা যাক পরিবারের বিষয়ে। অংশিকার বাবা একটি দোকানে একজন সাধারণ কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন, অন্য দিকে তাঁর মা পেশায় একজন দর্জি। News18-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অংশিকা জানান, “আমার নাম নির্বাচন হওয়ার খবরে আমার শিক্ষক এবং পরিবারের সকলে রোমাঞ্চিত বোধ করছেন। আমিই আমার পুরো পরিবারের মধ্যে প্রথম যে বিদেশে গিয়ে পড়াশোনা করার সৌভাগ্য অর্জন করতে চলেছি। এটা আমার এবং আমার পরিবারের জন্য এক অকল্পনীয় স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো।”
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন : দোষের মধ্যে গেট খুলতে দেরি! নিরাপত্তারক্ষীকে তীব্র গালিগালাজ করে গ্রেফতার মহিলা, ভাইরাল ভিডিও
তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে অংশিকা বলেন যে, ওয়াশিংটন এবং লি ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক হওয়ার পর তিনি একজন ডেটা অ্যানালিস্ট হতে চান। অংশিকার কথায়, ‘এর সঙ্গেই আমার আরও পড়াশোনা করার ইচ্ছে রয়েছে। আমার প্রধান লক্ষ্য হল এনজিও বা সমাজসেবা সংস্থাগুলির সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে আমাদের সমাজের কল্যাণকর কাজে যুক্ত হওয়া। সেখানে আমি আমার সমস্ত শিক্ষাকে কাজে লাগাতে পারব বলেই আশা করছি।‘
advertisement
‘২০১৯ সালে বিদ্যাজ্ঞান আমার কাছে এক সুবর্ণ সুযোগের পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিল। এই প্রোগ্রামের অংশ হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার সুযোগ আমার কাছে ছিল। আমি সেখানকার এমন পদ পছন্দ করেছি যে আমি বিশ্ববিদ্যালয়, কোর্স, ফ্যাকাল্টি এবং ভবিষ্যতের সুযোগ বা ইন্টার্নশিপের জন্যেও খোঁজ শুরু করেছি। এখন আমি অ্যাকাডেমিতে আমার কনসালটেন্টদের সঙ্গে সব কিছু নিয়ে আলোচনা শুরু করেছি। ওঁরাই আমাকে প্রতিটি পদক্ষেপে গাইড করছেন', জানিয়েছেন অংশিকা।
advertisement
তিনি আরও জানিয়েছেন যে, তিনি ইতিমধ্যেই ওয়াশিংটন এবং লি ইউনিভার্সিটির কার্যক্রম ও কোর্স দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। কেন না, সেখানে তাঁর একজন সিনিয়রও রয়েছেন যিনি পড়াশোনা চালাচ্ছেন। অংশিকার কথায়, "সেখানে অর্থনীতি এবং ম্যাথমেটিক্স সংক্রান্ত যে কোর্সগুলি রয়েছে তা বিশ্বমানের পঠন-পাঠনের সুযোগ দেয়’।
আরও পড়ুন :  বাংলা ছবি ছেড়ে কেন ‘লাল সিং চড্ঢা’ ? প্রয়াণের পর কেকে-এর প্রথম জন্মদিন চলে এলেও ট্রোলবিদ্ধ রূপঙ্কর
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আর পাঁচটা সধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করা যেতে পারে। আমেরিকায়, সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি সাধারণ অ্যাপ রয়েছে যেখানে যে কেউ তাদের পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে পারেন। স্কলারশিপে আবেদন করার জন্য একটি কমন স্কলারশিপের ফর্মও রয়েছে। মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলতে গিয়ে অংশিকা জানিয়েছেন, 'প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে আমি মোট তিনটি এসে বা প্রবন্ধ জমা দিয়েছিলাম এবং একটি প্রফিসিয়েন্সি টেস্টও দিয়েছিলাম’। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনও বিশ্ববিদ্যালয় না হলে তিনি অবশ্যই ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁর উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করতেন বলে জানিয়েছেন।
advertisement
ওয়াশিংটন এবং লি ইউনিভার্সিটিতে তাঁর কোর্সটি মূলত অন্ত্রেপ্রেরেনিয়াল ইকোনমিক্সের ওপর আলোকপাত করে। অংশিকা মনে করেন তাঁর মা-ই তাঁর অনুপ্রেরণার মূল উৎস। অংশিকা জানিয়েছেন যে, মা তাঁর কাছে "নারীকেন্দ্রিক উদ্যোক্তার এক অসাধারণ উদাহরণ"। অংশিকার মা গ্রামের মহিলাদের সেলাই শেখানোর মাধ্যমে তাঁদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করেন৷ পারিবারিক স্তরে যে কোনও ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর ইতিবাচক পদক্ষেপও আমাদের সমাজ ও দেশের বৃহত্তর স্তরে এক অসাধারণ পরিবর্তন আনতে পারে বলে মনে করেন অংশিকা। তিনি জানাচ্ছেন, ‘এই বিষয়টিই আমাকে অন্ত্রেপ্রেরেনিয়াল ইকোনমিক্সে বিশেষ আগ্রহ জাগিয়েছে’।
advertisement
অংশিকার শেষ কথা, “আমাদের দেশের অন্যান্য অনেক মেয়ের মতোই আমিও এক সাধারণ পটভূমি থেকেই উঠে এসেছি। আমি সবাইকে জানাতে চাই যে, নিজেদেরকে বিশ্বাস করতে হবে, মনোযোগী হতে হবে এবং নিজের লক্ষ্য ঠিক রেখে এগিয়ে চলতে হবে। নির্ভীক হয়ে তাদের পথে আসা যে কোনও বাধা অতিক্রম করতে হবে’।
বাংলা খবর/ খবর/দেশ/
বাবা দোকানের কর্মী, মা দর্জি, গণিত ও অর্থনীতি পড়তে বৃত্তি নিয়ে আমেরিকার পথে প্রত্যন্ত গ্রামের কিশোরী
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement