ছাপড়া: কোচিং না করিয়ে কি এবার নিজেই মাঠে নেমে পড়বেন? ২০২৪-এ কি নতুন কোনও ভূমিকায় দেখা যাবে দেশের সবথেকে চর্চিত ভোট কুশলীকে? এখনই এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বরং ধোঁয়াশাই রাখছেন পিকে৷ আপাতত গত প্রায় ছ' মাস ধরে বিহারের গ্রামে গ্রামে ঘুরে পদযাত্রা সারছেন তিনি৷ প্রশান্ত কিশোরের পরবর্তী ভূমিকা কী হবে, এই পদযাত্রা এই সেই জল্পনা অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে৷
সেই প্রশ্নের উত্তর জানতেই বিহারের ছাপড়ায় পৌঁছেছিল নিউজ ১৮৷ জন সুরজ যাত্রায় আপাতত এখান আমনৌর গ্রামেই ঘাঁটি গেড়েছেন ভোটগুরু৷ মাঠের মধ্যে তাঁবুতেই দিন কাটছে তাঁর৷
পিকে-র সাজগোছই তাঁর পরিবর্তনের সাক্ষী বহন করছে৷ কর্পোরেট লুক ছেড়ে আপাতত সাদা কুর্তা-পাজামা বেছে নিয়েছেন৷ দৃশ্যতই মাটির কাছাকাছি থেকে আম জনতার আস্থা অর্জন করতে চাইছেন সাম্প্রতিক কালে দেশের সবথেকে সফল ভোট কুশলী৷
আরও পড়ুন: ভোটের মুখে বামে হাওয়া? বাম ছাত্র সংগঠনের সদস্য সংখ্যা আট লক্ষ পেরিয়ে গেল
একান্ত আলাপচারিতায় প্রশান্ত কিশোরের মুখে বিকল্প রাজনৈতিক ব্যবস্থার কথা উঠে এল৷ বিরোধীদের ভূমিকাতেও যে তিনি খুশি নন, তাও স্পষ্ট করে দিলেন পিকে৷ তাঁর মতে, ভারতে বিরোধী শক্তি দুর্বল নয়৷ কিন্তু বিরোধী দলগুলিই নিজেদের লড়াই়কে দুর্বল করে দিচ্ছে৷ স্পষ্টতই বিরোধী অনৈক্যের দিকেই ইঙ্গিত করলেন প্রশান্ত কিশোর৷ একই সঙ্গে দাবি করলেন, কংগ্রেস যদি ভেবে থাকে রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ খারিজ তাঁদের ভোট পেতে সাহায্য করবে, তাহলে ভুল করবে৷ বরং ২০২৪-এর লড়াইয়ে প্রধানমন্ত্রী পদে এখনও নরেন্দ্র মোদিকেই এগিয়ে রাখছেন প্রশান্ত কিশোর৷
কয়েকদিন আগে ভারত জোড়ো যাত্রা করেছেন রাহুল গান্ধি৷ প্রশান্ত কিশোর অবশ্য দাবি করছেন, তাঁর এই পদযাত্রাই প্রকৃত অর্থে বিশুদ্ধ পদযাত্রা৷ মানুষের মনের তল পেতে, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলতে গ্রামেই দিনের পর দিন পড়ে থাকছেন৷ পিকে-র দাবি, গত ২ অক্টোবর থেকে ছাপড়া জেলার আমনৌর গ্রামের এই তাঁবুতেই দিন কাটছে তাঁর৷ বাড়িতেও ফেরেননি৷ হেঁটে প্রায় ২ হাজার গ্রামে গিয়েছেন৷ প্রশান্তের কথায়, 'এটাই বিশুদ্ধ এবং সৎ পদযাত্রা৷ আমরা কয়েক দিন হেঁটে ছুটি নিয়ে বাড়িতে যাই না৷ কোনও বিরতি নিইনি৷ বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে থেকে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলার চেষ্টা করছি৷'
আরও পড়ুন: ২৪-এর আগে জাতীয় স্তরে মহাজোটের তোড়জোড়, জাতীয় রাজনীতিতে বাড়তে চলেছে বিরোধী ঐক্য
পিকে জানাচ্ছেন, তৃণমূল স্তরের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করাই তাঁর এই পদযাত্রার একমাত্র লক্ষ্য৷ আরও বড় লক্ষ্য, একটি বিকল্প রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা৷
প্রশান্ত দাবি করছেন, গত দশ বছরে রাজনীতির অলিন্দে থেকে তাঁর যা অভিজ্ঞতা, সেগুলোকেই একত্রিত করতে চান তিনি৷ সফল হলে তা দেশে একটি নতুন মডেল তৈরি করবে৷ ভোটগুরুর কথায়, '২০১১ সালে আমি যখন রাজনীতিতে স্ট্র্যাটেজির কথা বলতাম, কেউ বিশ্বাস করত না৷ কিন্তু সেই ভাবনা সফল হয়েছে৷ গত দশ বছরে মানুষ বুঝেছে যে রাজনীতিতে পেশাদাবি সাহায্যের প্রয়োজন আছে৷ ফলে এই নতুন ভাবনাকেও সফল হতে সময় দেওয়া উচিত৷ বিহারের মানুষকেও আমি বলেছি, তাঁরা জানে একটি রাজনৈতিক দল তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করছে৷ তবু তাঁরা সেই দলের পতাকা নিয়েই ঘুরছে৷ মানুষ নিজের সমস্যা জেবনেও সেই সমস্যার পক্ষেই ভোট দিচ্ছে৷ গোটা ভারতের ক্ষেত্রেই একথা প্রযোজ্য৷ আমি মানুষকে বলছি, যদি মনে হয় শিক্ষার প্রসারে ভোট দেওয়া উচিত, তাই করুন৷ পুলওয়ামা কাণ্ড দেখে ভোট দেবেন না৷ পুলওয়ামা, জাত পাতের রাজনীতি, ধর্ম নির্ভর রাজনীতিকে সাহায্য করলে আপনি তার ফলও সেরকমই পাবেন৷ আমি কোনও নেতাকে দোষারোপ করছি না৷ শুধু মানুষের সামনে বিকল্পগুলো রাখছি৷'
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bihar, Prashant Kishor