নয়াদিল্লি: কীভাবে প্রত্যন্ত এলাকায়, অনুন্নত স্থা্নে, গ্রামেগঞ্জে পৌঁছে গিয়েছিল ভ্যাকসিন? রোমহর্ষক সেই কথা উঠে এল তথ্যচিত্রে৷ History TV18-এ শুক্রবার রাত ৮টায় প্রিমিয়ার হয় 'দ্য ভায়াল'- এর। এই প্রথম খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তুলে ধরেন কোভিডের লড়াইয়ের গল্প, কীভবে ভারত কোভিডের বিরুদ্ধে জয়ী হল সেই কথা। ডকুতে দেখা যায় ভ্যাক্সিনের প্রস্তুতকারক সিরাম ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়া-র সিইও আদর পুনাওয়ালা ও ভারত বায়োটেক-এর চেয়ারম্যান ডঃ কৃষ্ণা এল্লা-র সাক্ষাৎকার।
যাত্রাপথ সহজ ছিল না৷ প্রত্যন্ত গ্রামে, রিমোট এলাকায় পৌঁছানোর জন্য টিকা নিয়ে পুনে থেকে ১৫০০ কিলোমিটারের 'যাত্রা' শুরু করা হয়৷ প্রথমে কলকাতার আঞ্চলিক স্টোরেজ সেন্টারে পৌঁছয় টিকা, তারপর যেখান থেকে আইজলে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। ট্রাকের মাধ্যমে লুংলেই পর্যন্ত, একটি গাড়িতে ত্লাবুং পর্যন্ত এবং অবশেষে একটি নৌকার মাধ্যমে নুনসুরি পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়। চ্যালেঞ্জ অবশ্য তখনও শেষ হয়নি। স্বাস্থ্যসেবা কর্মী এবং টিকাদানকারীরা তখন পায়ে হেঁটে রওনা দেন যাতে বিশ্বের একজন গ্রামবাসীও এ থেকে বাদ না পড়েন। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য নাগাল্যান্ড এবং মণিপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য ড্রোন ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) এর একজন বিজ্ঞানী ডাঃ সুমিত আগরওয়াল বলেন, "উদ্দেশ্যটি ছিল যে আমরা যদি এই প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এই ভ্যাকসিনগুলি পৌঁছে দিতে পারি৷, তবে আমরা ভারতের যে কোনও অংশে পৌঁছে দিতে পারি।" প্রথম সারির কর্মী এবং বিজ্ঞানীদের দৃঢ়তা, সেই সঙ্গে মানবজাতিকে বাঁচানোর আকাঙ্ক্ষা ভারতের টিকাদানকে বিশ্বের ইতিহাসে জায়গা করে দিয়েছে।
সালটা ২০২০৷ মানুষ যা দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি হয়েছিল ঠিক সেটাই৷ আছড়ে পড়েছিল করোনা নামের এক মহামারি৷ গোটা বিশ্ব এক লহমায় অন্ধকার দেখেছিল৷ মুখ থুবড়ে পড়েছিল তাবড় তাবড় উন্নত দেশ৷ অজানা এই বিপদের মোকাবিলা কীভাবে করতে হবে বুঝতে পারেনি কেউ৷ ক্রমে বাড়ছিল মৃত্যুর অঙ্ক৷ হাজার-লক্ষ-কোটি৷ মানুষে মানুষে দূরত্ব বাড়ছিল৷ গোটা পৃথিবী অপেক্ষা করছিল কোনও এক সঞ্জীবনী মন্ত্রের৷ কোভিডের থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় ছিল ভ্যাকসিন। কীভাবে রেকর্ড সময়ের মধ্যে ভারত সেই ভ্যাক্সিন প্রস্তুত করল, বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন করল এবং গোটা দেশে সফলভাবে বিতরণ করল, সেই গল্পই বলছে History TV18-এর নতুন ডকুমেন্টারি 'দ্য ভায়াল'।
প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, 'আমরা ভেবেছিলাম কোনও দেশের ভ্যাকসিন তৈরির জন্য আমাদের অপেক্ষা করা উচিত নাকি আমাদের জিনোমিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে একটি ভ্যাকসিন তৈরি করা উচিত। এরপর আমরা বিজ্ঞানীদের নিয়ে একটি টাস্কফোর্স তৈরি করি এবং সিদ্ধান্ত নি যে আমরা আমাদের ভ্যাকসিন তৈরি করব, খরচ যাই হোক না কেন।'
দেশের ১.৩ বিলিয়ন জনসংখ্যাকে অন্তত একটি ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার পাশাপাশি, বিশ্বব্যাপী একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে ভারত। ‘ভ্যাকসিন মৈত্রী’ উদ্যোগে মাধ্যমে ১০০টি দেশে কোভিড-19 ভ্যাকসিনের ২৩২.৪৩ মিলিয়ন ডোজ সরবরাহ করা হয়েছে। ট্রাক, গাড়ি, নৌকা, এমনকি হাঁটাপথ- সঠিকভাবে টিকা পৌঁছে দিতে বাদ যায়নি কোনও কিছুই৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Covid vaccine, ICMR, Narendra Modi, PMO, Serum Institute