আগরতলা: মানিকের হাতেই ত্রিপুরায় বাম কং জোটের ভবিষ্যৎ? ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে বাম - কং আসন সমঝোতার জট কাটাতে শেষ ভরসা সিপিএমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার।
সিপিএম তো বটেই, ত্রিপুরা কংগ্রেসও মনে করছে মানিকের মধ্যস্থতাতেই কাটবে জট। কলকাতায় দলের ২ দিনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ত্রিপুরা নির্বাচনে সফল হতে এই আসন সমঝোতাকে সফল করার উপরেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: 'বিজেপি-কে সাহায্য করতেই ত্রিপুরায় তৃণমূল', প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিকের নিশানায় মমতার দল
ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে বাম - কংগ্রেস হাত ধরাধরি করে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নিলেও, জট পাকিয়েছে আসন নিয়ে। ৬০ আসনের ত্রিপুরা বিধানসভায় সিপিএম- এর কাছে ১৯টি আসন চেয়েছিল কংগ্রেস। শেষমেশ, ১৩টি আসন ছাড়তে রাজি হয় সিপিএম। এ দিকে, আলোচনায় ঐক্যমত না হওয়ায় কংগ্রেস একতরফা ১৭ টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দেয়। আবার, চুক্তি ভেঙে কংগ্রেসকে ছাড়া কিছু আসনে বামেদের প্রার্থী মনোনয়ন জমা করেন। দু' পক্ষের এই জোটভাঙা পদক্ষেপে বেকায়দায় ত্রিপুরায় বাম কংগ্রেস জোটের ভবিষ্যৎ।
জোটের ঘটকালি করা কংগ্রেস নেতা সুদীপ রায় বর্মনের মতে, 'দলের চাহিদা মাথায় রেখেই আমরা প্রার্থী দিয়েছি। আশা করি, সিপিএম বিষয়টা বুঝবে। জোট নিয়ে আপাতত সমস্যা থাকলেও, মনোনয়ন প্রত্যাহারের আগে বিষয়টা মিটে যাবে।' কংগ্রেসের আশিস সাহা আবার জোটের শর্ত ভাঙার বিষয়টি পুরোপুরি হাইকম্যান্ডের উপর চাপিয়েছেন। আশিস বলেন, জোট নিয়ে স্থানীয় ভাবে সমস্যা না মেটায় আমরা বিষয়টা হাইকমান্ডের উপরে ছেড়েছিলাম। যা হয়েছে তা এআইসিসির নির্দেশেই হয়েছে।
জোটের শর্ত লঙ্ঘন করে কংগ্রেসকে ছাড়া আসনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়কে মেনে নেওয়া হলেও, সিপিএমের দাবি, কৌশলগত ভাবে তারা কিছু বাড়তি আসনে প্রার্থীর মনোনয়ন জমা করিয়েছে। যাতে, দু' পক্ষের মধ্যে জোট নিয়ে জটের কারণে কোনও আসন প্রার্থী শূন্য না থাকে। ঠিক সময়েই প্রয়োজনে নির্দিষ্ট আসন থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার করা হবে।
বামেদের এই কৌশলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। ত্রিপুরা বিজেপির রাজ্য সম্পাদক অস্মিতা বণিক বলেন, "সিপিএম ক্ষমতা থেকে চলে গেলেও দাদাগিরি ভুলতে পারেনি। আগে, ওরা নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়াটা ঠিক করুক। তারপর, বিজেপির সঙ্গে লড়াই করার কথা ভাবুক।"
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় মোদি সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট, ভোটমুখী বাজেটে থাকবে কি ঢালাও ঘোষণা?
রাজনৈতিক মহলের মতে, বিগত বিধানসভায় বাম ও কংগ্রেস যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে ছিল। রাজনীতিতে দুই আর দুইয়ের যোগফল ৪ হয় না, এটা যেমন ঠিক, তেমনই শেষ পর্যন্ত জোটের জট কাটাতে পারলে, বাম - কংগ্রেস জোট নিয়ে বিজেপির মাথা ব্যাথার কারণ যথেষ্টই আছে৷ কারণ, বিগত বিধানসভায় বিজেপি ৩৬টি আসন পেলেও বিজেপির জোটসঙ্গী আইপিএফটি ও তিপ্রামোথার অদিবাসী ভোট বিভাজনে বিজেপি কিছুটা দূর্বল। তার সঙ্গে রয়ছে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া এবং প্রার্থী নিয়ে দলের অভ্যন্তরে ক্ষোভ।
দলের হয়ে প্রচার করতে গিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের আমলে রাজ্যের অনুন্নয়ন নিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে খোদ মুখ্যমন্ত্রীকেও। সব মিলিয়ে ত্রিপুরা নির্বাচন তাই বিজেপির কাছে খুব মসৃন নয়৷ তবে, বিজেপি শেষ পর্যন্ত কতটা কাঁটামুক্ত হতে পারবে, তা নির্ভর করছে বাম কংগ্রেসের জোটের জট কাটার উপরে। আর, তার জন্য সিপিএম মানিক সরকারকে দায়িত্ব দিলেও, শেষমেশ, তা সীতারাম - রাহুল গান্ধি পর্যন্ত গড়াবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Left Congress alliance, Tripura, Tripura assembly elections 2023