R D Burman Birthday: কেক কেটে পঞ্চম'দার জন্মদিন পালন
- Published by:Ananya Chakraborty
- news18 bangla
- Reported by:MAINAK DEBNATH
Last Updated:
বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী রাহুল দেব বর্মনের ৮৪ তম জন্মদিন ধুমধামের সঙ্গে পালন করা হল শান্তিপুরে। সেখানে কেক কেটে পঞ্চম'দার জন্মদিন পালন করলেন অনুরাগীরা
নদিয়া: তিনি ছিলেন সুরের যাদুকর। তাঁর সুরের ছোঁয়ায় বলিউডে তৈরি হয়েছে একের পর এক কালজয়ী গান। পঞ্চম অর্থাৎ আর ডি বর্মনের ৮৪ তম জন্মদিন মঙ্গলবার। প্রায় তিন দশক হতে চলল তিনি নেই। কিন্তু আজও তাঁর তৈরি সুরে মেতে ওঠে আসমুদ্র হিমাচল। এদিন শান্তিপুরে ধুমধাম করে পালিত হল সেই পঞ্চম’দার জন্মদিন।
ত্রিপুরা রাজ পরিবারের সন্তান তথা ভারতীয় সঙ্গীত জগতের প্রবাদ পুরুষ শচীন দেব বর্মনের ছেলে রাহুল দেব বর্মনের পঞ্চম’দা হয়ে ওঠার পিছনে আছে এক গল্প। ছোটবেলায় আর ডি যখন কাঁদতেন তখন নাকি তাঁর নাকের গোড়া থেকে অনেকটা সারেগামাপাসা-র পা-এর মতো ধ্বনি শোনা যেত। স্বরলিপির পঞ্চম সুরে কাঁদতেন বলে তাঁকে ডাকা শুরু হয় পঞ্চম নামে। সঙ্গীতপ্রেমী পরিবারে এ ছিল এক মজার রসিকতা। কিন্তু পরে সেই নামেই সকলের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠেন রাহুল দেব বর্মন।
advertisement
advertisement
ত্রিপুরা রাজ পরিবারের সন্তান হলেও আর ডি বর্মন জন্মগ্রহণ করেন কলকাতায়, ১৯৩৯ সালের ২৭ জুন। বাবা কিংবদন্তি সুরস্রষ্টা শচীন দেব বর্মণ জন্মেছিলেন বাংলাদেশের ফরিদপুরে। তবে পঞ্চম কখনও পিতৃভিটেয় যাননি। বাবার পথ ধরেই সুরের ঝর্ণায় গা ভাসান ছেলেও। সঙ্গীত পরিবারে বেড়ে ওঠা রাহুল একসময় হয়ে ওঠেন ভারতের জনপ্রিয় গায়ক ও সুরকার। সেই সময় বলিউড সিনেমায় আর ডি বর্মনের সুর করা গান থাকা মানেই তা সুপারহিট। আজও আর ডি বর্মনের তৈরি করে যাওয়া গানের জনপ্রিয়তা যে সমানভাবে বজায় আছে তা বোঝা যায় তাঁর বিভিন্ন গানের রিমিক্স করার মধ্য দিয়ে। বলা হয়ে থাকে ভারতীয় সঙ্গীতকে কয়েক ধাপ এগিয়ে দিয়েছিলেন আর ডি। তিনিই প্রথম সুর করার সময় এদেশে বিভিন্ন বিদেশি বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার শুরু করেন।
advertisement
ইলেকট্রিক গিটার, রক অ্যান্ড রোলের সংমিশ্রণে প্রথম বলিউডে গান বেঁধেছিলেন পঞ্চম। এভাবেই তিনি জাদু দেখিয়েছিলেন ‘তিসরি মঞ্জিল’ সিনেমার ‘আজা আজা ম্যায় হু পেয়ার তেরা’ গানে। এ ছাড়াও আর ডি-ই প্রথম বলিউডে ব্লুজ ও লাতিন আমেরিকান সঙ্গীতের প্রবর্তন করেন। বাংলা গানেও তিনি বহু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন।
হিন্দি গানের জন্য সুনাম কুড়োলেও সবার প্রিয় পঞ্চম’দা আগাগোড়াই ছিলেন একজন বাঙালি। ৩৩ বছরের পেশাদার জীবনে তিনি ৩৩১ টি চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেন। এর মধ্যে ছিল ২৯২ টি হিন্দি, ৩১ টি বাংলা, ৩ টি তেলেগু, ২ টি করে তামিল ও ওড়িয়া এবং ১ টি মারাঠি সিনেমা। ১৯৬১ সালে তিনি প্রথম কাজ করেন অভিনেতা মেহমুদ প্রযোজিত ‘ছোট নবাব’ সিনেমায়। তাঁর সুর করা অন্যান্য বিখ্যাত চলচ্চিত্রের মধ্যে কয়েকটি হল- ‘শোলে’, ‘গোলমাল’, ‘সনম তেরি কসম’, ‘মাসুম’, ‘ইয়াদো কি বারাত’, ‘খুবসুরত’, ‘১৯৪২ এ লাভ স্টোরি’, ‘ক্যারাভান’, ‘আপ কি কসম’, ‘খেল খেল মে’, ‘মেহবুবা’, ‘হাম কিসিসে কাম নাহি’, ‘কিনারা’, ‘শালিমার’, ‘শান’, ‘বেতাব’, ‘সাগর’ প্রভৃতি। এর মধ্যে ‘১৯৪২ এ লাভ স্টোরি’ মুক্তির আগেই প্রয়াত রাহুল দেব বর্মন।
advertisement
আরও পড়ুন: ভাইয়ে ভাইয়ে ভোট যুদ্ধ! ব্যালটের লড়াইয়ের আঁচ কি এবার ভাঙন ধরাবে পরিবারে? পঞ্চায়েতে তুলকালাম
‘বাচনা এ হাসিনো’, ‘মনিকা, ও মাই ডার্লিং’, ‘হরে রাম হরে কৃষ্ণ’, ‘মেরে ন্যায়না সাওন ভাদো’, ‘চিঙ্গারি কোই ভাড়কে’, ‘দম মারো দম’, ‘চুরালিয়া হ্যায় তুমনে জো দিল কো’, ‘পিয়া আব তু আজা’, ‘যাহা তেরি ইয়ে নজর হ্যায়’, ‘চালা জাতা হু কিসিকি ধুন মে’, ‘তু তু হ্যায় ওহি’, ‘মেহবুবা মেহবুবা’, ‘ইয়ে দোস্তি’, ‘আজা মেরি জান কাহা থা তুনে সনম’, ‘এক লাড়কি কো দেখা তো’ এমন অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা আরডি বর্মণ। এসব গান আজও রিমেক করা হয়। এ ছাড়া ছবির দৃশ্য অনুযায়ী আবহসঙ্গীতেও জমিয়ে তাল মেলাতেন তিনি। সেরা সঙ্গীত পরিচালকের ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন তিনবার।
advertisement
ব্যক্তিগত জীবনে রাহুল দেব বর্মণ ১৯৬৬ সালে প্রথম বিয়ে করেন রীতা প্যাটেলকে। দার্জিলিঙে পরিচয় হয়েছিল তাঁদের। রীতা ছিলেন পঞ্চমের অন্ধভক্ত। পাঁচ বছরের মাথায় বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এরপর ‘পরিচয়’ (১৯৭২) সিনেমার ‘মুসাফির হু ইয়ারো’ গানটি হোটেলে বসে সুর করেছিলেন আর ডি বর্মণ। ১৯৮০ সালে তিনি বিয়ে করেন প্রখ্যাত গায়িকা আশা ভোঁসলেকে। এই সঙ্গীত দম্পতি একসঙ্গে অনেক কালজয়ী গান উপহার দিয়েছেন শ্রোতাদের। জীবন সায়াহ্নে এসে অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল হয়ে পড়েছিলেন পঞ্চমদা। ১৯৯৪ সালের ৪ জানুয়ারি মারা যান তিনি।
advertisement
মঙ্গলবার শুধু রাজ্য নয়, সারা দেশ জুড়ে এমনকি পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও পালন করা হচ্ছে আর ডি বর্মনের জন্মদিন। নদিয়ার শান্তিপুরে বারো বছর আগে বেশ কিছু সঙ্গীতপ্রেমী মিলে গড়ে তুলেছিলেন বাঁশরী নামে একটি সংগঠন। সারা বছর গান বাজনা নিয়েই থাকেন তারা। নানান জায়গায় অনুষ্ঠানও করেন। ওই সংগঠনের সদস্যরা এদিন শান্তিপুর লাইব্রেরি গেটে কেক কেটে আর ডি বর্মনের জন্মদিন উদযাপন করেন। এই উপলক্ষে সন্ধেয় থাকছে সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে শুধুমাত্র আর ডি বর্মনের গানই বাজবে।
advertisement
মৈনাক দেবনাথ
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
June 27, 2023 5:45 PM IST