Surgical Industry: সাহেবের ঘোড়ার অস্ত্রোপচারের ছুরি তৈরি করে সার্জিক্যাল শিল্পে হাতেখড়ি বারুইপুরের! রমরমার কাল পেরিয়ে এখন ধুঁকছে সে

Last Updated:

ব্রিটিশ সাহেবের ঘোড়ার অস্ত্রোপচারের ছুরি তৈরি করে দিয়ে এই শিল্পের হাতেখড়ি। পরবর্তী কয়েক দশকে বারুইপুরে ডালপালা মেলে সার্জিক্যাল শিল্প। কিন্তু প্রযুক্তিগত দক্ষতার অভাবে এখন ধুঁকছে সে

+
title=

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: অস্ত্রোপচার বা মেডিক্যাল সার্জারিতে ব্যবহৃত যন্ত্র তৈরিতে গোটা দেশে একসময় এক ডাকে সকলে চিনত দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরকে। এখানকার প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকার ঘরোয়া কারখানায় তৈরি হত তাক লাগিয়ে দেওয়া সব সার্জিক্যাল ইকুইপমেন্ট। যা ব্যবহৃত হত দেশের বড় বড় হাসপাতালগুলিতে। কিন্তু ক্রমশ সেই ছবিটা বদলে যায়। আজ চাহিদার অভাবে ধুঁকছে কল্যাণপুরের সার্জিক্যাল শিল্প।
বারুইপুরের কল্যাণপুর পঞ্চায়েত এলাকাকে সার্জিক্যাল শিল্পের আঁতুরঘর বলে মনে করা হয়। সেখানে ঘরে ঘরে অস্ত্রোপচারের বিভিন্ন সামগ্রী তৈরির কারখানা। একসময় এখানকার তৈরি ছুরি, কাঁচি দিয়েই দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, কলকাতার বিখ্যাত চিকিৎসকরা রোগীর অস্ত্রোপচার করতেন। কিন্তু ফিলিপসের মত বড় বড় সংস্থা অস্ত্রোপচারের সামগ্রী তৈরির ব্যবসায় ঢোকার পর বারুইপুরের এই নিজস্ব শিল্প জোর ধাক্কা খায়। রাজ্য সরকারের তরফে একে বাঁচানোর নানান রকম চেষ্টা করা হলেও তা বিশেষ ফলপ্রসূ হয়ে ওঠেনি।
advertisement
advertisement
বারুইপুরে এই সার্জিক্যাল শিল্প গড়ে ওঠার পিছনে এক কাহিনী আছে। স্থানীয়দের থেকে জানা যায় ব্রিটিশ আমলে এলাকায় নতুন রেলপথ তৈরি হচ্ছিল। রেলপথে ব্যবহারের জন্য বিশেষ এক রকমের লোহার গজালের চাহিদা ছিল খুব। তা যোগান দিয়ে দু’পয়সার রোজগারের জন্য বারুইপুরের কল্যাণপুর ও সংলগ্ন কয়েকটি এলাকার মানুষ কামারশালা খুলে এই লোহার গজাল তৈরির কাজ শুরু করেন। সেই সময়ে এক ব্রিটিশ সাহেবের ঘোড়ার অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। কিন্তু অস্ত্রোপচারে প্রয়োজনীয় জিনিস, মানে ছুরি, কাঁচি সহ আরও নানান কিছু এ দেশে পাওয়া যেত না। তা বিলেত থেকে আমদানি করতে হতো। তো সেইসময় কল্যাণপুরের এক কামার ঘোড়ার অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসের বিবরণ শুনে তা তৈরি করে সাহেবকে দেখান। ওই ব্যক্তির উদ্ভাবনী ক্ষমতা দেখে তাক লেগে যায় সাহেবের। তাঁর তৈরি অস্ত্রোপচারের সেই ছুরি, কাঁচি খুবই পছন্দ হয়ে যায় ব্রিটিশ চিকিৎসকের। এরপরই কল্যাণপুরের ওই কামার চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সার্জিকাল দ্রব্যের অর্ডার পেতে শুরু করেন। এইভাবেই বারুইপুরের ওই অঞ্চলে গড়ে উঠেছিল সার্জিক্যাল শিল্প।
advertisement
ক্রমশ আশেপাশের কামাররাও এই কাজ শুরু করেন। ইতিমধ্যে দেশ স্বাধীন হয়। পরবর্তী পঞ্চাশ বছরে সার্জিক্যাল ‌যন্ত্রপাতি তৈরির শিল্পের হাত ধরে এই এলাকার অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন আসে। বারুইপুরের মধ্যে অন্যতম সমৃদ্ধশালী এলাকা বলে পরিচিত হয়ে উঠেছিল কল্যাণপুর। কিন্তু গত কয়েক দশকে সেই ছবিটা একেবারে বদলে গিয়েছে।
advertisement
কেন সার্জিক্যাল শিল্পে পিছিয়ে পড়ছে বারুইপুর? এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষজনের বক্তব্য, লোহা বা স্টিল থেকে একেকটি সার্জিক্যাল সামগ্রী তৈরির মূলত দু’টি ধাপ। একটি ধাপে প্রযুক্তির সাহায্য লাগে। অন্য ধাপটি পুরোপুরি শৈল্পিক নৈপুণ্য ও কারিগরি দক্ষতার উপর নির্ভরশীল। কারিগরি দক্ষতায় বরাবরই এগিয়ে বারুইপুরের শিল্পীরা। কিন্তু তাঁরা মার খাচ্ছেন প্রযুক্তিগত দিকে। গ্রামের ছোট কারখানায় বসে উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্র ব্যবহার সম্ভব হচ্ছে না। কারিগরি দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও তাই প্রযুক্তির ব্যবহারে বিদেশি সংস্থাগুলির থেকে পিছিয়ে পড়ছেন তাঁরা। সার্জিক্যাল শিল্পীদের সংগঠনের সহ সভাপতি প্রদোষ রায়চৌধুরী বলেন, অনেক ক্ষেত্রে আমাদের কারিগরদের তৈরি সামগ্রী কম দামে কিনে তাতে সামান্য প্রযুক্তির ছোঁয়া দিয়ে চড়া দামে বাজারে ছাড়ছে বিদেশী সংস্থা। অথচ আমরা ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছি। তাঁর দাবি, পূর্ণ সরকারি সহযোগিতা পেলে শুধু এই এলাকা থেকে সার্জিক্যাল শিল্পকে কেন্দ্র করে বছরে দু’শো কোটি টাকার টার্ন ওভার সম্ভব। কিন্তু এই শিল্প বাঁচাতে সরকারের তেমন সদিচ্ছা নেই বলে তাঁর অভিযোগ।
advertisement
সুমন সাহা
view comments
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণ ২৪ পরগনা/
Surgical Industry: সাহেবের ঘোড়ার অস্ত্রোপচারের ছুরি তৈরি করে সার্জিক্যাল শিল্পে হাতেখড়ি বারুইপুরের! রমরমার কাল পেরিয়ে এখন ধুঁকছে সে
Next Article
advertisement
Cyclone Montha Update: শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’-র ল্যান্ডফল কোথায়? এর প্রভাব বাংলায় কী পড়তে পারে, জেনে নিন
শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’-র ল্যান্ডফল কোথায়? এর প্রভাব বাংলায় কী পড়তে পারে, জেনে নিন
  • শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’-র ল্যান্ডফল কোথায়?

  • এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পশ্চিমবঙ্গে কেমন পড়তে পারে?

  • জেনে নিন আবহাওয়ার আপডেট

VIEW MORE
advertisement
advertisement