#মালদহ- মাদ্রাসায় রাজ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় মালদহ জেলার দুই ছাত্রী। ৭৮৬ নম্বর পেয়ে রাজ্যে প্রথম হয়েছেন শারিফা খাতুন ও ৭৭৫ নম্বর পেয়ে রাজ্যে দ্বিতীয় হয়েছেন ইমরানা আফরোজা। দুই জনেই মালদহের রতুয়ার ভাদো বটতলা আদর্শ হাই মাদ্রাসার পড়ুয়া।
ঝালমুড়ি বিক্রেতার মেয়ে শারিফা খাতুন। রতুয়ার ভাদো বটতলা আদর্শ হাই মাদ্রাসা থেকে এবার পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তাঁর এমন সাফল্যে খুশি পরিবার থেকে মাদ্রাসার শিক্ষক শিক্ষিকারা। রাজ্যে প্রথম হয়ে চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন শারিফা। তবে পরিবারের আর্থিক অনটন তাঁকে ভাবাচ্ছে। তাই আগামীতে উচ্চশিক্ষার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তার আর্জি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন- ডিজেলের দাম বাড়লেও সেই তুলনায় বাড়েনি পরিবহণের ভাড়া, কী বলছেন বাস মালিকেরা?
শারিফা খাতুন বলেন, "আমি পরীক্ষা ভাল দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম রাজ্যে মেধা তালিকায় নাম থাকবে। তবে প্রথম হবো ভাবতে পারিনি। আমি খুব খুশি। আমার এই সাফল্যের পেছনে শিক্ষক, শিক্ষিকা ও বাবা মায়ের ভূমিকা রয়েছে। আমি আগামীতে একজন গাইনো চিকিৎসক হতে চাই। তবে অভাবি সংসারে পরিবার হয়তো খরচ চালাতে পারবেনা। তাই আমি রাজ্য সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছি।"
আরও পড়ুন- জাতীয় বডি বিল্ডিং প্রতিযোগিতায় সাফল্য মালদহের যুবকের! এবার সুযোগ আন্তর্জাতিক স্তরে
মালদহের রতুয়ার ভাদো বটতলা আদর্শ হাই মাদ্রাসার পড়ুয়া শারিফা খাতুন মেধাবী ছাত্রী ছোট থেকেই। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা তাঁকে পড়াশোনার জন্য অনুপ্রাণিত করতেন নিয়মিত। শারিফা মাদ্রাসায় মোট নম্বর পেয়েছেন ৭৮৬। বাংলায় ৯৯, ইংরেজিতে ৯৭, অংকে ১০০, ভৌতবিজ্ঞান ও পরিবেশে ৯৬, জীবন বিজ্ঞান ও পরিবেশে ৯৯, ইতিহাস ও পরিবেশে ৯৮, ভুগোল ও পরিবেশে ৯৯ ও ইসলামিকে ৯৮।
শরিফা খাতুনের বাবা উজির হোসেন পেশায় ঝালমুড়ি বিক্রেতা। মা সোয়েফা বিবি গৃহবধূ। শরিফা খাতুনের পাঁচ ভাই-বোন। শারিফা সবথেকে ছোট। অতি কষ্টে পড়াশোনা করছেন তিনি। তবে নিয়মিত নিজের পড়াশোনা ঠিক রেখেছেন। প্রতিদিন নিয়মিত বাড়িতে প্রায় নয় ঘণ্টা পড়াশোনা করতেন। পাশাপাশি মাদ্রাসার শিক্ষক শিক্ষিকারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
শারিফা রাজ্যে প্রথম হবার পর থেকেই গ্রামজুড়ে খুশির আবহ তৈরি হয়েছে। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করলেন মালদহের ইমরানা আফরোজা। তিনিও রতুয়া বটতলা আদর্শ হাই মাদ্রাসার ছাত্রী। তার প্রাপ্ত নম্বর ৭৭৫। রাজ্যের দ্বিতীয় স্থান অধিকারী ছাত্রী ইমরানা আফরোজারও ইচ্ছে বড় হয়ে একজন চিকিৎসক হওয়ার। পড়াশোনার পাশাপাশি ইমরানা ভালো ছবি আঁকে। তাঁর বাবা পেশায় মাদ্রাসা শিক্ষক। মেয়ের এমন সাফল্যে খুশি তিনি। ইমরানা আফরোজার মা ইমতারা বিবি একজন স্বাস্থ্যকর্মী। ইমরানার চার ভাই বোন। ইমরানা দ্বিতীয় সন্তান। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় ভালো ইমরানা।
ইমরানা আফরোজা প্রাপ্ত নম্বর ৭৭৫। বাংলায় ৯৭, ইংরেজিতে ৯৯, অংকে ৯৮, ভৌতবিজ্ঞান ও পরিবেশে ৯৩, জীবন বিজ্ঞান ও পরিবেশে ৯৮, ইতিহাস ও পরিবেশে ৯৭, ভূগোল ও পরিবেশে ৯৭ ও ইসলামিকে ৯৬ পেয়েছেন।
বাবা মোঃ আকতার আলম বলেন, "মেয়ে ভালো ফল করবে ভেবেছিলাম। তবে দ্বিতীয় হবে তা ভাবতে পারিনি। মেয়ের এমন সাফল্যে আমি খুব খুশি। আমি চাই আগামীতে মেয়ে আরো উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হোক।"
এই বছর হাইমাদ্রাসা বোর্ডের মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ৭৩,৭০৮ জন। হাইমাদ্রাসা মেধাতালিকায় প্রথম দশে রয়েছেন মোট ১৫ জন। তার মধ্যে মালদহ জেলারই ১০ জন, মুর্শিদাবাদের চারজন ও পূর্ব বর্ধমানের একজন। উল্লেখযোগ্য ভাবে মেধা তালিকার ১৫ জনের মধ্যে ১১জনই ছাত্রী।
Harashit Singhaনিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: High Madrasah Result, Malda